হাতকড়া
হাতকড়া

নাটোরে নাতিকে বিষ মেশানো জুস খাইয়ে হত্যার অভিযোগে দাদি গ্রেপ্তার

নাটোরের বড়াইগ্রামে দুই বছরের একটি শিশুকে জুসের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে হত্যার অভিযোগে তার দাদিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল শনিবার উপজেলার ইকরী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

গ্রেপ্তার সকেনা বেগম উপজেলার সোনাবাজু গ্রামের মোতালেব হোসেনের স্ত্রী। নিহত শিশু নুর ইসলাম শাকিল হোসেন ও জান্নাতুল বেগম দম্পতির একমাত্র সন্তান।

বড়াইগ্রাম থানা সূত্রে জানা যায়, সাড়ে তিন বছর আগে শাকিল হোসেন ও জান্নাতুল বেগমের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই শাশুড়ি ও পুত্রবধূর মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছিল। সন্তান জন্মের পর শাকিল–জান্নাতুল দম্পতি বড়াইগ্রামের ইকরী গ্রামে বসবাস শুরু করেন। গতকাল ইকরী গ্রামে এক স্বজনের বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠানে যান তাঁরা। সেখানে জান্নাতুল বেগমের শাশুড়ি সকেনা বেগমও উপস্থিত ছিলেন। জান্নাতুল ছেলেকে ঘুম পাড়িয়ে বেড়াতে বের হন। তখন সকেনা বেগম নাতি নুর ইসলামকে ঘুম থেকে জাগিয়ে জুস খাওয়ান। কিছুক্ষণ পরই শিশু নুর বমি করতে শুরু করে। অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে প্রথমে বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়।

বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক আবদুস সালাম বলেন, শিশুটির শরীরে কীটনাশক–জাতীয় বিষের আলামত পাওয়া যায়। শিশুটির মুখ থেকেও বিষের গন্ধ আসছিল। দ্রুত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে পথেই শিশুটির মৃত্যু হয়।

এদিকে শিশুটির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় লোকজন সকেনা বেগমকে আটক করে মারধর করেন এবং পরে তাঁকে পুলিশের কাছে তুলে দেন। পরে শাকিল হোসেন তাঁর মাকে আসামি করে মামলা করেন।

শাকিল হোসেন বলেন, ‘গ্রামের একটি দোকান থেকে আমি তিনটি জুস কিনিছিলাম। দুইটা জুস অন্য দুই বাচ্চাকে খাওয়াইছিনু। তারা ভালো আছে। বাকি জুসটা আমার সামনেই আমার মা নুরকে খাওয়াইছিল। খাওয়ানোর পরপরই নুর বমি করতে শুরু করে।’

সকেনা বেগম জুস খাওয়ানোর কথা স্বীকার করলেও বিষ মেশানোর অভিযোগ অস্বীকার করেন। গ্রেপ্তারের আগে তিনি বলেন, ‘একই জুস আমি আমার মেয়ের ছেলেমেয়েকে খাওয়াইছি, আমিও একটু খাইছি। গ্রামবাসী সন্দেহ করে আমার বিরুদ্ধে বদনাম করছে।’

বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম সারওয়ার হোসেন বলেন, সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির পর শিশুটির মরদেহ নাটোর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত সকেনা বেগমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।