চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে জামায়াতের পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন শফিকুর রহমান। শনিবার বিকেলে উপজেলার পশ্চিম বাজার বিশ্বরোড এলাকায়
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে জামায়াতের পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন শফিকুর রহমান। শনিবার বিকেলে উপজেলার পশ্চিম বাজার বিশ্বরোড এলাকায়

জনদুর্ভোগ নিরসনে স্থানীয় নির্বাচন দিতে হবে: জামায়াত আমির

জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, জনদুর্ভোগ নিরসনের জন্য স্থানীয় নির্বাচন দিতে হবে। স্থানীয় নির্বাচন হলেই জনগণের এ দুর্ভোগ কাটবে। এরপর অবশ্যই জাতীয় নির্বাচনও দিতে হবে। তবে জাতীয় নির্বাচনের আগে জনগণ কিছু মৌলিক সংস্কার চায়।

গতকাল শনিবার বিকেলে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার বিশ্ব রোডে জেলা জামায়াত আয়োজিত পথসভার শফিকুর রহমান এ কথাগুলো বলেন।

জামায়াতের আমির বলেন, ‘শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের নেতারা নির্বিঘ্নে চুরি-ডাকাতি, খুন-গুম করার জন্য আমাদের জেলে নিয়েছে। তারা মনে করেছে, তারা যা চাবে, তা–ই পাবে। তারা মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। তারা (আওয়ামী লীগ) মানুষকে মানুষ মনে করত না। রাজনৈতিক নেতাদের উপহাস করে কথা বলত। তাদের ধারণা, তারা দীর্ঘকাল শাসন করে বেড়াবে। তারা ভুলে গেছে, সবকিছুর মালিক আল্লাহ। তিনি বসাতেও পারেন, খসাতেও পারেন।’

এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে লক্ষ্মীপুর জেলা আদর্শ সামাদ সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে এক জনসভায় জামায়াতের আমির বলেন, দলের কারাবন্দী নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামের মুক্তির জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে যথেষ্ট সময় দিয়েছেন। তিনি বলেন, একে একে জাতীয় নেতারা মুক্তি পেলেও এ টি এম আজহারুল ইসলাম বৈষম্য ও জুলুমের শিকার।

শফিকুর রহমান বলেন, ‘তাঁকে (আজহারুল ইসলাম) কারাগারে রেখে বাইরে অবস্থান করা আমার পক্ষে আর সম্ভব নয়। আমরা সরকারকে যথেষ্ট সময় দিয়েছি। আজহারুল ইসলামের মুক্তির দাবিতে আমি নিজে গ্রেপ্তার হওয়ার জন্য ২৫ ফেব্রুয়ারি আদালত প্রাঙ্গণে হাজির থাকব। আইন মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আমাকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’

লক্ষ্মীপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র তাহেরের পরিবারের প্রতি ইঙ্গিত করে জামায়াতের আমির বলেন, ‘এক বছর আগে লক্ষ্মীপুরের মাটিতে দাঁড়িয়ে কথা বলতে পারব, সেই কল্পনা করিনি। স্বাধীনতার পর একটি গোষ্ঠী লক্ষ্মীপুরকে সন্ত্রাসী এলাকায় পরিণত করেছে। বিশেষ করে একটি পরিবার। এখন তারাও পালিয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘এমন রাজনীতি ঘৃণা করি যে রাজনীতি করতে গিয়ে দেশ থেকে পালাতে হয়। আবু সাঈদের মতো বুক পেতে মারা যাওয়াও যেন আনন্দের হয়, এমন রাজনীতি চাই।’

সমাবেশে উপস্থিত নেতা-কর্মীদের কাছে জামায়াতের আমির জানতে চান লক্ষ্মীপুরে চাঁদাবাজি, দখলবাজি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হচ্ছে কি না। নেতা-কর্মীদের কাছ থেকে হ্যাঁ-সূচক জবাব পেয়ে তিনি বলেন, দল–মতনির্বিশেষে সবাইকে চাঁদাবাজি, দখলদারি বন্ধ করতে এগিয়ে আসতে হবে। আবার যেন ফ্যাসিবাদের নতুন ধারা তৈরি না হয়।

জনসভায় সভাপতিত্ব করেন লক্ষ্মীপুর জেলা জামায়াতের আমির রুহুল আমিন ভূঁইয়া। সেক্রেটারি জেনারেল ফারুক হোসাইনের সঞ্চালনায় এ ছাড়া বক্তব্য দেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম মাসুম, কর্ম পরিষদের সদস্য রেজাউল করিম, মোবারক হোসেন প্রমুখ।