ঢাকা-ভাঙ্গা রেলপথ

কেরানীগঞ্জে স্টেশনের কাজ শেষ হয়নি

আগামী বছরের জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে এ স্টেশন থেকে যাত্রীরা চলাচল করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

ঢাকা-ভাঙ্গা রেলওয়ে রুটের কেরানীগঞ্জ স্টেশনের নির্মাণকাজ চলছে। গতকাল বিকেলে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কোন্ডা ইউনিয়নের আলুকান্দা এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

ঢাকা-ভাঙ্গা রুটের রেলপথ উদ্বোধন হলেও এখনই এর সুবিধা পাচ্ছেন না ঢাকার কেরানীগঞ্জবাসী। সেখানকার রেলস্টেশনের কাজ এখনো শেষ হয়নি। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, আনুষঙ্গিক কাজ শেষ হতে অন্তত তিন মাস লাগবে। ফলে ওই সময় পর্যন্ত তাঁদের অপেক্ষা করতে হবে।

গত মঙ্গলবার রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে ভাঙ্গা রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। মুন্সিগঞ্জের মাওয়া রেলস্টেশনে এক অনুষ্ঠানে ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত পথে ট্রেন চলাচলের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে যাত্রী হিসেবে রেলে করে পদ্মা সেতু হয়ে ভাঙ্গায় পৌঁছান তিনি।

নতুন এই রেলপথে রেল চলাচল উদ্বোধন করা হলেও নিয়মিত যাত্রীবাহী চলাচলের জন্য অন্তত তিন সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে ১ নভেম্বর থেকে ঢাকা–ভাঙ্গা পথে নিয়মিত যাত্রীবাহী ট্রেন চলবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এ রুটে কেরানীগঞ্জ থেকে যাত্রী ওঠানামা করার জন্য দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কোন্ডা ইউনিয়নের আলুকান্দা এলাকায় স্টেশন নির্মাণ করা হচ্ছে। স্টেশনে চারটি রেললাইন রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কেরানীগঞ্জের রেলস্টেশনের দুটি লাইনে ট্রেন চলাচল করবে এবং অপর দুটি দিয়ে যাত্রীরা ওঠানামা করবেন। এর মধ্যে স্টেশনের টিকিট কাউন্টার, যাত্রীদের বিশ্রামাগার, গণশৌচাগার, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসনস্থল, বাতি স্থাপন, জেনারেটর যন্ত্র রাখার কক্ষের অবকাঠামো নির্মাণের কাজ শেষ পর্যায়ে। গতকাল বুধবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্টেশনের দুটি চলন্ত সিঁড়ি, দুটি লিফট, টিকিট কাউন্টার নির্মাণ ও বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে। এসব কাজ শেষ হতে অন্তত তিন মাস সময় লাগবে বলে জানান সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

এ স্টেশন নির্মাণকাজে কর্মরত উপসহকারী প্রকৌশলী তৌফিক হায়দার বলেন, কেরানীগঞ্জ স্টেশনের অবকাঠামোগত নির্মাণকাজ শেষ পর্যায়ে। এখন টিকিট কাউন্টার, যাত্রীদের বিশ্রামাগার, গণশৌচাগার, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসনস্থলসহ অন্যান্য কাজ চলছে। এ টিকিট কাউন্টারে তিনটি বুথ থাকবে। সেখানে পুরুষ ও নারী ছাড়াও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ও পক্ষাগাতগ্রস্ত মানুষের জন্য আলাদা বুথ থাকবে। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্যে হুইল চেয়ার ও লিফটের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

তৌফিক হায়দার আরও বলেন, ‘আগামী তিন মাসের মধ্যে বাকি কাজগুলো শেষ হবে। আশা করছি, আগামী বছরের জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে এ স্টেশন থেকে যাত্রীরা চলাচল করতে পারবেন। স্টেশনটি আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন হবে। এতে যাত্রীরা সহজে চলাচল করতে পারবেন ও উন্নতমানের সেবা পাবেন।’

স্টেশনটি চালু হলে কেরানীগঞ্জ ও ঢাকার আশপাশের লোকজনের কেরানীগঞ্জ রেলস্টেশন দিয়ে চলাচলের পথ সুগম হবে। দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের ঘোষকান্দা এলাকার আসলাম মিয়া বলেন, ‘এতদিন শুধু রেলপথের কাজ করতে দেখেছি। ইতিমধ্যে এটির উদ্বোধন হয়েছে। তবে শুনেছি, আমাদের এলাকার স্টেশনটি চালু হতে আরও তিন মাস সময় লাগবে। আমরা অধীর আগ্রহ নিয়ে এ রেলপথ দিয়ে চলাচলের জন্যে অপেক্ষা করছি।’