Thank you for trying Sticky AMP!!

রাজশাহী চিনিকলের প্রকৌশলী সামিউল ইসলামের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শ্রমিকেরা। আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে

রাজশাহী চিনিকলে সিবিএ নেতাকে মারধরের প্রতিবাদে বিক্ষোভ

রাজশাহী চিনিকলের এক সিবিএ নেতাকে মারধর করার প্রতিবাদ ও এর সঙ্গে জড়িত প্রকৌশলীর শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন শ্রমিকেরা। আজ সোমবার সকাল ১০টা থেকে এক ঘণ্টা তাঁরা চিনিকলের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এই কর্মসূচি পালন করেন। এতে নেতৃত্ব দেন চিনিকলের সিবিএ নেতারা।

বিক্ষোভ মিছিল শেষে সমাবেশে বক্তব্য দেন চিনিকল সিবিএর সভাপতি মাসুদ রানা। তিনি অভিযোগ করেন, সহকারী ব্যবস্থাপক (সিভিল) সামিউল ইসলাম পণ্যসেবা ও বাৎসরিক বরাদ্দ খাতের অর্থ সংস্কার ও মেরামতের নামে লুটপাট করছেন। এমডি আবুল বাশার তাঁর কাছ থেকে সুবিধা নেন বলে সবকিছু জেনেও চুপ থাকেন। তাই এই প্রকৌশলীকে দ্রুত অপসারণ করতে হবে। তাঁকে অপসারণ না করা হলে আরও বৃহত্তর কর্মসূচি দেওয়া হবে।

সিবিএর সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বলেন, যাঁর বিরুদ্ধে হাজারো অনিয়মের অভিযোগ, তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। শ্রমিকদের শাস্তি দিয়ে দমিয়ে রাখার ষড়যন্ত্র চলছে। একজন শ্রমিককেও যদি কোনো রকম শাস্তি দেওয়া হয়, তাহলে চিনিকলে যে ঘটনা ঘটবে, তার জন্য কর্তৃপক্ষই দায়ী থাকবে।

আন্দোলনরত শ্রমিকেরা অভিযোগ করেন, সবার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন সামিউল ইসলাম। বিভিন্ন সময় তিনি শ্রমিকদের সঙ্গেও মারমুখী আচরণ করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগও রয়েছে।

Also Read: সিবিএ নেতাকে মারধরের ঘটনায় প্রকৌশলীর কাছে কৈফিয়ত তলব

গত ২৪ মার্চ রাজশাহী চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারী শ্রমিক ইউনিয়নের (সিবিএ) সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলামকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে প্রকৌশলী সামিউল ইসলামের বিরুদ্ধে। ওই দিন এক শ্রমিকের কোয়ার্টারে পানির সমস্যার সমাধানের বিষয়ে তিনি প্রকৌশলী সামিউল ইসলামের সঙ্গে কথা বলতে যান। তখন ওই প্রকৌশলী উত্তেজিত হয়ে রড দিয়ে আঘাত করেন বলে অভিযোগ করেছেন সিবিএর নেতা রফিকুল ইসলাম। পরে শ্রমিকেরাও তাঁকে অবরুদ্ধ করে রাখেন।

এ ঘটনায় চিনিকল কর্তৃপক্ষ চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করেছে। গত বৃহস্পতিবার ওই কমিটি তদন্ত শেষ করে ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবুল বাশারের কাছে প্রতিবেদন দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে সামিউল ইসলামের কাছে কৈফিয়ত তলব করা হয়। এ ছাড়া সিবিএর সভাপতি মাসুদ রানা ও সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলামের কাছেও কৈফিয়ত চাওয়া হয়েছে। তাঁদের সাত দিনের মধ্যে লিখিতভাবে জবাব দিতে বলা হয়েছে।

এ ছাড়া তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে চিনিকলের কর্মচারী টারবাইন অপারেটর সোহেল রানা, খালাসি আলমগীর হোসেন ও হিসাব শাখার অফিস সহায়ক মুরাদুল ইসলামকে।

এ ঘটনায় সহকারী ব্যবস্থাপক (সিভিল) সামিউল ইসলামের কৈফিয়ত তলবের চিঠিতে বলা হয়েছে, চিনিকলের টারবাইন অপারেটর সোহেল রানার কোয়ার্টারে পানির সমস্যা নিয়ে কথা বলতে গেলে সামিউল ইসলাম সিবিএর সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলামের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। তিনি শ্রমিকনেতাকে উসকানিমূলক কথাবার্তা বলেন এবং শ্রম আইন অনুযায়ী শ্রমিকের অধিকার আদায়ের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করেন। কাজের অগ্রগতির বিষয়টি সুন্দরভাবে বুঝিয়ে না দিয়ে তিনি অপেশাদার আচরণ করেছেন। বিষয়টি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তবে মারধরের বিষয়টি বরাবরই অস্বীকার করে আসছেন সামিউল ইসলাম।

এ বিষয়ে রাজশাহী চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল বাশার প্রথম আলোকে বলেন, আজ টিফিন আওয়ারে শ্রমিকেরা তাঁর কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেছেন। এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি হয়েছে, সেই কমিটি প্রতিবেদনও দিয়েছে। এখন তাঁরা কৈফিয়তের অপেক্ষায় আছেন। কৈফিয়ত সন্তোষজনক না হলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।