
মেহেরপুরের গাংনীতে বিএনপির মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে মহাসড়কে শুয়ে বিক্ষোভ করেছেন দলের এক পক্ষের নেতা–কর্মীরা। আজ শনিবার সন্ধ্যায় গাংনী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
জেলা বিএনপির সভাপতি জাভেদ মাসুদের পক্ষের নেতা–কর্মীরা গাংনী উপজেলা বাঁশবাড়িয়া গ্রামের মেহেরপুর-কুষ্টিয়া সড়কের এক পাশে বেলা তিনটা থেকে জড়ো হতে শুরু করেন। বিক্ষোভকারীরা গাংনী বাসস্ট্যান্ডে অবস্থিত উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ে উপস্থিত হন। সেখানে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন জাভেদ মাসুদ। পরে মহাসড়কে শুয়ে পড়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন নেতা–কর্মীরা। সেখানে মেহেরপুর-২ (গাংনী) আসনে বিএনপির মনোনয়ন বাতিলের দাবি জানানো হয়। একপর্যায়ে জাভেদ মাসুদের অনুসারীরা স্লোগান দেন ‘অবৈধ মনোনয়ন মানি না, মানব না’।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, মেহেরপুর-২ (গাংনী) আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী আমজাদ হোসেনের পরিবর্তে জেলা বিএনপির সভাপতি জাভেদ মাসুদকে প্রার্থী করার দাবিতে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া নেতা–কর্মীরা সড়কে শুয়ে স্লোগান দেন। তাঁদের অভিযোগ, মনোনীত প্রার্থী এলাকায় জনপ্রিয় নন এবং দলের তৃণমূল নেতা–কর্মীদের সঙ্গে তাঁর কোনো যোগাযোগ নেই।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া বিএনপির কর্মী রহিদুল ইসলাম বলেন, ‘গাংনীতে যিনি মনোনয়ন পেয়েছেন, তিনি এলাকায় জনপ্রিয় নন। আমরা তৃণমূলের নেতা–কর্মীরা চাই, জাভেদ ভাইকে প্রার্থী করা হোক।’
বিক্ষোভ শেষে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে নেতারা বলেন, তৃণমূলের মতামত উপেক্ষা করে মনোনয়ন দিলে দলের জন্য এটি ক্ষতির কারণ হবে। দাবি আদায় না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
জেলা বিএনপির সভাপতি ও মেহেরপুর-২ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী জাভেদ মাসুদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘তৃণমূলের নেতা–কর্মীরা আমার পাশে রয়েছেন। তাঁরা চান, দলের প্রতীক ধানের শীষ যেন প্রকৃত জনপ্রিয় প্রার্থীর হাতে থাকে। আমি দলের সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, তবে কেন্দ্রকে তৃণমূলের অনুভূতি বিবেচনা করতে অনুরোধ করব।’
মেহেরপুর-২ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী আমজাদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটি কয়েকজন অসন্তুষ্ট কর্মীর ব্যক্তিগত উদ্যোগ। বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক দল। আমি সবাইকে সঙ্গে নিয়েই নির্বাচনে অংশ নেব।’
বিএনপি গত সোমবার জাতীয় সংসদের ২৩৭টি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করে। মেহেরপুর–১ (সদর-মুজিবনগর) আসনে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মাসুদ অরুণ এবং মেহেরপুর–২ (গাংনী) আসনে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আমজাদ হোসেনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। ৪ নভেম্বর বিএনপির মনোনয়নকে কেন্দ্র করে গাংনী উপজেলা শহরে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ১০ জন আহত হন। মনোনয়ন ঘিরে বিক্ষোভে গাংনীর রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।