Thank you for trying Sticky AMP!!

১৩ দিন পর বাংলাদেশি কৃষকের লাশ ফেরত দিল বিএসএফ

১৩ দিন পর অবশেষে বাংলাদেশি কৃষক মেজবাহারের লাশ হস্তান্তর করে বিএসএফ। আজ দুপুরে পরশুরাম উপজেলার বিলোনিয়া চেকপোস্ট এলাকায়

অবশেষে ১৩ দিন পর ফেনীর পরশুরাম উপজেলার কৃষক মোহাম্মদ মেজবাহারের (৪৭) লাশ ফেরত দিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। আজ মঙ্গলবার বেলা দেড়টার দিকে পরশুরাম উপজেলার বিলোনিয়া চেকপোস্ট এলাকায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠক শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে লাশটি হস্তান্তর করা হয়।

এ সময় দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকর্তা, পুলিশ, জনপ্রতিনিধি ও কৃষক মেজবাহারের স্বজনেরা উপস্থিত ছিলেন। হস্তান্তরের পর লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য ফেনী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

Also Read: ফেনী সীমান্তে পতাকা বৈঠকের পর বাংলাদেশির লাশ নিয়ে গেল বিএসএফ, ফেরত দেবে আজ

মেজবাহার পরশুরাম উপজেলার উত্তর গুথুমা গ্রামের মৃত মফিজুর রহমানের ছেলে। কৃষিকাজের পাশাপাশি তিনি স্থানীয়ভাবে গরু ব্যবসা করতেন। ১৩ নভেম্বর বিকেলে কৃষক মেজবাহারকে সীমান্ত এলাকা থেকে জোর করে বিএসএফের সদস্যরা ধরে নিয়ে যান বলে অভিযোগ ওঠে।

তিন দিন পর ১৬ নভেম্বর সকালে সীমান্তের কাঁটাতারের পাশে শূন্যরেখার ভারতীয় অংশে মেজবাহারের লাশ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। ১৭ নভেম্বর ভোরে আইন অনুযায়ী লাশ ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে বিএসএফ তাঁর লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। এর ১৩ দিন পর আনুষ্ঠানিকতা শেষে ওই কৃষকের লাশ ফেরত দিল বিএসএফ।

বিজিবি সূত্র জানায়, আজ বেলা ১টা ২০ মিনিটে বিলোনিয়া ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট এলাকায় লাশটি নিয়ে আসে বিএসএফ। পরে বিজিবির সঙ্গে পতাকা বৈঠকের পর বিএসএফ লাশ হস্তান্তর করে।

এ সময় ভারতের ত্রিপুরার বিলোনিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক পরিতোষ ঘোষ, পরশুরাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল ইসলাম, বিএসএফ কর্মকর্তা সত্যপাল সিং, এম এম লাল, বিলোনিয়া থানার উপপরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নারায়ণ পাল, বিজিবির গুথুমা সীমান্ত ফাঁড়ির কমান্ডার সুবেদার ওমর ফারুক, বিলোনিয়ার মজুমদারহাট কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার মনিরুজ্জামান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

দুপুরে বিলোনিয়া ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট এলাকায় লাশটি নিয়ে আসে বিএসএফ। পরে বিজিবির সঙ্গে পতাকা বৈঠকের পর লাশ হস্তান্তর করে বিএসএফ

পরিবারের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন নিহতের স্ত্রী মরিয়ম আক্তার, বোন পারুল আক্তার, পরশুরাম পৌরসভার মেয়র নিজাম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, স্থানীয় কাউন্সিলর নিজাম উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।

পরে মেজবাহারের লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য পরশুরাম থানা-পুলিশকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশ লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য ফেনী সদর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। এ সময় স্বজনেরা লাশটি একনজর না দেখতে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

Also Read: নিখোঁজের তিন দিন পর ফেনীর সীমান্তে কাঁটাতারের পাশে এক বাংলাদেশির লাশ

মেজবাহারের স্ত্রী মরিয়ম বেগম বলেন, ভিটেমাটি ছাড়া তাঁদের কোনো জমিজমা নেই। স্বামী অন্যের জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করতেন। এ বছর ১ একর জমিতে আমনের চাষ করেছিলেন। জমি সীমান্ত এলাকায়, পাকা ধান কাটতে গেলে বিএসএফ ধরে নিয়ে যায়। তাঁর স্বামী কোনো অন্যায় করেননি। তিনি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও হত্যার বিচার দাবি করেন।

মরিয়ম বেগম আরও বলেন, ‘পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম লোকটাকে হারিয়ে আমরা এখন অন্ধকার দেখছি। ছোট ছোট মেয়েদের খাওয়া কেমনে হবে? লেখাপড়া কেমনে চলবে? চিকিৎসার খরচ কে দেবে?’