মাগুরায় বিরোধপূর্ণ একটি জমির সালিসে গিয়ে একপক্ষের হাতুড়িপেটায় এক গ্রাম্য মাতবর নিহত হয়েছেন। আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে সদর উপজেলার কুচিয়ামোড়া ইউনিয়নের বলুগ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত বাদশা মোল্লার (৬৫) বাড়ি উপজেলার বলুগ্রামে। তাঁর পরিবারের সদস্য ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বলুগ্রামে ১৯ শতাংশ জমির মালিকানা নিয়ে বাদশা মোল্লার বোনের মেয়ে শিউলি খাতুন ও পাশের বাখরবা গ্রামের আনোয়ার নামের এক ব্যক্তির মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। জমির মালিকানা নিয়ে আদালতে মামলা চলমান। এ নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ওই বিরোধের মীমাংসার জন্য বলুগ্রাম পূর্বপাড়ায় একটি সালিস বৈঠকের আয়োজন করা হয়। এতে দুই পক্ষের লোকজনের পাশাপাশি এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। বেলা ১১টার দিকে সালিসের শেষ পর্যায়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ বেধে যায়।
বাদশার চাচাতো ভাই ওসমান মোল্লা প্রথম আলোকে বলেন, ‘সালিসে একটা মীমাংসা হয়। তবে শেষ পর্যায়ে আনোয়ারের লোকজন আমার ভাই বাদশা মোল্লার ওপর হামলা করেন। তাঁকে হাতুড়ি দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়। ঠেকাতে গিয়ে আমিও আহত হই। এরপর তাঁকে উদ্ধার করে কুল্লিয়া বাজারে নিয়ে গেলে তিনি মারা যান।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আনোয়ারের মুঠোফোন নম্বরে কল করলে বন্ধ পাওয়া যায়। সালিসে অংশ নেওয়া কুচিয়ামোড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, বিরোধ মিটিয়ে শান্তি স্থাপনের জন্য সালিস ডাকা হয়েছিল। সেখানে সিদ্ধান্ত হয় আদালতে মামলা নিষ্পত্তি হওয়ার আগপর্যন্ত জমি তৃতীয় পক্ষের কাছে থাকবে, জমি থেকে অর্জিত অর্থ দুই পক্ষ সমান ভাগ পাবে। সবাই তা মেনেও নেয়। তবে শেষ পর্যায়ে একজনের মাথায় আঘাত করা নিয়ে সংঘর্ষ বেধে যায়। তখন হাতুড়ির আঘাতে বাদশা মোল্লা গুরুতর আহত হন। কিছুক্ষণ পরে তাঁর মৃত্যু হয়।
সালিসে সভাপতিত্ব করেন এলাকার মাতবর নওশের আলী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, মারামারির সময় হাতুড়ি দিয়ে হামলা করা হয়। এতে বোঝা গেছে, এক পক্ষ আগে থেকেই মারামারির প্রস্তুতি নিয়ে এসেছিল।
মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আইয়ুব আলী প্রথম আলোকে বলেন, নিহত ব্যক্তির মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ নিয়ে তদন্ত চলছে।