
নিজের মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। সাময়িকভাবে টিনশেডের একটি ঘরে অসুস্থ স্বামী ও সন্তান নিয়ে প্রতিবেশীর জায়গায় থাকতেন। একটি মুরগির খামারে চাকরি করে তিলে তিলে জমিয়েছিলেন ৩৭ হাজার টাকা। কিনেছিলেন আসবাব ও তিন গরু। বড় মেয়ের বিয়ের পাকা কথা হয়েছে। তবে মুহূর্তের আগুনে পুড়ে সব শেষ রহিমা বেগমের (৩৫)।
রহিমার বাড়ি চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি ইউনিয়নের রোসাইঙ্গা ঘোনা গ্রামে। গতকাল বুধবার রাতে তিনি খামারে ছিলেন। তাঁর ছেলে–মেয়ে ও অসুস্থ স্বামী ঘরে ছিল। দিবাগত রাত তিনটার দিকে খবর পান তাঁর বাড়িতে আগুন লেগেছে। ফিরে এসে দেখেন ঘরের সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
রহিমা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর ঘরে আলমারি, খাট, চেয়ার, টেবিলসহ প্রয়োজনীয় আসবাব ছিল। এগুলো সব শেষ। বসতবাড়ির সঙ্গে লাগোয়া গোয়ালে তিনটি গরু ছিল। সেগুলো আগুনে পুড়ে গুরুতর আহত। বড় মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়েছে। বিয়েতে উপহার দেওয়ার জন্য কিছু জিনিসপত্র কিনেছিলেন। এখন আর কিছুই নেই।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রহিমা মুরগির খামারে কাজ করে মাসে ১০ হাজার টাকা পান। এ টাকা দিয়েই সংসারের যাবতীয় খরচ চালান। এর বাইরে গরু পালন করে কিছু টাকা পান। তাঁর বড় মেয়ে মাধ্যমিক পাস করেছে। এখন বিয়ের কথাবার্তা চলছে। ছোট ছেলে পঞ্চম শ্রেণি ও ছোট মেয়ে প্রথম শ্রেণিতে পড়ে। আগুনে তাদের বইখাতা, ব্যাগ, ইউনিফর্ম সবকিছু পুড়েছে। কীভাবে বাকি দিন চলবেন এটি নিয়েই এখন দুশ্চিন্তা।
রহিমা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, ‘মেয়ের বিয়ের জন্য টাকাগুলো তিলে তিলে জমিয়েছিলাম। আগুনে সব পুড়ে গেল। এখন কীভাবে চলব, কীভাবে বাঁচব কিছুই জানি না।’
চুনতি ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. ইয়াছিন প্রথম আলোকে এ ঘটনা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘আগুনে পরিবারটির অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেল। আমরা ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করার চেষ্টা করছি।’
লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারটির সঙ্গে দেখা করব। এরপর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব।’