ঠাকুরগাঁওয়ে শিখো-প্রথম আলো জিপিএ–৫ প্রাপ্তদের কৃতী সংবর্ধনায় আসা শিক্ষার্থীদের একাংশ। আজ সোমবার সকালে সদর উপজেলার মীর্জা রুহুল আমিন মিলনায়তনে
ঠাকুরগাঁওয়ে শিখো-প্রথম আলো জিপিএ–৫ প্রাপ্তদের কৃতী সংবর্ধনায় আসা শিক্ষার্থীদের একাংশ। আজ সোমবার সকালে সদর উপজেলার মীর্জা রুহুল আমিন মিলনায়তনে

ঠাকুরগাঁওয়ে জিপিএ-৫ সংবর্ধনা

‘জিপিএ-৫–এর সিঁড়ি ধরে গোটা বিশ্বকে জয় করতে হবে’

সকাল সাড়ে আটটার আগেই উৎসবে হাজির হয় কৃতী শিক্ষার্থীরা। বন্ধুদের পেয়ে অনেকেই মেতে ওঠে আড্ডায়, কেউ আবার খুনসুটিতে ব্যস্ত। কেউ কেউ ফটো বুথে দাঁড়িয়ে হাস্যোজ্জ্বল ছবি তুলছিল। নিবন্ধনপত্রের অনুলিপি যাচাইয়ে পর শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট বুথের সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে ক্রেস্ট ও স্ন্যাক্স বক্স সংগ্রহ করে। ঠাকুরগাঁওয়ে জিপিএ-৫ পাওয়া কৃতী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শুরুর আগে দেখা গেল এই চিত্র।

আজ সোমবার সকালে ঠাকুরগাঁও শহরের রুহুল আমিন মিলনায়তনে শিখো-প্রথম আলো যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে অংশ নেয় জেলার ৫টি উপজেলার মোট ৯৯৬ জন শিক্ষার্থী। সকাল ১০টায় মুহাইমিনুর রহমান ও প্রাপ্তি সারোয়ারের সঞ্চালনায় বন্ধুসভার সদস্যদের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় উৎসবের মূল আয়োজন। এরপর উত্তরায় বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে এক মিনিট দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করা হয়।

অনুষ্ঠানের শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন প্রথম আলোর ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি মজিবর রহমান খান। পরে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানের দেওয়া লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তিনি। শিক্ষার্থীদের সত্য তথ্য জানতে প্রথম আলো, কিশোর আলো ও বিজ্ঞানচিন্তা পড়ার পরামর্শ দেন তিনি।

এরপর বন্ধুসভার সদস্যরা জিপিএ–৫ সংবর্ধনার থিম সং, ‘তুমি, আমি, আমরা জিপিএ-৫’ উপস্থাপন করেন। থিম সং পরিবেশনার পর অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিরা সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন। অভিভাবকদের পক্ষে কথা বলেন রানীশংকৈল উপজেলার সফিকুল ইসলাম ও ঠাকুরগাঁও শহরের মিরা ফাতেমা।

নিজেদের স্বাক্ষর দিচ্ছে কয়েকজন শিক্ষার্থী

এবারের আয়োজনে অংশ নেয় রানীশংকৈল উপজেলার জওগাঁও উচ্চবিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পাওয়া জগন্নাথ রায়। সে জানায়, উৎসবে এসে তার দারুণ লাগছে। এমন আয়োজন তাদের অনুপ্রাণিত করবে। এই দিন সহজে ভোলার নয়।

অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বক্তারা বলেন, জিপিএ-৫–এর সিঁড়ি ধরে গোটা বিশ্বকে জয় করতে হবে। ভালোটা গ্রহণ ও মন্দটা বর্জন করতে হবে। নিজেদের মধ্যে সহযোগিতার মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে। আর নিজেকে হতে হবে বিনয়ী, তবেই মানুষ হয়ে ওঠা যাবে।

ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার সেনুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আবদুল মাজেদ বলেন, ‘তোমরা বড় স্বপ্ন দেখবে, তবেই জীবনে সফল হবে। কাজের ক্ষেত্রে নিষ্ঠা থাকলে, কেউ দমাতে পারবে না।’

জাতীয় নারী ফুটবল দলের খেলোয়াড় মোছা. সাগরিকা ও কোহাতি কিসকু সবার কাছে দোয়া চেয়ে বলেন, ‘আমরা শপথ করেছি শুধু এশিয়া কাপে নয়, বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলকে বিশ্বকাপের আসরে নিয়ে যাব। আপনাদেরও আমাদের দেশকে ভালো কিছু দেওয়ার শপথ করতে হবে।’

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে কথা বলছেন দুই কৃতী নারী ফুটবলার

জিপিএ-৫ প্রাপ্ত কৃতী শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকদের ধন্যবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠানটি শেষ করেন ঠাকুরগাঁও বন্ধুসভার সভাপতি আবদুল্লাহ আল মামুন।

আয়োজনটি পাওয়ার্ড বাই কনকা-গ্রি এবং সহযোগিতায় ছিল কনকর্ড গ্রুপ, ফ্রেশ, বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেড, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক পিএলসি, কোয়ালিটি গ্রুপ, প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি, অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ইউসিএসআই ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ শাখা ক্যাম্পাস, আকিজ টেলিকম লিমিটেড, আম্বার আইটি লিমিটেড, এটিএন বাংলা ও প্রথম আলো বন্ধুসভা।