
এ পরিস্থিতিতে শঙ্কা প্রকাশ করে ত্বরিত পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছে বিআইডব্লিউটিসি।
বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ফেরিঘাট এলাকায় নদীর পাড় ধসতে শুরু করেছে। ভাঙনের অধিক ঝুঁকিতে আছে ৭ নম্বর ফেরিঘাট। ফেরি ভেড়া ও ছেড়ে যাওয়ার সময় ফেরির পাখার ঘূর্ণিপাকে ঘাট আরও ভাঙছে। পাড়ের বসতবাড়িও ভাঙনঝুঁকিতে রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে শঙ্কা প্রকাশ করে ত্বরিত পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছে বিআইডব্লিউটিসি।
গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে গিয়ে দেখা যায়, পদ্মায় পানি বেড়েছে। নদীর পাড় ধসে পড়ছে। বিশেষ করে ৭ নম্বর ফেরিঘাটের পন্টুন থেকে পাশের ৬ নম্বর ফেরিঘাটের আগ পর্যন্ত ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে ফেরিঘাটসহ স্থানীয় শাহাদত মেম্বার পাড়া ও ফেরিঘাটের ভাটিতে বাহির চর ছাত্তার মেম্বার পাড়া ভাঙনঝুঁকিতে রয়েছে।
৬ নম্বর ফেরিঘাট এলাকার বাসিন্দা ও মুদিদোকানি বারেক মৃধা ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘তিনবার নদীভাঙনে সব হারিয়ে প্রায় ১৫ বছর ধরে ৬ নম্বর ঘাটে বাস করছি। নদীর পাড় তখনো ছিল প্রায় এক কিলোমিটার দূরে। ভাঙতে ভাঙতে এখন ঘরের কোনায় এসে নদীর পাড় ঠেকেছে। প্রতিবছর ভাঙনে বাড়িঘর, দোকানপাট বিলীন হতে থাকে। প্রশাসনসহ সবাই তখন দৌড়ঝাঁপ শুরু করে। স্থানীয়দের অনেকে প্রশাসনের সঙ্গে মিলে বালুর বস্তা ফেলতে থাকে। পানির নিচে কী ফেলছে, কেউ তো বোঝে না। এ সময় অনেকের ভালো ব্যবসা হয়। অথচ শুষ্ক মৌসুমে ভাঙন ঠেকাতে অনেক অনুরোধ জানিয়েছি;কিন্তু আমাদের কথা কেউ শোনেনি।’
ফেরিঘাটের পাশাপাশি লঞ্চঘাটও ভাঙনের ঝুঁকিতে আছে। দৌলতদিয়া লঞ্চঘাটের দায়িত্বরত মালিক সমিতির ব্যবস্থাপক নুরুল আনোয়ার মিলন বলেন, প্রতিবছর বর্ষা এলেই ভাঙন দেখা দেয়। লঞ্চঘাট এলাকাসহ স্থানীয় অনেক বসতবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে যায়। ভাঙন প্রতিরোধে এখনই ব্যবস্থা নিলে হয়তো অনেক কিছুই রক্ষা পেত।
বিআইডব্লিউটিসি আরিচা অঞ্চলের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) নাসির মোহাম্মদ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আসন্ন ঈদুল আজহার আগে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে আমরা বিআইডব্লিউটিএ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডকে (পাউবো) চিঠি লিখছি।’
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ–পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) আরিচা অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী নেপাল চন্দ্র দেবনাথ প্রথম আলোকে বলেন, ‘ফেরিঘাট রক্ষার্থে আমাদের যে ধরনের প্রস্তুতি রাখা দরকার, তা রয়েছে। বড় ধরনের ভাঙন দেখা দিলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করার পর তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করতে হয়।’ দৌলতদিয়া ঘাট রক্ষায় আগাম প্রস্তুতির বিষয়টিও কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।