ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২৪ শয্যা বিশিষ্ট ডেঙ্গু ওয়ার্ডে আজ বৃহস্পতিবার ভর্তি আছেন ৭৯ জন রোগী। অনেকেই শয্যা না পেয়ে বারান্দায় বিছানা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আজ বেলা ১১টার দিকে তোলা। ছবি: প্রথম আলো
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২৪ শয্যা বিশিষ্ট ডেঙ্গু ওয়ার্ডে আজ বৃহস্পতিবার ভর্তি আছেন ৭৯ জন রোগী। অনেকেই শয্যা না পেয়ে বারান্দায় বিছানা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আজ বেলা ১১টার দিকে তোলা। ছবি: প্রথম আলো

ময়মনসিংহ নগরে বাড়ছে ডেঙ্গুর প্রকোপ, এক বৃদ্ধের মৃত্যু

ময়মনসিংহ নগরে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে শুরু করেছে। চলতি মাসে শহরের বাসিন্দাদের মধ্যে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে বেড়েছে। এ ছাড়া ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আনোয়ারুল হক (৭২) নামের এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেল ৪টার দিকে হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থার তাঁর মৃত্যু হয়।

আনোয়ারুল হক ময়মনসিংহ নগরের নতুন বাজার এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। জ্বরে আক্রান্ত হয়ে তিনি ১৫ অক্টোবর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডেঙ্গু ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছিলেন। সেখানে তাঁর শরীরে ডেঙ্গু শনাক্ত হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অবনতি হলে তাঁকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বিকেল ৪টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়।

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডেঙ্গু ওয়ার্ডের সহকারী ফোকাল পারসন মোস্তফা ফয়সাল রাহাত জানান, ওই বৃদ্ধ রোগী এক্সপান্ডেড ডেঙ্গু সিনড্রোমে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। ডেঙ্গুর পাশাপাশি বৃদ্ধের হার্টে সমস্যা ধরা পড়ে এবং হার্টেও জটিলতা ছিল।

এর আগে গত রোববার রাতে একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পশ্চিম দাপুনিয়া এলাকার মো. ইমরান (৩২) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়। তিনি ওই এলাকায় অবস্থানের সময় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছিলেন।

হাসপাতাল প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা পর্যন্ত হাসপাতালের ডেঙ্গু ওয়ার্ডে ৭৯ রোগী ভর্তি আছেন। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আজ সকাল পর্যন্ত হাসপাতালটিতে রোগী ভর্তি হয় এক হাজার ২১০ জন। এসব রোগীর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের। চলতি বছরের জানুয়ারিতে একজনের মৃত্যুর পর সেপ্টেম্বরে ৫ জন এবং চলতি মাসে ৪ জন রোগীর মৃত্যু হয়। এই বছরের মধ্যে চলতি মাসেই সর্বোচ্চ ৫১১ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন।

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডেঙ্গু ওয়ার্ডে ২৪টি শয্যা থাকলেও আজ সকাল পর্যন্ত ৭৯ রোগী ভর্তি আছেন। এমন পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম অবস্থা জানিয়েছেন হাসপাতালটির ডেঙ্গু ওয়ার্ডের ফোকাল পারসন একমাদ উল্লাহ খান।

এদিকে ময়মনসিংহ শহরে ডেঙ্গুর বিস্তার শুরুর পর মশকনিধন কার্যক্রম শুরু করে সিটি করপোরেশন। বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করে বাসিন্দাদের সচেতন করা হচ্ছে। পাশাপাশি মশার ওষুধ ছিটানো হচ্ছে। এ বিষয়ে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এইচ কে দেবনাথ বলেন, ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী বৃদ্ধি পাওয়ায় যেসব পদক্ষেপ নেওয়া যায়, সেগুলো নেওয়া হচ্ছে। শহরজুড়ে ১১টি মাইক দিয়ে সচেতনতামূলক বার্তা ও লিফলেট ছড়ানো হচ্ছে। জনগণ সচেতন না হলে এটি পুরোপুরিভাবে নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়।