নরসিংদীতে পারিবারিক কলহের জেরে ঘুমন্ত স্ত্রী-সন্তানসহ ছয়জনের শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ফরিদ মিয়া নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে সদর উপজেলার চিনিশপুর ইউনিয়নের ঘোড়াদিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত ফরিদ মিয়া (৪৪) একই এলাকার বাসিন্দা। পেশায় তিনি পিকআপচালক। এ ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ ছয়জন হলেন ফরিদ মিয়ার স্ত্রী রিনা বেগম (৩৮), তাঁদের দুই ছেলে আরাফাত (১৫) ও তাওহীদ (৭), শ্যালিকা সালমা বেগম (৩৪) এবং তাঁর ছেলে ফরহাদ (১২) ও জিহাদ মিয়া (২৪)। তাঁদের মধ্যে পাঁচজনকে ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ফরিদ মিয়া ও রিনা বেগম দম্পতির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক কলহ চলছিল। এ জন্য দুই সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে যান রিনা। গতকাল রাত আড়াইটার দিকে ফরিদ মিয়া শ্বশুরবাড়ি গিয়ে ঘুমিয়ে থাকা স্ত্রী-সন্তানদের গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেন। পরে ঘরের বাইরে থেকে দরজায় তালা লাগিয়ে দিয়ে পালিয়ে যান।
এ সময় প্রতিবেশী ও স্থানীয় লোকজন টিনের ঘরের দরজা ভেঙে দগ্ধ ছয়জনকে উদ্ধার করেন। পরে তাঁরা জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল করলে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় ব্যক্তিদের সহায়তায় দগ্ধ ছয়জনকে নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেন। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাঁদের মধ্যে পাঁচজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠান।
সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ফরিদা গুলশানারা কবির বলেন, দগ্ধ ছয়জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। এর মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁদেরসহ পাঁচজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তাঁদের মধ্যে রিনা বেগমের শরীরের ৫০ শতাংশ পুড়ে গেছে।
দগ্ধ রিনার বাবা মহন মিয়া বলেন, ‘ফরিদ মিয়া নেশাগ্রস্ত। সে আমার মেয়ের ওপর দীর্ঘদিন ধরে অত্যাচার করে আসছিল। গতকাল রাতে সে আমার ঘরে ঢুকে ঘুমন্ত অবস্থায় দুই মেয়ে ও তাদের তিন সন্তানসহ ছয়জনের গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়।’
নরসিংদী মডেল থানার উপপরিদর্শক অনিক কুমার গুহ বলেন, ৯৯৯ থেকে কল পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দগ্ধ ছয়জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। অভিযুক্ত ফরিদ মিয়াকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।