
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ ও বিজয়নগরের একাংশ) আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন পাননি সংরক্ষিত আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও দলটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহসম্পাদক রুমিন ফারহানা। আসনটি জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিবকে ছেড়ে দিয়েছে বিএনপি।
আজ মঙ্গলবার বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তবে আসনটিতে ইতিমধ্যে বিএনপির তিন নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এর আগে দুই দফায় বিএনপি ২৭২টি আসনে তাঁদের প্রার্থী ঘোষণা করলেও আসনটি ফাঁকা রাখা হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে বিএনপির প্রার্থীরা ছয়বার নির্বাচনে অংশ নিয়ে প্রতিবারই বিজয়ী হয়েছেন। মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব দলীয় প্রতীক ‘খেজুরগাছ’ নিয়ে নির্বাচন করবেন।
আসনটিতে বিএনপির মনোনয়ন পেতে অন্তত চারজন প্রার্থী দীর্ঘদিন ধরে মাঠে ছিলেন। তাঁদের মধ্যে রুমিন ফারহানা এবং বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের মহাসচিব ও জেলা বিএনপির সদস্য এস এন তরুণ দে ও জেলা বিএনপির সদস্য আক্তার হোসেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন।
রুমিন ফারহানা এ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে মাঠে আছেন। প্রায় প্রতি সপ্তাহে তিনি এলাকায় গিয়ে গণসংযোগসহ নানা সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন। মাঠপর্যায়ে দলীয় নেতা-কর্মী, সাধারণ ভোটার ও নারী ভোটারদের কাছে তাঁর জনপ্রিয়তা বেশি বলে দাবি তাঁর সমর্থকদের।
রুমিন ফারহানা আজ মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, আগামীকাল বুধবার তাঁর পক্ষে নেতা-কর্মীরা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করবেন। আজ প্রথম আলোকে একই কথা বলেছেন বিএনপির অন্য দুই নেতা এস এন তরুণ দে ও আক্তার হোসেন।
রুমিনসহ দলের তিন নেতা স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করলে আসনটি বিএনপির হাতছাড়া হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন উপজেলা যুবদলের সদস্যসচিব মো. নূর আলম। তিনি বলেন, ‘এখানে খেজুরগাছ প্রতীক নিয়ে জোটের প্রার্থী নির্বাচন করলে ২০ হাজারের মতো ভোট পাবে। দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেব, আমরা কার নির্বাচন করব।’
ইউনিয়ন পর্যায়ের বিএনপির একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, এখানে ধানের শীষের বিকল্প কোনো প্রতীক নিয়ে জোটের প্রার্থীর পক্ষে বিজয়ী হওয়া কঠিন। এ ক্ষেত্রে রুমিন ফারহানা স্বতন্ত্র প্রার্থী হলে জোটের প্রার্থীর সমস্যা হবে।
এদিকে দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে সবাইকে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছেন সরাইল উপজেলা বিএনপির সভাপতি আনিছুল ইসলাম ঠাকুর। জোটের প্রার্থী যদি ধানের শীষের পরিবর্তে খেজুরগাছ প্রতীকে নির্বাচন করে, তবে কোনো সমস্যা হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সমস্যা তো হবেই, তবে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় তা কাটিয়ে নিতে হবে।’