ময়মনসিংহের ফুলপুরে মানসিক ভারসাম্যহীন নারী ও নবজাতককে দেখতে আজ দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান ইউএনও সাদিয়া ইসলাম
ময়মনসিংহের ফুলপুরে মানসিক ভারসাম্যহীন নারী ও নবজাতককে দেখতে আজ দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান ইউএনও সাদিয়া ইসলাম

পথে পথে ঘুরে বেড়ানো ‘পাগলির’ কোলে ফুটফুটে সন্তান

ময়মনসিংহের ফুলপুরে পথে পথে ঘুরে বেড়ানো মানসিক ভারসাম্যহীন এক নারীকে সবাই ‘পাগলি’ বলে ডাকেন। তাঁর নাম-পরিচয় কেউ জানেন না। আনুমানিক ১৯ বছর বয়সী ওই নারী একটি ফুটফুটে ছেলেসন্তানের জন্ম দিয়েছেন। গ্রামের একটি বাড়িতে সন্তান প্রসবের পর বিষয়টি জানতে পেরে মা ও নবজাতককে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনে ভর্তি করেছে স্থানীয় প্রশাসন।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, মানসিক ভারসাম্যহীন তরুণী বছরখানেক ধরে ফুলপুর উপজেলার সিংহেশ্বর বাজার ও আশপাশের এলাকায় ঘুরে বেড়ান। রাস্তায় রাত যাপন করতেন। প্রসবযন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে গতকাল বুধবার বিকেলে সিংহেশ্বর ইউনিয়নের ডুবার পাড় বাজার-সংলগ্ন নবী হোসনের বাড়িতে আশ্রয় নেন। সেখানে তিনি একটি ছেলেসন্তানের জন্ম দেন। খবরটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে রাত ১০টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া ইসলাম অ্যাম্বুলেন্স ও লোক পাঠিয়ে নবজাতক ও মাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান।

ফুলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রাহাত চৌধুরী বলেন, মা ও শিশু এখন সুস্থ আছে। তবে বাচ্চাটির ওজন ২ কেজি ১০০ গ্রাম। ঠিকমতো মায়ের বুকের দুধ পেলে সুস্থ থাকবে। যত দিন হাসপাতালে থাকবে, তাঁরা পরিপূর্ণ সুস্থ করে তুলতে সব সময় নজর রাখবেন।

তাকওয়া অসহায় সেবা সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মো. তপু রায়হান বলেন, শিশুটি জন্মানোর পর তাঁরা খবর পান, ওই নারীকে সন্তান দেওয়া হবে না। ওই অবস্থায় স্থানীয় প্রশাসনকে জানালে প্রশাসন নবজাতক ও তার মাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করায়। তিনি বলেন, কোনো খারাপ প্রকৃতির লোকের কারণে এই নারী মা হয়েছেন। এখন তাঁর ওই সন্তানের জীবন অনিশ্চিত।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. শিহাব উদ্দিন খান বলেন, এই মায়ের যে মানসিক অবস্থা, তাতে তিনি সন্তান রাখতে পারবেন না। ওই অবস্থায় নবজাতকের সুন্দর ভবিষ্যতের কথা ভেবে তাঁরা সরকারি ছোট মণি নিবাসে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। সে জন্য আজ বৃহস্পতিবার উপজেলা শিশু কল্যাণ বোর্ডের একটি সভা হয়েছে। তবে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। স্থানীয় অনেকে শিশুটিকে নিতে আবেদন করেছেন। শিশুটির জন্য যা ভালো হয়, তাঁরা তা–ই করবেন।