সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় চুরির অভিযোগে মারধরের শিকার ইছা মিয়া নামের সেই যুবলীগ নেতার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে তাঁকে পুলিশে দিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। শুধু তা–ই নয়, ইছা মিয়ার বিরুদ্ধে তাঁর বাবা বাদী হয়ে থানায় একটি মামলাও দিয়েছেন।
তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। উপজেলার দক্ষিণ বড়দল ইউনিয়নের সাধেরখলা গ্রামের সায়েদ আলীর ছেলে ইছা মিয়া (৩৫)। তিনি ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
ইছা মিয়ার বিরুদ্ধে এলাকার বিভিন্ন মানুষের বসতঘর, দোকান ও মসজিদে চুরির অভিযোগ রয়েছে। এলাকার বাজারের একটি দোকানে চুরির অভিযোগে ৩ জুন এলাকাবাসী ইছা মিয়াকে ধরে বাজারের একটি দোকানঘরের খুঁটিতে রশি দিয়ে বেঁধে মারধর করেন। পরে তিনি আর চুরি করবেন না বলে মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পান। তাঁকে মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
ইছা মিয়ার বড় ভাই দক্ষিণ বড়দল ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য হযরত আলী জানান, তাঁরা ইছা মিয়ার এসব বিষয় নিয়ে অত্যন্ত বিব্রত। অনেক চেষ্টা করেও তাঁকে সুপথে ফেরানো যাচ্ছে না। তাঁর জন্য এলাকায় মানসম্মান নিয়ে থাকা দায় হয়ে গেছে। গ্রামবাসী মারধর করার পর চিকিৎসার জন্য তাঁকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। কিন্তু সেখান থেকে ইছা মিয়া গত বৃহস্পতিবার পালিয়ে যান। পরে খোঁজ নিয়ে পরিবারের সদস্যরা তাঁকে ধরে তাহিরপুর থানায় পুলিশে সোপর্দ করেন। বাবা সায়েদ আলী বাদী হয়ে ইছা মিয়ার বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলাও দিয়েছেন।
হযরত আলী আরও বলেন, তিনি ও তাঁর বাবা বিএনপির রাজনীতি করেন। ইছা মিয়া যুবলীগ করতেন। ইছা মিয়া নেশা করেন, এলাকায় চুরি করেন। এ জন্য এলাকার কিছু লোকও দায়ী। চুরি করা জিনিসপত্র অনেকেই তাঁর কাছ থেকে কিনেন। আবার কেউ কেউ চুরির জিনিস কেনার জন্য তাঁকে অগ্রিম টাকাও দিয়ে রাখেন। হযরত আরও আলী বলেন, ‘এখন সবাই ইছার বিরুদ্ধে, পরিবারের বিরুদ্ধে কথা বলছেন। অথচ তাঁকে অনেক চেষ্টা করেছি শাসন করার, কিন্তু পারিনি। বাধ্য হয়ে পুলিশে দিয়েছি।’