
নরসিংদী বাজারে দায়িত্ব পালনরত দুই আনসার সদস্যকে দড়ি দিয়ে বেঁধে গুলিভর্তি দুই শটগান ছিনিয়ে নেওয়ার সাত দিন পর শটগান দুটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় আন্তজেলা ডাকাত দলের ১ নারীসহ ১০ জনকে আটকের কথা জানিয়েছে পুলিশ।
আজ সোমবার বেলা একটার দিকে নরসিংদীর পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে অস্ত্র উদ্ধার ও আসামি গ্রেপ্তারের খবর জানান পুলিশ সুপার (এসপি) কাজী আশরাফুল আজীম।
এর আগে গত সোমবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে শহরের হাড়িদোয়া নদীসংলগ্ন বাজার বণিক সমিতির আনসার ক্যাম্পের সামনে দুই আনসার সদস্যকে দড়ি দিয়ে বেঁধে ১০টি গুলিভর্তি ২টি শটগান ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটে। দুই আনসার সদস্য হলেন—মো. আনারুল হক ও মো. জাফর ইকবাল। এর দুই দিন পর গত বুধবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে সদর উপজেলা আনসার কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) লুৎফুন্নাহার লতিফা বাদী হয়ে নরসিংদী মডেল থানায় মামলা করেন। মামলায় ১৫ থেকে ১৬ জন অজ্ঞাত দুর্বৃত্তকে আসামি করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার ১০ জন হলেন—শরীয়তপুরের জাজিরার কুণ্ডেরচরের আনোয়ার দেওয়ান (৪২), দেলোয়ার খলিফা (৩৭), খলিফা (৪২), মোড়লকান্দি এলাকার আলেয়া বেগম (৪৫), মাদারীপুরের উত্তর কাউয়াকুড়ির কালু হাওলাদার (৩৮) ও ফরিদ হাওলাদার (৪৫); শিবচরের হাওলাদার কান্দির ফারুক খাঁ (২১); বাগেরহাটের ফকিরহাটের বালিয়াডাঙ্গার শেখ আল মামুন (৩২), আনোয়ার হোসেন (৫৭) এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের বাজিবিশারা এলাকার শফিকুল ইসলাম (২৭)।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত ২৬ ডিসেম্বর রাতে বাজার বণিক সমিতির আনসার ক্যাম্পের ৪ সদস্য তাঁদের নামে ইস্যুকৃত ৪টি শটগান ও ২০টি গুলি নিয়ে বাজারের নিরাপত্তার কাজে ছিলেন। রাত দেড়টার দিকে দেশি অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত ১৭ থেকে ১৮ জন দুর্বৃত্ত দুই আনসার সদস্যের ২টি শটগান ও ১০টি গুলি ছিনিয়ে নেন। পরে তাঁদের দুই হাত পেছনে বেঁধে রেখে মেঘনা নদীর বেড়িবাঁধ ধরে পালিয়ে যান। গোপন সংবাদ ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় নরসিংদী, মুন্সিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, বাগেরহাট ও খুলনার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালানো হয়। এসব অভিযানে ১০ জনকে গ্রেপ্তার এবং লুট হওয়া দুটি শটগান ও দুটি গুলি উদ্ধার করা হয়। শটগান দুটি উদ্ধার করা হয় শরীয়তপুরের জাজিরা এলাকার গ্রেপ্তার আলেয়া বেগমের বাড়ি থেকে।
পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম সংবাদ সম্মেলনে বলেন, গ্রেপ্তার প্রত্যেকে তাঁদের নিজ নিজ এলাকায় ডাকাত হিসেবে পরিচিত। তাঁদের প্রত্যেকের নামে একাধিক ডাকাতির মামলা আছে। দলটির অধিকাংশ সদস্যকে ২০২১ সালের জুনে একটি ডাকাতির মামলায় জেলা গোয়েন্দা শাখা গ্রেপ্তার করেছিল। জামিনে বের হয়ে তাঁরা আবার ডাকাতিতে সম্পৃক্ত হয়ে পড়েন।