আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে ঘর। সেখানে এসে খুঁজছেন প্রয়োজনীয় কিছু পান কিনা। আজ সকাল পৌনে দশটার দিকে চট্টগ্রামের অক্সিজেন এলাকায় কেডিএস কারখানার পাশে রেললাইন সংলগ্ন করিম কলোনিতে
আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে ঘর। সেখানে এসে খুঁজছেন প্রয়োজনীয় কিছু পান কিনা। আজ সকাল পৌনে দশটার দিকে চট্টগ্রামের অক্সিজেন এলাকায় কেডিএস কারখানার পাশে রেললাইন সংলগ্ন করিম কলোনিতে

চট্টগ্রামে বস্তিতে আগুন

কারখানা থেকে ছুটে এসে দেখলেন, আগুনে পুড়ছে ঘর

পোশাককর্মী রিমু আক্তার যে কারখানায় কাজ করেন, সেখান থেকে তাঁর বাসার দূরত্ব ছয় শ গজ। কাজের ফাঁকে হঠাৎ দেখেন চারদিক ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে আছে। কারখানায় বেজে ওঠে অ্যালার্ম। বের হয়ে দেখেন কারখানার পাশে রেললাইন–সংলগ্ন কলোনিতে আগুনের লেলিহান শিখা। সেখানেই তাঁর বসতঘর। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখলেন সব পুড়ে ছাই হয়ে যেতে। পরনের শাড়ি ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। কোনো কিছুই রক্ষা করতে পারেননি পোশাককর্মী রিমু আক্তার।

আজ সোমবার সকাল পৌনে দশটার দিকে নগরের অক্সিজেন এলাকায় কেডিএস কারখানার পাশে রেললাইন–সংলগ্ন করিম কলোনিতে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। রিমু আক্তারসহ অনেক পোশাককর্মী থাকতেন সেখানে।

রিমু আক্তার পুড়ে যাওয়া ধ্বংসস্তূপের সামনে বিলাপ করতে করতে প্রথম আলোকে বলেন, কারখানা থেকে দৌড়ে এসে দেখি সব শেষ। একটা কাপড়ও বের করতে পারিনি। বাসন, ডেকচি–পাতিল, জমানো টাকা সব পুড়ে গেছে।’

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, আজ সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটের দিকে করিম কলোনিতে আগুন লাগে। পাশের কেডিএস কারখানা থাকায় আশপাশের লোকজন প্রথমে মনে করেছিলেন, সেখানে লেগেছে। কেডিএস কারখানায় কর্মীদের সতর্ক করে অ্যালার্মও বাজানো হয়। পরে কেডিএস কারখানার অগ্নিনির্বাপণকর্মী ও ফায়ার সার্ভিসের লোকজন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।

ফায়ার সার্ভিস চট্টগ্রামের উপপরিচালক জসিম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনে ৫০টি ঘর পুড়ে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তিন লাখ টাকার। উদ্ধার হয়েছে এক কোটি টাকার সম্পদ।

আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে রিমু আক্তারের মতো ফাহিমা আক্তারের ঘরও। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ধ্বংসস্তূপ ছাড়া আর কিছুই নেই। খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাতে হবে।

ঘরে আগুন লাগার খবর পেয়ে ছুটে আসেন আরেক পোশাককর্মী জিন্নাত আক্তার। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর স্বামী ও তিনি কারখানায় কাজে চলে যান সকালে। আগুন লাগার খবর পেয়ে ছুটে এসে দেখেন পুড়ে সব ছাই। ঘরের মধ্যে ছিল তাঁর অসুস্থ আট বছরের ছেলে মো. সাব্বির। প্রতিবেশীরা আগুন লাগার পর তাঁর ছেলেকে দ্রুত বের করে আনে। না হলে ছেলে পুড়ে অঙ্গার হয়ে যেত।