নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা হিরো আলমের
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে আপিল করে প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ার পর এবার নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দিলেন বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম। গত রোববার শুনানি শেষে হিরো আলমের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তিন দিনের মাথায় বুধবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দেন তিনি।
বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন হিরো আলম। তিনি বুধবার রাতে বলেন, ‘১৭ ডিসেম্বর রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের আবেদন করব।’
এর আগে বগুড়া-৪ আসনে বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন আলোচিত ইউটিউবার হিরো আলম। হলফনামাসহ আনুষঙ্গিক কাগজপত্রে স্বাক্ষর না করাসহ নানা ত্রুটির কারণে ৩ ডিসেম্বর যাচাই-বাছাই শেষে তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম। পরে প্রার্থিতা ফিরে পেতে এক সপ্তাহ আগে ইসিতে আপিল করেছিলেন হিরো আলম। রোববার তাঁর আপিল শুনানিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল ও অন্য কমিশনাররা উপস্থিত ছিলেন। হিরো আলমের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন বাংলাদেশ কংগ্রেসের যুগ্ম মহাসচিব ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মিজানুর রহমান।
বাংলাদেশ কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন জাতীয় জোটের ছয় দলের মধ্যে আছে গণ অধিকার পার্টি (পিআরপি), বাংলাদেশ বেকার সমাজ (বাবেস), বাংলাদেশ পিপলস পার্টি, বাংলাদেশ গ্রিন পার্টি ও বাংলাদেশ সৎ সংগ্রামী ভোটার পার্টি। বাংলাদেশ কংগ্রেসের চেয়ারম্যান কাজী রেজাউল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, হিরো আলম বাংলাদেশ কংগ্রেসের মনোনয়নে জাতীয় জোট থেকে বগুড়া-৪ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। জাতীয় জোটের নির্বাচনী প্রতীক ডাব।
এর আগে বাংলাদেশ জনদলের (বিজেডি) প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা জানিয়েছিলেন হিরো আলম। বিজেডি বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (বিএসপি) নেতৃত্বাধীন লিবারেল ইসলামিক জোটের ছয় দলের একটি। ইসলামিক জোটের একক প্রার্থী হিসেবে বগুড়া-৪ আসন থেকে হিরো আলমের জন্য মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করা হয়েছিল। কিন্তু এক দিনের ব্যবধানে বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী হিসেবে হিরো আলম মনোনয়নপত্র জমা দেন।
হিরো আলম গত ১ ফেব্রুয়ারি বগুড়া-৪ (কাহালু ও নন্দীগ্রাম) ও বগুড়া-৬ (সদর) আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী (একতারা প্রতীক) হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এর মধ্যে বগুড়া-৪ আসনে ১৪-দলীয় জোটের অন্যতম শরিক জাসদের এ কে এম রেজাউল করিমের কাছে ৮৩৪ ভোটে হেরে যান তিনি। এরপর ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আবারও স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে আলোচনায় আসেন তিনি। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর কাছে হেরে গেলেও নির্বাচনের দিন তাঁর ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। তখন এ হামলার নিন্দা জানিয়ে যৌথ বিবৃতি দেয় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, স্পেন, ডেনমার্ক, সুইডেন, নরওয়ে, সুইজারল্যান্ড এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের দূতাবাস ও হাইকমিশন। বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইসও হিরো আলমের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়ে টুইট করেছিলেন।
এর আগে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন হিরো আলম। যাচাই-বাছাইয়ের দুই দফায় তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। পরে উচ্চ আদালতে গিয়ে প্রার্থিতা ফিরে পান তিনি। ওই বার সিংহ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেন হিরো আলম। তবে নির্বাচনের দিন কারচুপি ও নির্বাচন কমিশনের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন তিনি।
আরও পড়ুন
-
নায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যায় আজিজ মোহাম্মদ ভাইসহ ৩ জনের যাবজ্জীবন, ৬ জন খালাস
-
রায় শুনে যা বললেন সোহেল চৌধুরী–দিতির মেয়ে লামিয়া
-
চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী কেন খুন হন, আদালতে সাক্ষীরা যা বলেছিলেন
-
ইসরায়েলের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বোমার চালান স্থগিত করা কেন বড় হুঁশিয়ারি
-
নির্মাণাধীন বাড়ির ছাদে বসেছিল রক্তাক্ত শিশুটি, গলাজুড়ে ছুরির ক্ষত