
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ‘জনগণের সঙ্গে প্রশাসকদের মনস্তাত্ত্বিক ও ক্ষমতাকেন্দ্রিক দূরত্ব টিকিয়ে রেখে সুশাসন নিশ্চিত করা যাবে না। সরকারি বা বেসরকারি অনুষ্ঠানে প্রধান ও বিশেষ অতিথি এগুলো আর বইলেন না। আমরা যখন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য বা ইউরোপে যাই, তখন তাঁরা এগুলো বলেন না। সবচেয়ে ক্ষমতাধর রাষ্ট্রপতিকে তাঁরা ‘মিস্টার প্রেসিডেন্ট; বলেন। এই বিশেষণগুলো আমাদের একটি অন্য গ্রহে নিয়ে যায়। জনগণের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করে। এই দূরত্বটা আমাদের অবশ্যই কাটিয়ে আসতে হবে।’
আজ শনিবার সকাল ১০টায় ঢাকার সাভার উপজেলা চত্বরে এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। ঢাকা জেলার পরিবেশ ও প্রতিবেশ সুরক্ষা এবং টেকসই উন্নয়নে সহায়তার লক্ষ্যে অনুষ্ঠানে ‘বেটার ঢাকা ডিস্ট্রিক্ট ইনিশিয়েটিভস’ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন তিনি। এ ছাড়া সাভার উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আজ শনিবার এক দিনে বিভিন্ন প্রজাতির এক লাখ গাছের চারা রোপণের কর্মসূচির উদ্বোধন করেন সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
বক্তব্যের এক পর্যায়ে এই উপদেষ্টা বলেন, ‘আজ যাঁরা গরমের মধ্যে এখানে বসে আছেন, একটি গাছ লাগানোর জন্য। আমি নই, তাঁরাই অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি।’
রিজওয়ানা হাসান জানান, একটি দেশ গত ৫৩-৫৪ বছর একইভাবে চলে এসেছে, সেটি মাত্র দেড়-দুই বছরে সম্পূর্ণভাবে পরিবর্তিত হয়ে যায় না। তবে পরিবর্তনটা শুরু হয়েছে। মানুষ এখন আর অন্যায় সহজে মেনে নিচ্ছে না। বিভিন্ন জায়গায় জনগণ সংগঠিত হয়ে প্রতিবাদের ভাষায় জানিয়ে দিচ্ছে কোনো ধরনের অপশাসনের চেষ্টা তারা মেনে নেবে না।
বৃক্ষরোপণের গুরুত্ব তুলে ধরে সরকারের এই উপদেষ্টা বলেন, ‘ধর্মেও গাছ রোপণের কথা বলা হয়েছে। যতক্ষণ পর্যন্ত গাছ না কেটে উন্নয়ন করা যায়, সে পর্যন্ত ভাবতে হবে। আর একটি গাছ কাটা হলে বিপরীতে তিনটি গাছ লাগাতে হবে। নদী ও পরিবেশদূষণ রোধে সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। সরকার তখনই ব্যর্থ হয়, যখন জনগণও ব্যর্থ হয়। সরকারের ব্যর্থতা মানে জনগণেরও ব্যর্থতা, জনগণের ব্যর্থতা মানে সরকারেরও ব্যর্থতা।’
অনুষ্ঠানে ঢাকা জেলা প্রশাসক তানভীর আহমেদের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে ঢাকা বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী ও প্রধান বক্তা হিসেবে সাভার উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুবকর সরকার উপস্থিত ছিলেন।