শরীয়তপুরের জজিরা উপজেলার নাওডোবা এলাকায় সংঘর্ষের সময় ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। আজ সোমবার দুপুরে
শরীয়তপুরের জজিরা উপজেলার নাওডোবা এলাকায় সংঘর্ষের সময় ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। আজ সোমবার দুপুরে

মসজিদ নির্মাণকে কেন্দ্র করে জাজিরায় ককটেল ফাটিয়ে সংঘর্ষ, আহত ১০

শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার নাওডোবায় মসজিদ নির্মাণকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় তারা অন্তত ৫০টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১০ জন আহত হয়েছেন।

আজ সোমবার দুপুরে পদ্মা সেতু প্রকল্পের পুনর্বাসন এলাকায় নাওডোবা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আরিফুল ইসলাম ও সাবেক সদস্য কাশেম ব্যাপারীর সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহত ব্যক্তিদের জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও ঢাকায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

এর আগে গতকাল উপজেলার বিলাশপুরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ৬০-৭০টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। একইভাবে গত ৫ এপ্রিল বিলাশপুরে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাটি সারা দেশে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়। জাজিরার বিভিন্ন গ্রামে সংঘর্ষের ঘটনা হলেই তাতে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। তবে স্থানীয় পুলিশ এসব ককটেলের উৎস খুঁজে বের করতে পারেনি।

জাজিরার পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানা সূত্র জানায়, পদ্মা সেতুর টোল প্লাজার দুই কিলোমিটার পশ্চিমে পদ্মা সেতু পুনর্বাসন এলাকা-৬ অবস্থিত। ওই এলাকাটি নাওডোবা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে অবস্থিত। ওই ওয়ার্ডের সদস্য আরিফুল ইসলাম ও সাবেক সদস্য কাশেম ব্যাপারীর মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ আছে। পুনর্বাসন এলাকায় একটি মসজিদ নির্মাণকে কেন্দ্র করে ওই দুই পক্ষের মধ্যে আজ দুপুর ১২টার দিকে ঝগড়া বাধে। পরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে দুই পক্ষের সমর্থকেরা সংঘর্ষে জড়ান। সংঘর্ষের সময় দুই পক্ষের লোকজন দেশি অস্ত্র, রামদা, ঢাল, সড়কি নিয়ে একে অপরকে ধাওয়া দেন। ওই সময় দুই পক্ষের লোকজন অন্তত ৫০টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটান।

বালতিতে করে ককটেল নিয়ে ছুটছেন একজন। আজ সোমবার দুপুরে শরীয়তপুরের জজিরা উপজেলার নাওডোবা এলাকায়

সংঘর্ষের ঘটনায় পুনর্বাসন এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ গিয়ে বেলা দেড়টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশ পরিত্যক্ত অবস্থায় অবিস্ফোরিত পাঁচটি ককটেল উদ্ধার করে। সংঘর্ষে সাবেক ইউপি সদস্য কাশেম ব্যাপারীসহ ১০ জন আহত হন। কাশেম ব্যাপারীকে তাঁর স্বজনেরা চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে গেছেন। অন্য আহত ব্যক্তিদের জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

নাওডোবা ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আরিফুল ইসলাম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাবেক মেম্বর কাশেম ব্যাপারী ও তাঁর লোকজন আমাদের একটি ক্লাব ভেঙে ফেলার জন্য হামলা করেছিলেন। তখন আমার লোকজন বাধা দিয়েছে। তাঁরা আমার পাঁচ-ছয়জনকে কুপিয়ে আহত করেছেন।’

সাবেক ইউপি সদস্য কাশেম ব্যাপারী মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আরিফুলের লোকজন আমাকে ও আমার লোকজনের ওপর হামলা করেছে। আমি আহত হওয়ার কারণে কথা বলতে পারছি না। তাঁরা অন্যায়ভাবে হামলা করেছে।’

শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘মসজিদ নির্মাণ করা নিয়ে বিরোধে নাওডোবায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সেখানে ককটেল বিস্ফোরণ ও দেশি অস্ত্র ব্যবহারের তথ্য পেয়েছি। পুলিশ ওই ককটেলের উৎস খুঁজছে। আর দেশি অস্ত্র উদ্ধারের জন্য কাজ শুরু করে দিয়েছে।’