
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ছাত্রদলের সাবেক নেতা সাদ্দাম হোসেনকে (৩৫) বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গুলি করে হত্যা মামলার প্রধান আসামি স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা দেলোয়ার হোসেনসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রোববার রাত ১০টার দিক ঢাকার বাসাবো এলাকা থেকে র্যাব-৩ ও ৯ ব্যাটালিয়ন অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করে।
দেলোয়ার হোসেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক। হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ায় দেলোয়ারের দলীয় পদ স্থগিত করা হয়েছে। আজ সোমবার স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এস এম জিলানী ও সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান এ সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছেন। জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব সালাউদ্দিন মোল্লা দলীয় পদ স্থগিতের বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তার দেলোয়ার হোসেন ওরফে দিলীপ (৪৯) ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কান্দিপাড়ার মাইমলহাটির বাসিন্দা। অপরজন হলেন তাঁর সহযোগী একই গ্রামের বাবুল মিয়া (২৮)। ছাত্রদল নেতা হত্যার ঘটনায় দেলোয়ারসহ সাতজনকে আসামি করা হয়েছে। দেলোয়ারের বিরুদ্ধে চুরি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধে ১৯টি মামলা রয়েছে।
অন্য আসামিরা হলেন দেলোয়ারের সহযোগী ও গ্রেপ্তার বাবুলের ভাই একই গ্রামের শাকিল মিয়া (৩৫), পলাশ মিয়া (৩৫), টিটন মিয়া (৩৪), বাপ্পা মিয়া (২৬) ও দেলোয়ার হোসেনের ভাই কাজল মিয়া (৪৫)। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও পাঁচ-সাতজনকে আসামি করা হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মো. নূর নবী প্রথম আলোকে বলেন, র্যাব-৯, সিপিসি-১, ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং র্যাব-৩, ঢাকার একটি যৌথ দল দেলোয়ার হোসেনসহ জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালায়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাবের সদস্যরা রোববার রাত ১০টার দিকে ঢাকার সবুজবাগ থানার দক্ষিণ বাসাবো এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন। সে সময় হত্যা মামলার প্রধান আসামি দেলোয়ার হোসেন ও তাঁর সহযোগী বাবুল মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। সোমবার সকালে তাঁদের দুজনকে সদর থানা–পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কান্দিপাড়া এলাকায় বাসা থেকে ডেকে নিয়ে ছাত্রদলের সাবেক ওই নেতাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। স্বজনদের অভিযোগ, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা দেলোয়ার হোসেন ও তাঁর সহযোগীরা তাঁকে হত্যা করেছেন। নিহত সাদ্দাম হোসেন সদর উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সদস্য। তাঁর স্ত্রী ও দুটি মেয়ে আছে। শুক্রবার নিহত সাদ্দাম হোসেনের বাবা মোস্তফা কামাল ওরফে মস্তু মিয়া বাদী হয়ে দেলোয়ারসহ সাতজনকে আসামি করে সদর থানায় হত্যা মামলা করেন।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আজহারুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, দেলোয়ার হোসেনকে র্যাবের দুটি দল গ্রেপ্তার করেছে। ওই হত্যা মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছিল। আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন মঞ্জুর করেছেন। দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে চুরি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধে আরও ১৯টি মামলা রয়েছে।