
শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জানে আলম ওরফে খোকন মাদবর বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় বিএনপি নেতা মিয়া নুরুদ্দিন আহাম্মেদ ওরফে অপুর হাতে ফুল দিয়ে তিনি বিএনপিতে যোগদানের ঘোষণা দেন। এ সময় জানে আলমের সঙ্গে আওয়ামী লীগের আরও ৫০ সমর্থক দলটিতে যোগ দিয়েছেন।
বিএনপি নেতারা জানান, শরীয়তপুর–৩ আসনের (ডামুড্যা, গোসাইরহাট ও ভেদরগঞ্জের আংশিক) বিএনপির প্রাথমিক ঘোষিত প্রার্থী মিয়া নুরুদ্দিন আহাম্মেদ। তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একান্ত সচিব ছিলেন। বিএনপি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য প্রাথমিক প্রার্থীদের তালিকায় নুরুদ্দিনের নাম ঘোষণার পর থেকে তিনি নির্বাচনী এলাকায় গণসংযোগ শুরু করেছেন।
আজ মিয়া নুরুদ্দিন আহাম্মেদ ডামুড্যা উপজেলার শিধুলকুরা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে গণসংযোগে যান। তালতলা এলাকায় গেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জানে আলম মাদবর তাঁর সমর্থকদের নিয়ে বিএনপিতে যোগদানের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। এ সময় জানে আলম নুরুদ্দিনের গলায় ফুলের মালা পরিয়ে দিয়ে বিএনপিতে যোগদানের ঘোষণা দেন। নুরুদ্দিন আহাম্মেদও আওয়ামী লীগের ওই নেতা ও তাঁর অনুসারীদের ফুলের মালা পরিয়ে দিয়ে বিএনপিতে নিয়ে নেন।
জানে আলম ২০১৪ সালে করা ডামুড্যা উপজেলা আওয়ামী লীগ কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি ২০১৬ সালে নৌকা প্রতীক নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২০২২ সালের নির্বাচনে আর আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পাননি তিনি। পরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করে হেরে যান। এর পর থেকে দলের মধ্যে কোণঠাসা হয়ে পড়েন।
আওয়ামী লীগ ছেড়ে বিএনপিতে যোগদানের বিষয়ে জানতে চাইলে জানে আলম মাদবর প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ছাত্রজীবন থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে আসছি। এখন দলে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নেই। কর্মীদের মূল্যায়ন হয় না। দলের মধ্যে দুর্বৃত্তায়ন বেড়ে যাওয়ায় এ পরিণতি হয়েছে। তাই আমি বিএনপিতে যোগদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যেহেতু আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ও কোনো নেতা এলাকায় নেই, তাই পদত্যাগপত্র জমা দিতে পারিনি। পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েই বিএনপিতে যোগদান করেছি। যত দিন বেঁচে থাকব ও রাজনীতি করব, তত দিন বিএনপির আদর্শের প্রতি অবিচল থাকব।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মিয়া নুরুদ্দিন আহাম্মেদ বলেন, ‘জানে আলম মাদবর ও তাঁর সঙ্গে আসা সব নেতা–কর্মীকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। তাঁরা আজ থেকে বিএনপির আদর্শের রাজনীতি শুরু করলেন। তাঁদের এই উপস্থিতি ও সমর্থন আমাদের শক্তি আরও বৃদ্ধি করেছে। দলমত–নির্বিশেষে আমরা সবাই একটি পরিবার। হিংসা–বিদ্বেষ ভুলে এই পরিবারের সব সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে একটি সমৃদ্ধ ও উন্নত শরীয়তপুর গড়ে তুলব।’