
যশোরে এক ব্যবসায়ীকে বুকসমান বালুতে পুঁতে অস্ত্রের মুখে চার কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামানকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। চাঁদাবাজি ও অস্ত্র আইনে করা দুটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে শুক্রবার বিকেলে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
যশোর আদালত পুলিশের পরিদর্শক রোকসানা খাতুন বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তার আসাদুজ্জামান নওয়াপাড়া পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। সম্প্রতি বিভিন্ন অভিযোগে তাঁর পদ স্থগিত করেছে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি। তিনি অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া নৌবন্দর এলাকার জাফ্রিদী এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে খুলনা শহরের একটি হোটেল থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ সময় তাঁর সহযোগী জেলার অভয়নগর উপজেলার চলিশিয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য ও বিএনপির কর্মী তুহিন শেখকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারের পর আসাদুজ্জামানকে সঙ্গে নিয়ে তাঁর মালিকানাধীন নওয়াপাড়া ইকোপার্ক, বাড়ি ও ব্যক্তিগত কার্যালয়ে অভিযান চালায় যৌথ বাহিনী। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চলে এ অভিযান। অভিযানে চাপাতি, ছুরি, হাঁসুয়া, বিভিন্ন ব্যাংকের চেক বই ও সিসিটিভি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক জব্দ করা হয়। আজ অস্ত্র আইনের একটি মামলা ও স্থানীয় ব্যবসায়ী শাহনেওয়াজ কবীরের স্ত্রীর করা চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁকে আদালতে পাঠায় অভয়নগর থানা-পুলিশ। শাহনেওয়াজ কবীর অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া নৌবন্দর এলাকার জাফ্রিদী এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী।
অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আলিম প্রথম আলোকে বলেন, বৃহস্পতিবার আটক করা হলেও আসাদুজ্জামানকে নিয়ে দিনভর বিভিন্ন স্থানে অভিযানে যায় যৌথ বাহিনী। যেহেতু রাত হয়ে যায়, তাই আজ তাঁকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। চাঁদাবাজি ও অস্ত্র মামলায় বিচারক তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
ব্যবসায়ী শাহনেওয়াজ কবীরের স্ত্রী আসমা খাতুন অভিযোগ করে বলেন, গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর তাঁর স্বামীকে সন্ত্রাসীদের দিয়ে অপহরণ করে ইকোপার্কে বুকসমান বালুর মধ্যে পুঁতে বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামান ও মফিজ উদ্দিনের নেতৃত্বে চার কোটি টাকার চাঁদা আদায় করা হয়।
এ ঘটনায় গত ৩১ জুলাই অভয়নগর উপজেলার রাজঘাট সেনা ক্যাম্পে লিখিত অভিযোগ দেন আসমা খাতুন। পরে ৩ আগস্ট তিনি বাদী হয়ে বিএনপি নেতাসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করে অভয়নগর থানায় মামলা করেন। মামলার এজাহারভুক্ত আসামিদের মধ্যে বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামান, তাঁর বাবা কামরুজ্জামান ও ডিশ ব্যবসায়ী মিঠু আছেন। তাঁদের মধ্যে কামরুজ্জামান ও মিঠুকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁরা দুজনেই কারাগারে আছেন। সর্বশেষ মামলার প্রধান আসামি আসাদুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হলো।