ফেনীর সোনাগাজীতে পরোয়ানাভুক্ত আসামি ধরতে গেলে পুলিশের ওপর হামলা ও অস্ত্র–ওয়াকিটকি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় দুই সহকারী উপপরিদর্শকসহ (এএসআই) ছয় পুলিশ সদস্যকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে। আজ বুধবার সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান।
থানা থেকে প্রত্যাহার করা পুলিশ সদস্যরা হলেন এএসআই সাইদুর রহমান ও মোফাজ্জল হোসেন, কনস্টেবল মাহবুব আলম, আইনুল করিম, কাঞ্চন ও হৃদয়। তাঁদের মধ্যে দুজন কনস্টেবল সোনাগাজী মডেল থানার মুহুরী প্রজেক্ট পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত ছিলেন। এ ছাড়া এ ঘটনায় করা মামলায় দুই নারীসহ তিনজনকে আজ আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গ্রেপ্তার হওয়া আসামিরা হলেন জাহেদুল ইসলাম, তাঁর ছোট বোন সাবিনা ইয়াসমিন ও ছোট ভাইয়ের স্ত্রী নিশু।
পুলিশ সূত্র জানায়, মঙ্গলবার সকাল ছয়টার দিকে উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের পশ্চিম আহাম্মদপুর গ্রামের হোসেন মিয়ার বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশের একটি দল। একাধিক মামলার পরোয়ানাভুক্ত আসামি জাহেদুল ইসলাম ও তাঁর ছোট ভাই রফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তারের সময় আসামি ও তাঁদের স্বজনেরা পুলিশের ওপর হামলা চালান। এ সময় দুই এএসআই ও চার কনস্টেবলকে পিটিয়ে তাঁদের কাছ থেকে একটি শটগান ও ওয়াকিটকি ছিনিয়ে নেওয়া হয়। হামলায় ছয় পুলিশ সদস্য আহত হন।
খবর পেয়ে সোনাগাজী মডেল থানা ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একাধিক দল সকালে আবার অভিযান চালায়। পরে জাহেদুলকে গ্রেপ্তার করে তাঁর দেখানো মতে পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্র ও ওয়াকিটকি উদ্ধার করা হয়।
ঘটনার পর দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে ছয় পুলিশ সদস্যকে থানার দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়। এ ছাড়া পুলিশের কাজে বাধা ও হামলার ঘটনায় ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তবে গ্রেপ্তার আসামিদের স্বজনেরা অভিযোগ করেছেন, পুলিশ ষড়যন্ত্র করে তাঁদের ফাঁসিয়েছে।
জাহেদুলের বড় বোন রোকসানা আক্তারের দাবি, জাহেদুল ডাকাত নন, নদীতে মাছ ধরে জীবিকা চালান। তাঁদের ফাঁসানো হয়েছে।
সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, পুলিশের ওপর হামলার মামলায় তিন আসামিকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। জাহেদুলের বিরুদ্ধে ডাকাতি ও অস্ত্র আইনের মামলাসহ মোট ৯টি মামলা বিচারাধীন। পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।