Thank you for trying Sticky AMP!!

নোয়াখালীতে পাঁচ বছর আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটের রাতে দলবদ্ধ ধর্ষণের মামলায় রায় ঘোষণা উপলক্ষে আসামিদের কারাগার থেকে আদালতের হাজতখানায় নেওয়া হয়। আজ সোমবার সকাল ১০টার দিকে

নোয়াখালীতে ভোটের রাতে দলবদ্ধ ধর্ষণের মামলার রায় আজ, বিশেষ নিরাপত্তা

পাঁচ বছর আগে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটের রাতে নোয়াখালীর সুবর্ণচরে দলবদ্ধ ধর্ষণের সেই আলোচিত ঘটনার মামলার রায় আজ সোমবার ঘোষণা করা হবে। আজ বেলা ১১টার দিকে নোয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক (জেলা জজ) ফাতেমা ফেরদৌস মামলাটির রায় ঘোষণা করবেন। এর আগে গত ১৬ জানুয়ারি মামলাটির রায় ঘোষণা করার কথা ছিল। কিন্তু মামলার রায় লেখার কাজ শেষ না হওয়ায় তারিখ পিছিয়ে ৫ ফেব্রুয়ারি পুনঃ নির্ধারণ করা হয়।

রায় ঘোষণা উপলক্ষে আদালত প্রাঙ্গণে নেওয়া হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা। বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে আদালত এলাকায়। সকাল দশটার দিকে নোয়াখালী জেলা কারাগার থেকে মামলার ১৫ আসামিকে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে জেলা জজ আদালতের হাজতখানায় আনা হয়। তখন হাজত প্রাঙ্গণে আসামিদের স্বজনদের ভিড় ও কান্নাকাটি করতে দেখা গেছে।

আদালতে সকালেই মামলার বাদী স্বামীসহ হাজির হয়েছেন নির্যাতনের শিকার সেই নারী। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘তারা (আসামিরা) সেই দিন মরা গরুর মতো আমাকে ছিঁড়ে খেয়েছে। আমাকে মৃত ভেবে তারা সেদিন ফেলে গিয়েছিল। সেই নির্যাতনের কথা দেশবাসী সবাই জানেন। আমি সেই নির্যাতনের ন্যায়বিচার চাই। এ ছাড়া আমার আর কিছু চাওয়ার নাই।’

রায়ের পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় নিজের আতঙ্কের কথা জানান নির্যাতনের শিকার নারী। তিনি বলেন, রায় ঘোষণার তারিখ জানাজানি হওয়ার পর থেকে আসামিদের আত্মীয়-স্বজনেরা তাঁর পরিবারকে নানাভাবে হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছেন। বলে বেড়াচ্ছেন, এলাকায় কীভাবে থাকেন, তাঁরা দেখে নেবেন। এসব কারণে তিনি আতঙ্কের মধ্যে আছেন। বিষয়টি তিনি চর জব্বর থানার ওসিকেও জানিয়ে রেখেছেন।

আদালতের স্টেনোগ্রাফার মো. শামছুদ্দিন আজ সকালে প্রথম আলোকে বলেন, আলোচিত এই মামলার রায় উপলক্ষে আদালত প্রাঙ্গণে বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তারা আগেই সংশ্লিষ্ট সকলকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি অবগত করেছেন। সকালে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আসামিদের কারাগার থেকে কোর্ট হাজতে আনা হয়েছে। বেলা ১১টায় রায় ঘোষণা করবেন বিচারক।

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রাতে স্বামী-সন্তানদের বেঁধে রেখে এক নারীকে (৪০) মারধর ও দলবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়। নির্যাতনের শিকার নারী চার সন্তানের জননী। তাঁর অভিযোগ ছিল, ভোটকেন্দ্রে থাকা ব্যক্তিদের পছন্দের প্রতীকে ভোট না দেওয়ার জের ধরে ওই হামলা ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি তখন দেশে-বিদেশে ব্যাপক আলোচিত হয়।

ওই ঘটনার পরদিন (৩১ ডিসেম্বর) নির্যাতনের শিকার নারীর স্বামী বাদী হয়ে চর জব্বর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। পরে মামলার তদন্ত শেষে সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের বহিষ্কার হওয়া প্রচার সম্পাদক রুহুল আমিন মেম্বারসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ২৭ মার্চ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের সহকারী কৌঁসুলি সালেহ আহমদ সোহেল খান প্রথম আলোকে বলেন, আলোচিত ওই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ ২৩ জন সাক্ষী উপস্থাপন করেছে। মামলায় রুহুল আমিন মেম্বারসহ ১৬ জন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৫ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। একজন আসামি-মো. মিন্টু ওরফে হেলাল (২৮) ঘটনার পর থেকে পলাতক আছেন।