সীমান্ত এলাকা দিয়ে মানুষকে ঠেলে পাঠানোর প্রতীকী ছবি
সীমান্ত এলাকা দিয়ে মানুষকে ঠেলে পাঠানোর প্রতীকী ছবি

ময়মনসিংহ ও পঞ্চগড় সীমান্ত দিয়ে নারী-শিশুসহ আরও ১৬ জনকে ঠেলে পাঠাল বিএসএফ

দেশের দুই জেলার সীমান্ত এলাকা দিয়ে নারী–শিশুসহ আরও ১৬ জনকে ঠেলে পাঠিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ময়মনসিংহের ধোবাউড়া সীমান্ত দিয়ে ৯ জন এবং আজ শুক্রবার ভোরে পঞ্চগড়ের অমরখানা সীমান্ত দিয়ে সাতজনকে ঠেলে পাঠানো হয়। তাঁদের আটক করে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া শুরুর কথা জানিয়েছে বিজিবি।

এ ছাড়া দিনাজপুরে বিরামপুর সীমান্ত দিয়ে ৯ শিশুসহ ১৫ জনকে ঠেলে পাঠিয়েছে বিএসএফ। গতকাল বৃহস্পতিবার গভীর রাতে উপজেলার বিনাইল ইউনিয়নের অচিন্তপুর সীমান্ত এলাকা দিয়ে তাঁদের বাংলাদেশে পাঠানো হয়। এ নিয়ে এক রাতে ৩১ জনকে সীমান্ত দিয়ে ঠেলে পাঠানোর খবর পাওয়া গেল।

ময়মনসিংহ

গতকাল বিকেল সোয়া ৫টার দিকে ৩১ বিজিবি নেত্রকোনার অধীন ধোবাউড়া উপজেলার মুন্সিপাড়া সীমান্ত ফাঁড়ি এলাকা দিয়ে ৯ জনকে ঠেলে পাঠানো হয়েছে। পরে তাঁদের উপজেলার দক্ষিণ মাইজপাড়া ইউনিয়নের কড়ইগড়া এলাকা থেকে আটক করে বিজিবি। তাঁদের মধ্যে ৬ জন পুরুষ, ২ জন শিশু ও ১ জন নারী আছেন। তাঁরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, একজনের বাড়ি ধোবাউড়া উপজেলায় এবং অন্যরা খুলনা ও পিরোজপুরের বাসিন্দা।

৩১ বিজিবি মুন্সিপাড়া সীমান্ত ফাঁড়ির কমান্ডার নায়েক সুবেদার খায়রুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, আটক ব্যক্তিরা দীর্ঘদিন ধরে ভারতের চেন্নাইসহ বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করে বিভিন্ন কাজ করছিলেন। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন চার-পাঁচ বছর আগে সেখানে গিয়ে বসবাস শুরু করেন। অন্যরা কয়েক মাস আগেই গিয়েছিলেন। আটক ৯ জনের বিরুদ্ধে পাসপোর্ট আইনে মামলা করা হয়েছে।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে ধোবাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আল মামুন সরকার বলেন, আজ শুক্রবার তাঁদের ময়মনসিংহ জেলা আদালতে সোপর্দ করা হবে।
এর আগে ৩ জুন একই সীমান্ত দিয়ে ১২ জনকে ঠেলে পাঠায় বিএসএফ।

পঞ্চগড়

পঞ্চগড় সদর উপজেলার অমরখানা ইউনিয়নের বিজিবি সীমান্ত ফাঁড়ি এলাকার ৭৪৩ নম্বর মেইন পিলার–সংলগ্ন সীমান্ত এলাকা দিয়ে আজ ভোরে সাতজনকে ঠেলে পাঠায় বিএসএফ। তাঁদের মধ্যে ২ জন পুরুষ, ৩ নারী ও ২ শিশু আছেন। তাঁদের বাড়ি নড়াইল ও যশোর জেলার বিভিন্ন এলাকায় বলে জানা গেছে।

নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ মো. বদরুদ্দোজা প্রথম আলোকে বলেন, ঠেলে পাঠানো সাতজন প্রায় পাঁচ বছর ধরে ভারতের মুম্বাই ও আশপাশের এলাকায় বসবাস করতেন। সেখানে তাঁরা বিভিন্ন কাজ করতেন। সম্প্রতি ভারতীয় পুলিশ তাঁদের আটক করে বাগডোগরা বিমানবন্দরে নিয়ে যায়। পরে তাঁদের বাসে করে সীমান্ত এলাকায় এনে বিএসএফের মাধ্যমে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানো হয়।

আইনি প্রক্রিয়া শেষে আটক সাতজনকে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানান পঞ্চগড় সদর থানার উপপরিদর্শক মো. কাইয়ুম আলী। তিনি বলেন, তাঁদের থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। তাঁদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। এ ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, এর আগে ১৬ মে ১১ জন ও ২১ মে ২১ জন এবং ২ জুন ২৬ জনকে পঞ্চগড়ের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ঠেলে বাংলাদেশে পাঠায় বিএসএফ।