নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলায় ছাত্রদলের এক নেতা ও তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে মব সৃষ্টি করে এক নারীর স্বর্ণালংকার ও টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় গতকাল বুধবার রাতে বড়াইগ্রাম থানায় লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন ওই নারী।
অভিযুক্ত নিসান হাসান (২২) বড়াইগ্রামের জোনাইল ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি এবং উপজেলার চরগোবিন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর সহযোগীরা হলেন কুশমাইল গ্রামের নয়ন হোসেন (২৩), সরাবাড়িয়া গ্রামের কামরুল ইসলাম (২০) ও একই গ্রামের হৃদয় হাসান (২১)।
বড়াইগ্রাম থানা ও ভুক্তভোগীর পরিবারের ভাষ্য, উপজেলার দিঘইর গ্রামের বাসিন্দা ফুল কুমারী গমেজের (৪৬) স্বামী করনেলিউস গমেজ তিন বছর আগে মারা যান। তাঁদের একমাত্র মেয়ে ঢাকায় পড়াশোনা করেন। ফুল কুমারী একাই বাড়িতে থাকেন। গত মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হঠাৎ তাঁর বাড়িতে গিয়ে হইচই শুরু করেন এবং দরজা খুলতে বলেন। রাতে দরজা খুলতে অস্বীকৃতি জানালে তাঁরা এলাকাবাসীকে জানান, ওই নারীর ঘরে পুরুষ রয়েছে এবং তিনি অনৈতিক কাজে জড়িত। এরপর দরজা না খুললে ঘরে আগুন দেওয়ার হুমকি দেন তাঁরা। একপর্যায়ে ভয় পেয়ে ফুল কুমারী দরজা খুললে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা ঘরে ঢুকে তল্লাশি চালান। কাউকে না পেয়ে তাঁরা ওই নারীর গলায় থাকা সোনার চেইন ও বিছানার নিচে রাখা পাঁচ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে চলে যান।
ফুল কুমারী গমেজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছাত্রদল নেতা নিসান হাসান হত্যা মামলার আসামি। তাঁর বাবাও নারী নির্যাতন মামলার আসামি। এ কারণে আমি রাতের বেলা সঙ্গে সঙ্গে দরজা খুলতে চাইনি। পরে ঘরে আগুন লাগানোর হুমকি দিলে আমি দরজা খুলে দিই। তখন তারা ঘরে ঢুকে কাউকে না পেয়ে আমার গলা থেকে চেইন ও কিছু টাকা নিয়ে পালায়।’
নিসান হাসান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘অভিযোগকারী নারী বাড়িতে মদ তৈরি করে বিক্রি করেন। আমরা এর প্রতিবাদ করেছিলাম। এই আক্রোশে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন।’
বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম সারোয়ার হোসেন বলেন, ভুক্তভোগী নারী থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।