প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

যশোরে এক নারীকে স্ত্রী দাবি করে হাতাহাতিতে জড়ানো সেই দুই পুরুষ জামিনে মুক্ত

যশোর শহরে এক নারীকে স্ত্রী দাবি করে হাতাহাতিতে জড়ানো সেই দুই পুরুষ জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ও দুপুরে তাঁরা যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান।

এদিকে কারাগারের ফটকে ওই নারীর ছেলে, ছেলের বউসহ স্বজনেরা দ্বিতীয় স্বামী দাবি করা ব্যক্তিকে মারপিট করার জন্য অবস্থান নেন। এতে সেখানে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরে কারারক্ষী ও পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

এর আগে গতকাল বুধবার কারাগারে আটক থাকা দুজনের জামিন মঞ্জুর করেন আদালত। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শান্তনু কুমার মণ্ডলের আদালতে শুনানি হয়। জামিনের কাগজ কারাগারে পৌঁছালে আজ সকালে একজন ও দুপুরে অন্যজনকে মুক্তি দেওয়া হয়।

গত মঙ্গলবার দুপুরে যশোর শহরের চার খাম্বার মোড়ে এক নারীকে স্ত্রী দাবি করে ওই দুজন হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। কোতোয়ালি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তিনজনকে হেফাজতে নেয়। পরে থানা চত্বরে আর এক দফা দুই পুরুষের মধ্যে হাতাহাতি হয়।

ওই নারী (৫০) ফরিদপুর সদর উপজেলার বাসিন্দা। তাঁকে স্ত্রী দাবি করা দুই পুরুষ ফরিদপুর সদরের একই গ্রামের বাসিন্দা। প্রথম স্বামীর বয়স (৫৩) ও দ্বিতীয় স্বামীর বয়স (৪৮)। কোতোয়ালি থানা-পুলিশ দুই পুরুষকে ১৫১ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে গতকাল বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়।

কারাগার সূত্রে জানা গেছে, দুজনই আজ কারাগার থেকে মুক্তি পাবেন, এমন খবর পেয়ে ওই নারীর ৩৫ বছর বয়সী ছেলে ও ছেলের বউ আগে থেকেই কারাগারের ফটকে অবস্থান নেন। দ্বিতীয় স্বামী দাবি করা ব্যক্তিকে তাঁরা মারপিট করার প্রস্তুতি নেন। বিষয়টি বুঝতে পেরে সকাল সাড়ে ১০টায় প্রথম স্বামীকে (৫৩) কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। এ সময় তাঁরা কারাগারের ফটকে উত্তেজনার সৃষ্টি করেন। তাঁরা দ্বিতীয় স্বামী দাবি করা ব্যক্তিকে মুক্তি দেওয়ার জন্য কারারক্ষীদের ওপর চাপ দিতে থাকেন। পরিস্থিতি উত্তেজনাকর দেখে কারা কর্তৃপক্ষ কোতোয়ালি থানার পুলিশ ডাকেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার পরে দুপুরের দিকে দ্বিতীয় স্বামীকে (৪৮) কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের কারাধ্যক্ষ শরিফুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘১৫১ ধারার মামলায় জামিনে আজ দুই ব্যক্তি মুক্তি পেয়েছেন। একজনের সন্তানেরা সকাল থেকে কারা ফটকে অবস্থান নেন অন্যজনকে মারপিট করার জন্য। তাঁরা ওই ব্যক্তিকে মুক্তি দেওয়ার জন্য কারারক্ষীদের ওপর চাপ সৃষ্টি করেন। সেখানে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে পুলিশ ডাকা হয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর দ্বিতীয় ব্যক্তিকে মুক্তি দেওয়া হয়। কারা ফটকে সাময়িক উত্তেজনা সৃষ্টি হলেও পরে স্বাভাবিক হয়।

পুলিশ ও ঘটনায় জড়িত তিনজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুই পুরুষের মধ্যে একজনের (৫৩) সঙ্গে প্রায় ৩৬ বছর সংসার করেছেন ওই নারী। ওই সংসারে তাঁদের দুই ছেলেমেয়ে আছে। কিন্তু সেই সংসার ছেড়ে আরেক পুরুষের (৪৮) সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন ওই নারী। পরে সেই পুরুষের সঙ্গে তিনি ভারতে চলে যান এবং সেখানে তাঁরা বিয়ে করেন। এরপর গত সোমবার রাতে তাঁরা যশোরে ফিরে একটি হোটেলে ওঠেন। খবর পেয়ে প্রথম স্বামী সেই হোটেলে যান। এরপরই সেখানে দুজনের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।