ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মাণের দাবিতে আন্দোলন করেন হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের শিক্ষার্থীরা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মাণের দাবিতে আন্দোলন করেন হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের  শিক্ষার্থীরা

কর্মচারীদের ফ্ল্যাটে ঢাবির মুহসীন হলের শিক্ষার্থীদের রাত্রিযাপন, দাবি নতুন ভবনের

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মাণের দাবিতে হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা কর্মচারীদের একটি ভবনে গতকাল শুক্রবার রাত্রিযাপন করেছেন।

গতকাল দিবাগত রাত দেড়টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেন আন্দোলনকারীরা। কিন্তু নতুন ভবন নির্মাণের আশ্বাস না পাওয়ায় কর্মচারীদের ভবনেই রাত্রিযাপনের সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা।

হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের প্রাধ্যক্ষ ড. সিরাজুল ইসলাম গতকাল রাতে জানান, ‘আমাদের শিক্ষার্থীরা এ ভূমিকম্পে অনেকটাই ভয়ে আছে। তারা যেহেতু হলে অবস্থান করতে ভয় পাচ্ছে, উপাচার্য স্যার আমাদের বলেছেন, আপাতত অন্যান্য হলে শিফট করে তাদের রাখার ব্যবস্থা করতে।’

হল পরীক্ষা–নিরীক্ষা করে সবকিছু ঠিক থাকলে শিক্ষার্থীদের আবার হলে ফিরে আসতে বলবেন বলে জানান প্রাধ্যক্ষ। ভয় পাচ্ছে বলে শিক্ষার্থীরা আপাতত কর্মচারীদের ভবনে থাকতে পারবেন বলে জানান প্রাধ্যক্ষ।

গতকাল শুক্রবার সকালে ভূমিকম্পের সময় আতঙ্কিত হয়ে হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের চারতলা ভবন থেকে লাফ দিয়ে তানজীর হোসেন নামের এক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছেন। এ ছাড়া এই হলের আরও দুজন শিক্ষার্থী ছাদ থেকে লাফ দিয়ে আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

গতকাল মুহসীন হল পুনর্নির্মাণের দাবিতে কর্মচারী ভবনের ফটক আটকে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে বেলা ২টার দিকে কর্মচারীদের ফ্ল্যাটে তালা দেন শিক্ষার্থীরা। সেখানে তাঁদের শান্ত করতে যান উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমদ।

তবে শিক্ষার্থীরা আশ্বাস না পাওয়ায় তাঁদের আন্দোলন চালিয়ে যান। পরে রাত ১১টার দিকে আবার প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে বসেন শিক্ষার্থীরা।

সকালে শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল সংলগ্ন ১০ তলা কর্মচারী ভবনে গিয়ে দেখা যায়, যেসব ফ্ল্যাটে কর্মচারীরা নেই, সেসব ফ্ল্যাটে শিক্ষার্থীরা অবস্থান করছেন। যেসব ফ্ল্যাটে কর্মচারীরা আগে থেকে ছিলেন, তাঁরা তাঁদের বাসায় অবস্থান করছেন।

মুহসীন হল ছাত্র সংসদের সমাজসেবা সম্পাদক এম সাইফুল্লাহ বলেন, ‘আমরা মৃত্যুপুরী মুহসীন হলে আর যাচ্ছি না। সিদ্ধান্ত একটাই আসতে হবে, সেটা হলো—আমাদের জন্য মুহসীন হল ব্যতীত অন্য কোনো নিরাপদ আবাসনের ব্যবস্থা করা। এই বাইরে কোনো মুলা ঝোলানো আশ্বাসে আমরা আমাদের অবস্থান থেকে সরে আসব না।’

গতকাল শুক্রবার  ভূমিকম্পে তিন জেলায় ১০ জনের মৃত্যু হয়, আহত হয় ছয় শতাধিক মানুষ। ঢাকার বহু ভবনে ফাটল ও হেলে পড়ার ঘটনার মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও কয়েকজন আহত হয়েছেন। গতকাল সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটের এ ভূমিকম্পের মাত্রা রিখটার স্কেলে ছিল ৫ দশমিক ৭। উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকার পাশে নরসিংদীর মাধবদীতে।