
চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাহসিন হোসাইন নামের এক রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় ল্যাবএইড হাসপাতালের পাঁচ চিকিৎসকসহ ছয়জন জামিন পেয়েছেন। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) রেজাউল করিম চৌধুরী আজ সোমবার এই আদেশ দেন।
প্রথম আলোকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী খন্দকার গোলাম কিবরিয়া (জুবায়ের)। জামিনপ্রাপ্ত ছয়জন হলেন ল্যাবএইডের চিকিৎসক মো. সাইফুল্লাহ, মাকসুদ, সাব্বির আহমেদ, মোশাররফ হোসেন এবং ল্যাবএইড ধানমন্ডি শাখার ব্যবস্থাপক মো. শাহজাহান।
বাদীপক্ষের আইনজীবী তানভীর আহমেদ বলেন, জামিন শুনানির একপর্যায়ে ঢাকার সিএমএম রেজাউল করিম চৌধুরী আদালতে উপস্থিত চিকিৎসকদের উদ্দেশে বলেন, আদালতের কোনো আদেশে সংক্ষুব্ধ হলে কেন চিকিৎসকেরা ধর্মঘটের মতো কর্মসূচি পালন করেন। ধর্মঘটের সময় হাসপাতালে আসা রোগীরা যে অবর্ণনীয় দুর্ভোগের মধ্যে পড়েন, সেই দায় তো চিকিৎসকদের। এই দায় কি চিকিৎসকেরা এড়াতে পারেন?
চিকিৎসকদের আইনজীবী খন্দকার গোলাম কিবরিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঢাকার সিএমএম স্যার চিকিৎসকদের উদ্দেশে আরও বলেন, কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নন। তাহলে কেন চিকিৎসকেরা ধর্মঘট করেন, কেন রোগীদের চিকিৎসা না দিয়ে চরম দুর্ভোগের মধ্যে ফেলেন?’
ভুল চিকিৎসায় তাহসিনের মৃত্যুর অভিযোগে গত ২৬ জুন ল্যাবএইড হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এ এম শামীমসহ সাতজনের বিরুদ্ধে আদালতে নালিশি মামলা করেন তাঁর বাবা মনির হোসেন। পরে আদালত মামলাটি এজাহার হিসেবে রেকর্ড করার জন্য ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, তাহসিন হোসাইন নামের একজন শিক্ষার্থী গত ২৭ মার্চ ল্যাবএইড হাসপাতালের চিকিৎসক সাইফুল্লাহকে দেখান। তিনি তাঁকে হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। ২৮ মার্চ ওই শিক্ষার্থীর মলদ্বারে অস্ত্রোপচার হয়। পরে তাঁর অবস্থার অবনতি হয়। এরপর ল্যাবএইডের অপর চিকিৎসক মাকসুদের শরণাপন্ন হন। গত ৬ এপ্রিল আবারও অস্ত্রোপচার হয়। কিন্তু তাহসিনের অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ল্যাবএইডের চিকিৎসক সাইফুল্লাহসহ অন্যদের অবহেলার কারণে ২৩ জুন তাহসিন মারা যান।
অবশ্য চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ অস্বীকার করেন ল্যাবএইডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এম শামীম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, তাহসিনকে সুস্থ করে তোলার জন্য ল্যাবএইডের চিকিৎসকেরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে গেছেন। চিকিৎসকদের কোনো ধরনের অবহেলা ছিল না।
বিষয়টি আইনিভাবে মোকাবিলা করা হবে বলে জানান এই চিকিৎসক।