শরীয়তপুরের জাজিরায় পদ্মা সেতু প্রকল্প রক্ষা বাঁধের ২০০ মিটার অংশ পদ্মা নদীতে বিলীন হয়েছে। ভাঙনে বিলীন হয়েছে আশপাশের ১৬টি দোকান ও ১২টি বসতবাড়ি। গতকাল সোমবার বিকেলে জাজিরার ওছিম উদ্দিন মাদবরকান্দি এলাকা থেকে তোলা
শরীয়তপুরের জাজিরায় পদ্মা সেতু প্রকল্প রক্ষা বাঁধের ২০০ মিটার অংশ পদ্মা নদীতে বিলীন হয়েছে। ভাঙনে বিলীন হয়েছে আশপাশের ১৬টি দোকান ও ১২টি বসতবাড়ি। গতকাল সোমবার বিকেলে জাজিরার ওছিম উদ্দিন মাদবরকান্দি এলাকা থেকে তোলা

পদ্মা ব্রহ্মপুত্র যমুনার পানি বাড়ছে

ভারী বৃষ্টির কারণে দেশের প্রধান নদ–নদীগুলোর পানি বাড়ছে। এই বৃষ্টির সঙ্গে আছে উজানের পানির প্রবাহ। বড় নদ–নদীগুলোর পানি বাড়লেও এখনো তা বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী দুই থেকে পাঁচ দিন এসব নদীর পানি বাড়তে পারে। তবে তাতে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টির আশঙ্কা নেই বলেই জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের সূত্র। তবে মুহুরী নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় ফেনীর নিম্নাঞ্চল সাময়িকভাবে প্লাবিত হতে পারে বলেও জানা গেছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, আজ ভোর ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ফেনীতে ২২২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এ সময় দেশে এটি সর্বোচ্চ বৃষ্টি। ফেনী ছাড়াও আজ উপকূলীয় জেলাগুলোতে ভারী বৃষ্টি হয়েছে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র আজ মঙ্গলবার দুপুরে দেশের নদীগুলোর অবস্থা নিয়ে প্রতিবেদন দিয়েছে। সেই প্রতিবেদন অনুযায়ী, ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামী তিন দিন তা অব্যাহত থাকতে পারে, তবে এরপর তা কমে আসতে পারে।

গঙ্গা ও পদ্মা নদীর পানি বাড়ছে। এই বৃদ্ধি আগামী পাঁচ দিন অব্যাহত থাকতে পারে। এ সময়ে নদীগুলো বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।

চট্টগ্রাম বিভাগের ফেনী, মুহুরী, হালদা, সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর পানি বাড়ছে। আগামী আরও এক দিন এসব নদীর পানি বাড়তে পারে, তবে দুই দিনের মধ্যে তা স্থিতিশীল অবস্থায় চলে আসতে পারে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান আজ প্রথম আলোকে বলেন, বড় নদ–নদীগুলোর পানি বাড়ছে। এর প্রধান কারণ দেশের মধ্যে ভারী বৃষ্টি। আগামী ২৪ ঘণ্টায় মুহুরী নদী ফেনী জেলায় সতর্কসীমায় (বিপৎসীমার কাছাকাছি) প্রবাহিত হতে পারে এবং নদীসংলগ্ন নিম্নাঞ্চল সাময়িকভাবে প্লাবিত হতে পারে। এই অববাহিকায় আগামী ২৪ ঘণ্টা ভারী থেকে অতি ভারী পরের দুই দিন মাঝারি থেকে মাঝারি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় বিশেষ করে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে ফেনীতে ৬ ঘণ্টায় ২২২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. হাফিজুর রহমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, উপকূলীয় জেলাগুলোতে বৃষ্টি বেড়েছে। সাগরে লঘুচাপের কারণেই এ অবস্থা। উপকূলের অন্য এলাকাগুলোর মধ্যে ভোলায় ৬৩, নোয়াখালীতে ৬২ এবং সাতক্ষীরায় ৫৬ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। আগামীকালও উপকূলে বৃষ্টি থাকতে পারে।

বরিশাল, খুলনা ও চট্টগ্রাম বিভাগের উপকূলীয় নদীগুলোতে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি উচ্চতার জোয়ার আছে বলে সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে। আরও একদিন এ অবস্থা থাকতে পারে।

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের নদ–নদীর পানি বাড়লেও উত্তর–পূর্বাঞ্চলের সুরমা নদীর পানি কমছে আর কুশিয়ারা নদীর পানি স্থিতিশীল অবস্থায় আছে।