
জ্বালানিসংকট প্রতিরোধে দেশীয় উৎস থেকে গ্যাস উৎপাদন বাড়াতে কাজ করছে বাংলাদেশ তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা)। তিন বছর ধরে ধীরে এগোচ্ছিল কূপ খননের কাজ। জ্বালানি বিভাগের নির্দেশনায় গত কয়েক মাসে কাজের গতি বাড়িয়েছে পেট্রোবাংলা। সংস্কার, উন্নয়ন ও অনুসন্ধান—এই তিন ধরনের ১১টি কূপে জানুয়ারিতে একসঙ্গে কাজ করবে ১১টি রিগ (খননযন্ত্র)।
আজ বুধবার পেট্রোবাংলা থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তি বলছে, আগামী জানুয়ারিতে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানির (বাপেক্স) ৫টি রিগ ও চুক্তিভিত্তিক ঠিকাদারদের ৬টি রিগ দিয়ে কূপের কাজ চলমান থাকবে। এ কাজ শেষে ১৪ কোটি ৩০ লাখ ঘনফুট গ্যাসের সংস্থান হতে পারে। এ ছাড়া বাপেক্সের জন্য নতুন করে দুটি রিগ কেনার কার্যক্রম চলমান।
সময়ের মধ্যে কূপের কাজ শেষ করতে দেশের বিভিন্ন গ্যাসক্ষেত্রে বর্তমানে খনন ও সংস্কার মিলে আটটি রিগ কাজ করছে। এর মধ্যে বাপেক্সের পাঁচটি ও বিদেশি ঠিকাদার কোম্পানির তিনটি। ২৭ নভেম্বর থেকে টার্ন-কি পদ্ধতিতে নিয়োজিত চুক্তিভিত্তিক ঠিকাদারের রিগ দ্বারা তিতাস-২৮ উন্নয়ন কূপ খনন কার্যক্রম শুরু হবে। এ ছাড়া জানুয়ারিতে বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ড কোম্পানি লিমিটেডের (বিজিএফসিএল) নিয়োজিত ঠিকাদারের ১টি রিগ দিয়ে তিতাস গ্যাসক্ষেত্রে অনুসন্ধান কূপ খননের চেষ্টা চলছে। ভোলায় ৫টি কূপ খনন করতে শিগগিরই ঠিকাদারের সঙ্গে চুক্তি করার কথা রয়েছে। এতে ভোলায় নতুন করে ১টি রিগ কাজে যুক্ত হবে।
চলতি (২০২৫-২৬) অর্থবছরের মধ্যে ৫০টি ও ২০২৬–২৮ সালের মধ্যে ১০০টি কূপ খনন ও সংস্কারের পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে পেট্রোবাংলা। পেট্রোবাংলা বলছে, দেশের বিভিন্ন ব্লকে অনুসন্ধান ও নতুন কূপ খনন কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। জামালপুরে গ্যাসের মজুতের পরিমাণ ও বিস্তৃতি মূল্যায়নের লক্ষ্যে আরও ২টি (১টি উন্নয়ন ও ১টি অনুসন্ধান) কূপ খননের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এখন উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) তৈরির কাজ চলছে। সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের (এসজিএফএল) অধীন হরিপুর গ্যাসক্ষেত্রে সিলেট-১০ কূপ খননের সময় ওই এলাকায় জ্বালানি তেলের উপস্থিতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া হরিপুরে মজুত করা জ্বালানি তেল বাণিজ্যিকভাবে উত্তোলন নিশ্চিত হওয়ার লক্ষ্যে সিলেট-১২ তেল কূপ খননের কার্যক্রম চলমান।
দেশের বৃহত্তম দ্বীপ ভোলায় গ্যাসের মজুত, বিস্তৃতি বুঝতে ১৯টি নতুন কূপ খননের কার্যক্রম চলমান। ভোলার গ্যাস জেলায় স্থাপিত শিল্পকারখানায় সরবরাহ করা হবে। এটি দেশের দক্ষিণাঞ্চলে কর্মস্থানসহ অর্থনৈতিক উন্নয়নে যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করবে। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন এলাকায় নতুন সম্ভাবনার খোঁজে বাপেক্স, বিজিএফসিএল ও এসজিএফএল থেকে ভূতাত্ত্বিক জরিপ পরিচালনা করে তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের কাজ চলছে। এর মধ্য দিয়ে কূপ খননের জন্য নতুন নতুন সম্ভাবনাময় এলাকা চিহ্নিত করা হচ্ছে।