মেয়ের খোঁজে স্কুলে এসেছেন এই মা ও স্বজনেরা। বের হওয়ার সময় স্বজনের হাতে ছিল পোড়া ব্যাগ। আজ বৃহস্পতিবার সকালে
মেয়ের খোঁজে স্কুলে এসেছেন এই মা ও স্বজনেরা। বের হওয়ার সময় স্বজনের হাতে ছিল পোড়া ব্যাগ। আজ বৃহস্পতিবার সকালে

তৃতীয় শ্রেণিতে পড়া মেয়ের খোঁজে মাইলস্টোন স্কুলে এসেছেন মা, বের হলেন পোড়া ব্যাগ হাতে

রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে নিখোঁজ মেয়েকে খুঁজতে এসেছেন একজন মা। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে মেয়েটির মাকে স্কুলের ভেতরে যেতে দেখা যায়।

মরিয়ম উম্মে আফিয়া নামের মেয়েটি স্কুলের তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ত। সে আকাশ শাখায় পড়ত। গত সোমবার যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর থেকে তার কোনো খোঁজ পাচ্ছে না পরিবার।

মেয়ের মা, মামা ও স্বজনেরা দুপুর ১২টার দিকে কলেজ প্রাঙ্গণ থেকে বেরিয়ে গেছেন। স্বজনদের একজনের হাতে পোড়া ব্যাগ ছিল।

মেয়ের খোঁজে স্কুলে এসেছেন এই মা ও স্বজনেরা। আজ বৃহস্পতিবার সকালে

মরিয়ম উম্মে আফিয়ার মামা সাব্বির জানান, তাঁদের বাসা চণ্ডালভোগ এলাকায়। মায়ের নাম তামিমা উম্মে। তিনি বলেন, ‘কথা বলার মতো অবস্থা আমাদের নেই। আমার বোন খুবই অসুস্থ। সবাই দোয়া করবেন।’

বেলা ১১টার দিকে স্কুলের ফটকে এসে কথা বলেন স্কুলের প্রশাসনিক কর্মকর্তা এস কে সোলায়মান। তিনি বলেন, পরিচয়পত্র দেখালে ও নিখোঁজ স্বজনের খোঁজ করলে তাঁদের ভেতরে যেতে দেওয়া হবে। স্কুলের ৫ নম্বর ভবনের নিচতলায় হেল্প ডেস্ক খোলা হয়েছে। সেখান থেকে তাঁদের তথ্য দেওয়া হবে। সেখানে কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থাও রয়েছে।

স্কুলের ফটক আজ সকালেও বন্ধ ছিল। সেখানে দেখা গেছে উৎসুক জনতার ভিড়। সেখানে অযথা ভিড় না করার অনুরোধ জানিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।

স্কুলের সামনে এভাবে কাঁদতে দেখা গেছে এক মেয়েকে। সে স্কুলের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। নিজে বেঁচে গেলেও সহপাঠীর ছোট বোন মারা গেছে

প্রশাসনিক কর্মকর্তা এস কে সোলায়মান আরও বলেন, মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের উত্তরা শাখার কার্যক্রম কবে চালু হবে, সে ব্যাপারে আজ বা আগামীকাল শুক্রবারের মধ্যে জানাবে স্কুল কর্তৃপক্ষ।

উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান ফটক আজ বৃহস্পতিবার সকালে বন্ধ ছিল। বাইরে ছিল উৎসুক মানুষের ভিড়

গত সোমবার বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর থেকেই মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে দিনভর উৎসুক মানুষের ভিড় লেগে রয়েছে। গতকাল বুধবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। গতকাল ও আজ কমবেশি সবাই মুঠোফোনে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের ছবি তুলেছেন, ভিডিও করেছেন। উৎসুক লোকজনকে স্কুলের ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। গণমাধ্যমকর্মীদের জন্যও স্কুলে প্রবেশের ক্ষেত্রে ছিল অলিখিত নিষেধাজ্ঞা। শুধু শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কর্মকর্তাদের ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়।

ভেতর থেকে স্কুলের একটি বাস বের হয়ে আসতে দেখা গেছে

যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় গতকাল সন্ধ্যা সোয়া সাতটা পর্যন্ত ২৯ জনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং। যদিও আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পক্ষ থেকে গত মঙ্গলবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৩১ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়েছিল। এরপর ওই দিন রাতে বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও একজন মারা যান। যে কারণে গণমাধ্যমে নিহত মানুষের সংখ্যা ৩২ উল্লেখ করা হয়েছিল। এর বেশির ভাগই শিশু।