বেঁধে দেওয়া ২৪ ঘণ্টা পার হলেও শহীদ শরিফ ওসমান হাদির পুরো খুনি চক্রকে অতি দ্রুত বিচারের মুখোমুখি করাসহ দুই দফা দাবির এক দফাও মানা হয়নি বলে উল্লেখ করেছে ইনকিলাব মঞ্চ। এর পরিপ্রেক্ষিতে মঞ্চের পরবর্তী কর্মসূচি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়েছে।
আগামীকাল সোমবার দুপুর ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে ইনকিলাব মঞ্চের সংবাদ সম্মেলন হবে। আজ রোববার রাত নয়টার দিকে ইনকিলাব মঞ্চের ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এ কথা জানানো হয়েছে।
এর আগে আজ বিকেলে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলনে অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২ ও দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অগ্রগতি জানানো হয়। সেখানে হাদি হত্যা নিয়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ ও তথ্য তুলে ধরা হয়। সাধারণত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এ ধরনের সংবাদ সম্মেলন করে থাকেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। তবে আজকের সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্রসচিব নাসিমুল গনি—দুজনের কেউই উপস্থিত ছিলেন না। কথা বলেন পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (অপরাধ ও অপস) খন্দকার রফিকুল ইসলামসহ কয়েকজন কর্মকর্তা।
ওই সংবাদ সম্মেলনের পর রাতে ইনকিলাব মঞ্চের ফেসবুক পেজে বলা হয়, ১০ লক্ষাধিক মানুষের উপস্থিতি ও উচ্চকিত সম্মতিতে ঘোষিত ইনকিলাব মঞ্চের দুই দফা দাবির এক দফাও মানা হয়নি। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও বিশেষ সহকারী (খোদা বখস) সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থেকে ব্যাখ্যা দেননি। সিভিল-মিলিটারি গোয়েন্দা সংস্থার ওপর প্রধান উপদেষ্টার পূর্ণ কর্তৃত্ব স্থাপনপূর্বক সেসব সংস্থা থেকে হাসিনার চরদের গ্রেপ্তার করা হয়নি।
অতিরিক্ত আইজিপিকে দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করিয়ে শহীদ ওসমান হাদিকে হত্যার ঘটনাকে ‘তুচ্ছ ও অগুরুত্বপূর্ণ’ দেখানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে ইনকিলাব মঞ্চ। এর পরিপ্রেক্ষিতে আগামী কর্মসূচি ও দাবি নিয়ে আগামীকাল দুপুর ১২টায় মধুর ক্যানটিনে সংবাদ সম্মেলন আহ্বান করা হয়েছে বলে ফেসবুক পোস্টে উল্লেখ করেছে তারা।
গতকাল শনিবার ইনকিলাব মঞ্চের পক্ষ থেকে দুই দফা দাবি জানানো হয়। প্রথম দাবি, শরিফ ওসমান হাদির খুনি, খুনের পরিকল্পনাকারী, খুনের সহায়তাকারী, পলায়নে সহযোগী, আশ্রয়দাতাসহ পুরো খুনি চক্রকে অতি দ্রুত বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। ১২ ডিসেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত বিচারের জন্য কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, সরকারের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়) খোদা বখস চৌধুরীকে জাতির সামনে ব্যাখ্যা দিতে হবে। রোববারের সংবাদ সম্মেলনে যথোপযুক্ত ব্যাখ্যা দিতে ব্যর্থ হলে দায় নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও সহকারী উপদেষ্টা উভয়কে পদত্যাগ করতে হবে।
তাদের দ্বিতীয় দাবি হলো সিভিল–মিলিটারি ইন্টেলিজেন্সের (সামরিক–বেসামরিক গোয়েন্দা সংস্থা) মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা ফ্যাসিস্টের দোসরদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার ও বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।