বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ ও বিডি রানার্স যৌথভাবে ‘রোকেয়া রান’ কর্মসূচি পালন করে
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ ও বিডি রানার্স যৌথভাবে ‘রোকেয়া রান’ কর্মসূচি পালন করে

নারীর প্রতি সহিংসতার প্রতিবাদে ‘রোকেয়া রান’ অনুষ্ঠিত

নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতার প্রতিবাদে দৌড় কর্মসূচি ‘রোকেয়া রান’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শনিবার সকাল ৭টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে শাহবাগ পর্যন্ত এই দৌড় কর্মসূচি পালিত হয়। ২৫ নভেম্বর শুরু হওয়া আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ ও বিডি রানার্স যৌথভাবে এ কর্মসূচি পালন করে। এই ‘রোকেয়া রান’ নারীদের সব জড়তা, ক্লান্তি ও আড়ষ্টতা কাটিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে প্রত্যাশা আয়োজকদের। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। তিনি বলেন, ‘বেগম রোকেয়ার “জাগো ভগিনীরা জাগো” আহ্বানে উজ্জীবিত থেকে নারী-পুরুষের জন্য সমতাপূর্ণ সমাজ গড়ে তুলতে কাজ করে যাব।’

ফওজিয়া মোসলেম বলেন, ‘রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের লড়াইয়ের কেন্দ্রে ছিল প্রথা ভাঙার লড়াই। কিন্তু আজ আবার নারীদের নানা ঘেরাটোপে আটকানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। রোকেয়ার সম্বন্ধে কটূক্তি করার স্পর্ধা দেখানো হচ্ছে। যারা দেখাচ্ছে, তাদের সেই স্পর্ধার সামনে দাঁড়িয়ে আমরা জোর গলায় বলতে চাই, প্রথা ভাঙার লড়াইকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য আজকের এই রোকেয়া রান বিশেষ অবদান রাখবে।’

দৌড় শেষে বক্তব্য দেন মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু। তিনি বলেন, ‘বেগম রোকেয়া নারীমুক্তির যে মন্ত্র আমাদের শুনিয়েছিলেন, সেই মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে আমরা ছুটে চলেছি, ছুটে যাব সমাজের সব জায়গায়। সব জায়গায় নারীরা সমান মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত হবে। এই আকাঙ্ক্ষা পূরণের পথে সমাজের যা কিছু বাধা আমাদের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করছে, সে সব বাধাকে পেছনে ফেলে আমরা অবিরাম ছুটছি, ছুটব!’

বাংলাদেশের প্রথম আয়রনম্যান ও বিডি রানার্সের অ্যাকটিভিস্ট মোহাম্মদ শামছুজ্জামান আরাফাত বলেন, ‘সমতাপূর্ণ সমাজ গড়তে রোকেয়ার চিন্তাভাবনা ছিল দূরদর্শিতাসম্পন্ন, যা আজকের দিনেও আমরা ভাবতে পারি না। পুরুষের এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে নারীদের যে অনুপ্রেরণা থাকে, তা আমাদের বার্তা দেয় যে সবাইকে একসঙ্গে অগ্রসর হতে হবে।’

আয়রনম্যান, পর্বতারোহী ও বিডি রানার্সের আরেক অ্যাকটিভিস্ট ইমতিয়াজ এলাহী বলেন, এটি কেবল একটি দৌড়ের ইভেন্ট নয়, এটি নারী মুক্তিকামীদের সামনে এগিয়ে চলার শক্তিকে আহ্বান জানায়। এ সময় নারীদের এই এগিয়ে চলার যাত্রাকে অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান তিনি।

উদ্বোধনী বক্তব্য শেষে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন মহিলা পরিষদের অ্যাডভোকেসি ও নেটওয়ার্কিং পরিচালক জনা গোস্বামী; লিগ্যাল অ্যাডভোকেসি ও লবি পরিচালক দীপ্তি শিকদার; প্রশিক্ষণ ও গবেষণা পরিচালক শাহাজাদী শামীমা আফজালী শম্পা এবং প্রোগ্রাম অফিসার (কাউন্সেলিং) সাবিকুন নাহার।

উদ্বোধনী বক্তব্য শেষে দৌড়ের নিয়মনীতি ও পথ সম্পর্কে জানান মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সিউতি সবুর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রানার্স কমিউনিটির সদস্য মিঠুন ও পাপ্পু। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মহিলা পরিষদের লিগ্যাল অ্যাডভোকেসি ও লবি পরিচালক অ্যাডভোকেট দীপ্তি শিকদার। কর্মসূচিতে প্রায় ২০০ জন অংশ নেন।