
ভূমিকম্পের তীব্র ঝাঁকুনিতে শুক্রবার সকালে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশ কেঁপে ওঠে। এতে শিশুসহ ১০ জন নিহত ও ছয় শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। সবচেয়ে বেশি—পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে নরসিংদীতে। ঢাকায় চার ও নারায়ণগঞ্জে একজন মারা যান। ভূমিকম্পের সময় আতঙ্কে অনেকেই ভবন থেকে লাফিয়ে পড়েন। এ ছাড়া কিছু ভবন হেলে পড়ে ও ফাটল দেখা দেয়।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন ঢাকায় স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র রাফিউল ইসলাম (২০), ব্যবসায়ী আবদুর রহিম (৪৮), তাঁর ছেলে আবদুল আজিজ ওরফে রিমন (১২) এবং নিরাপত্তাকর্মী মাকসুদ (৫০)। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে নিহত হয় ১০ মাস বয়সী ফাতেমা; নরসিংদীতে শিশু ওমর ফারুক (১০), তার বাবা দেলোয়ার হোসেন (৪০), ফোরকান মিয়া (৩৫) এবং বৃদ্ধ কাজম আলী (৭৫) ও নাসির উদ্দীন (৬৫)।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৭।
পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, ভূমিকম্পের সময় পুরান ঢাকার কসাইটুলীতে একটি পাঁচতলা ভবনের ছাদের রেলিং ধসে পড়ে তিন পথচারী রাফিউল ইসলাম, আবদুর রহিম ও তাঁর ছেলে আবদুল আজিজ আহত হন। তাঁদের মিটফোর্ড হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
বংশালের কসাইটুলীর ওই ভবনে থাকেন সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থী মো. রাওনাক। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ভূমিকম্পের সময় পুরো ভবনটি দুলছিল। ওপর থেকে কিছু পড়ার শব্দ শুনে তিনি নিচে গিয়ে দেখেন, গলিতে শিশুসহ কয়েকজন পড়ে আছে। স্থানীয় লোকজন তাঁদের দ্রুত রিকশা ও ভ্যানে হাসপাতালে নিয়ে যান।
সরেজমিনে দেখা যায়, কসাইটুলীর ২২/সি কেপিগোজ স্ট্রিট গলিতে রক্ত জমে আছে। পাঁচতলা ভবনের ভেঙে পড়া রেলিং সরানোর কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস। সেখানে পলেস্তারা পড়ে আছে। ফায়ার সার্ভিস ঢাকা সদর জোন ১-এর জোন কমান্ডার এনামুল হক বলেন, ভবনের ভেতরে কেউ আটকে আছে কি না, তাঁরা তা খোঁজ করছেন।
স্বজনেরা জানান, রাফিউল ইসলাম সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষে পড়তেন। মা ও বোনের সঙ্গে কসাইটুলীতে ভাড়া বাসায় থাকতেন। বাবা ওসমান গনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ। গ্রামের বাড়ি বগুড়া সদরের গোহাইলে। ভূমিকম্পের সময় মাসহ তিনি ভবনটির নিচের দোকানে মাংস কিনছিলেন। ভবনের রেলিং ধসে রাফিউল ও তাঁর মা নুসরাত আক্তার আহত হন। রাফিউলের মাথায় আঘাত লাগে। তাঁর মা আহত হয়ে মিটফোর্ড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
রাফিউলের বোন আতিয়া ওয়াসিমা রাইদা প্রথম আলোকে বলেন, একজন পুলিশ সদস্য তাঁকে ফোন করে ঘটনা জানান। এরপর তিনি দ্রুত হাসপাতালে গিয়ে দেখেন, একমাত্র ভাই রাফিউল আর নেই। মায়ের অবস্থা গুরুতর।
নিহত আবদুর রহিমের গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রকোনায়। তাঁর ছোট ছেলে আবদুল আজিজ রিমনও এ ঘটনায় মারা গেছে। রহিম পরিবার নিয়ে পুরান ঢাকার সুরিটোলা স্কুলের পেছনে ভাড়া বাসায় থাকতেন। ফেব্রিকসের ব্যবসা রয়েছে তাঁর। তিনি তিন ছেলে ও এক মেয়ের বাবা। স্বজনেরা জানান, ছোট ছেলেকে নিয়ে তিনি মাংস কিনতে বেরিয়েছিলেন।
ঢাকায় নিহত অপর ব্যক্তি মাকসুদ মুগদার মদিনাবাগে একটি নির্মাণাধীন ভবনের নিরাপত্তাকর্মী। ভবনটির রেলিং খুলে পড়ে তিনি মারা যান।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল সূত্রগুলো জানায়, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্পে ছয় শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। তাঁদের ঢাকা ও ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪৪ জন, সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২০, জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) ৯৯, গাজীপুরের তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৯০, শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৫৫, গাজীপুরের টঙ্গীর শহীদ আহসানউল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে ৮৫ জন, নরসিংদী জেলা হাসপাতালে ৪৫, নরসিংদীর ১০০ শয্যার হাসপাতালে ১০ জন ও কুমিল্লার দুটি হাসপাতালে ৮০ জনকে চিকিৎসা দেওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক মঈনুল আহসান (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) প্রথম আলোকে বলেন, আহত ব্যক্তিদের অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে লাফিয়ে পড়েছেন। তাঁদের চিকিৎসায় জরুরি চিকিৎসক দল কাজ করছে। সরকার আহত ব্যক্তিদের সব ধরনের ওষুধ দেওয়ার চেষ্টা করছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের চারতলা ভবন থেকে লাফ দিয়ে তানজীর হোসেন নামের এক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছেন। এই হলের আরও দুজন শিক্ষার্থী ছাদ থেকে লাফ দিয়ে আহত হন বলে জানা গেছে।
এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের এক শিক্ষার্থী লাফ দিয়ে পড়ে আহত হয়েছেন। তাঁর পা ভেঙে গেছে। কবি জসীমউদ্দীন হল, সূর্য সেন হল, ফজলুল হক মুসলিম হল ও ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ হলের কয়েকজন শিক্ষার্থীও লাফিয়ে বা দৌড়ে নামতে গিয়ে আহত হয়েছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুহসীন হলসহ কয়েকটি ভবনের পলেস্তারা খসে পড়েছে। মুহসীন হলের শিক্ষার্থী হেলাল উদ্দিন ফেসবুকে ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে লিখেছেন, তিনি শুয়ে ছিলেন। ভূমিকম্প এত সময় ধরে হওয়ায় তাঁর হাত-পা কাজ করছিল না। দিশাহারা হয়ে ছাদে চলে যান। কয়েকজনকে তিন ও চারতলা থেকে লাফিয়ে পড়তে দেখেছেন, আহত হতে দেখেছেন। কয়েকজনকে অ্যাম্বুলেন্সে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী কারীব চৌধুরী ফেসবুকে লিখেছেন, বড় ধরনের কোনো ট্র্যাজেডি না হলে এই প্রশাসনের টনক নড়বে না। প্রাণের বিনিময় ছাড়া কোনো উদ্যোগ তারা নেয় না। শিক্ষার্থীদের ভাঙা বিল্ডিংয়ে রেখে তারা নতুন বিল্ডিংয়ে আরামে ঘুমায়। তারপর জগন্নাথ হল ট্র্যাজেডির মতো শিক্ষার্থীদের জীবন যাবে। আর তারা শিক্ষকদের নিয়ে একটা শোক দিবস পালন করবে।
ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক এস এম ফরহাদ ফেসবুকে লিখেছেন, ভূমিকম্পে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি হলের কিছু ভবনে পলেস্তারা খসে পড়েছে। দুটি হলে দেয়ালের ইট ভেঙে কিছু কিছু টুকরা অংশ ভেঙে পড়েছে। এসব জীর্ণ দেয়ালের অবস্থা দেখে শিক্ষার্থীরা ভীত হয়ে কেউ কেউ লাফ দিয়ে বা দ্রুত বের হতে গিয়ে আহত হয়েছেন। এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্যমতে, পাঁচজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। ছাত্রী হলে কিছু বোনেরা সেন্সলেসও হয়েছেন।
ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্পে হতাহতসহ ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভূমিকম্পের সময় খিলগাঁওয়ে নির্মাণাধীন একটি ভবন থেকে পাশের দোতলা একটি ভবনে একটি ইট পড়ে একজন আহত হন।
বারিধারা এফ ব্লকের ৫ নম্বর রোডের একটি বাড়িতে আগুন লাগে। খবর পেয়ে বারিধারা ফায়ার স্টেশনের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে যায়। আগুন নেভাতে কাজ শুরু করে। তবে ভূমিকম্পের জন্য আগুন লেগেছে কি না, তা নিশ্চিত নয় ফায়ার সার্ভিস।
পুরান ঢাকার স্বামীবাগে আটতলার একটি ভবন অন্য একটি ভবনে হেলে পড়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় ফায়ার সার্ভিস।
ঢাকার জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন দপ্তর ভূমিকম্পে রাজধানীতে ১৪টি ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের তালিকা করেছে। ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের তালিকায় মালিবাগ চৌধুরীপাড়া, আরমানিটোলা, স্বামীবাগ, বনানী, কলাবাগান, বসুন্ধরা, নদ্দা, দক্ষিণ বনশ্রী, মোহাম্মদপুর, খিলগাঁও, বাড্ডা, খিলগাঁওয়ের সিপাহীবাগ, মগবাজারের মধুবাগ ও হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকার একটি করে ভবন রয়েছে।
রূপগঞ্জের গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের ইসলামবাগ ৫ নম্বর ক্যানেল এলাকায় একটি বাড়ির সীমানাদেয়াল ধসে ফাতেমা নামের ১০ মাস বয়সী এক শিশু মারা যায়। শিশুটির মা কুলসুম বেগমও আহত হন। তাঁর স্বামী আবদুল হক চাকরির সুবাদে ঢাকায় থাকেন। এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে কুলসুম থাকেন ইসলামবাগে।
ভূমিকম্পে নরসিংদী সদরের চিনিশপুর ইউনিয়নের গাবতলী এলাকার একটি বহুতল ভবনের ছাদ থেকে নির্মাণসামগ্রী ছিটকে পড়ে একতলা ভবনে। এতে একতলা ছাদের কিছু অংশ ধসে ওই বাড়ির বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেন ও তাঁর দুই সন্তান তাসফিয়া ও ওমর ফারুক আহত হয়। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বাবা-ছেলে মারা যান। নরসিংদীর পলাশ উপজেলার চরসিন্দুরের পশ্চিম পাড়ায় মাটির ঘরের দেয়াল ধসে কাজম আলী ভূঁইয়া মারা যান।
নরসিংদীর পলাশের ডাঙ্গা ইউনিয়নের কাজীরচরের নয়াপাড়ায় ভূমিকম্পের সময় হৃদ্যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান নাসির উদ্দীন।
গাজীপুরের শ্রীপুরে কারখানার বহুতল ভবন থেকে দ্রুত নামতে গিয়ে অন্তত ১৫৫ জন শ্রমিক আহত হন। তাঁদের গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ভূমিকম্পে ভবন দুলতে শুরু করলে ঘরবাড়ি, অফিস, শিল্পকারখানা, দোকানপাট থেকে মানুষ তাড়াহুড়া করে বের হতে থাকেন। কুমিল্লার রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে একটি পোশাক কারখানার নারী শ্রমিকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় হুড়োহুড়ি করে বের হতে গিয়ে অন্তত ৮০ জন শ্রমিক আহত হয়ে দুটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
ভূমিকম্পে চট্টগ্রাম নগরের মনসুরাবাদ এলাকায় ছয়তলা একটি ভবন হেলে পড়েছে। এর আগে ভূমিকম্পে ভবনটি কিছুটা হেলে পড়েছিল। ভবনটিকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভূমিকম্পের সময় নবনির্মিত শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ হলের নবম তলার মেঝে ফেটে গেছে। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হলের ছয়তলার বি-ব্লকের ওয়াশরুমে ও সাততলার ফ্লোরে ফাটল দেখা গেছে। নবনির্মিত ফজিলাতুন্নেছা হলেও ফাটল সৃষ্টি হয়েছে।
শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ হল ছাত্র সংসদের সহসভাপতি (ভিপি) সিফাতউল্লাহ বলেন, ‘নতুন হলগুলো নির্মাণের পর থেকেই বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ ছিল। বৃষ্টি হলেই রুমে পানি ঢুকে যায়, ঝড় হলে টাইলস খুলে পড়ে। আজ (গতকাল) আবার ভূমিকম্পে ফাটল ধরেছে। পুরোনো হলে এমন সমস্যা না থাকলেও নতুন হলে ফাটল ধরেছে। আমরা ধারণা করছি, নির্মাণকাজে অনিয়ম-দুর্নীতির ফলেই এমন হয়েছে।’
কাজী নজরুল ইসলাম হল সংসদের ভিপি রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হলের কাজ শেষ হওয়ার দেড় বছর পার না হতেই বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম দৃশ্যমান। ভূমিকম্পে ক্যাম্পাসের পুরোনো হলগুলোতে সমস্যা না হলেও নতুন হলে সমস্যা হয়েছে। প্রকল্প অফিসের সীমাহীন দুর্নীতি এবং প্রশাসনের সদিচ্ছার অভাবে এগুলো যে হয়েছে, সেটি বলার অপেক্ষা রাখে না। বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটার আগেই যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।’
শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক লুৎফুল এলাহী বলেন, ‘হলের ৯ তলার ফ্লোরে প্লাস্টারে ফাটল ধরেছে। হয়তো নির্মাণকাজে যেসব সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে, সেগুলো মানসম্মত ছিল না। ফাটলের ভিডিও প্রভোস্ট কমিটির গ্রুপে পাঠিয়েছি।’
ভূমিকম্পে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরেবাংলা ফজলুল হক হলের দেয়ালে নতুন করে ফাটল দেখা দিয়েছে। এ ঘটনার পর শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়। পরে নিরাপত্তা চেয়ে ও হল পরিবর্তনের দাবিতে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।
বেলা ১১টার দিকে হলের প্রধান ফটকে জড়ো হয়ে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে তাঁরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন। সেখানে সহ-উপাচার্য অধ্যাপক মাঈন উদ্দীন ও প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং হলটি পরিদর্শন করেন। এ সময় রাকসুর ভিপি মোস্তাকুর রহমান, এজিএস এস এম সালমান সাব্বিরসহ ছাত্র সংসদের বেশ কয়েকজন প্রতিনিধিও হল পরিদর্শনে যান।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, আবাসিক হলটি অনেক পুরোনো। বিভিন্ন জায়গায় ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ছিল। গতকালের ভূমিকম্পের পর হলের পশ্চিম ব্লকের একাংশ হেলে পড়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে আমলাতান্ত্রিক জটিলতার অজুহাত দেখাচ্ছে। তাঁরা দ্রুত অন্য হলে পুনর্বাসনের দাবি জানান।