বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ

সংরক্ষিত নারী আসন বিলুপ্তির সুপারিশের প্রতিবাদ বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের

জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন বিলুপ্তি চেয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের করা সুপারিশের প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে সংগঠনটি বলেছে, সংরক্ষিত নারী আসন বিলুপ্তির এই সুপারিশ সংবিধানের মূলনীতির পরিপন্থী। নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নবিরোধী এই সুপারিশ দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছে।

বিবৃতিতে মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম ও সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন বিলুপ্তির সুপারিশ জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি-২০১১, জাতিসংঘের ঘোষণা করা নারীর প্রতি সব ধরনের বৈষম্য বিলোপ সনদ (সিডও) এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

বিবৃতিতে বলা হয়, কোনো যৌক্তিক কারণ ছাড়াই নারী আন্দোলনের দীর্ঘ পাঁচ দশকের সুপারিশ, অন্তর্বর্তী সরকারের নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন, নির্বাচনবিষয়ক সংস্কার কমিশন, সংবিধানবিষয়ক সংস্কার কমিশন এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সুপারিশ উপেক্ষা করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এই সুপারিশের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ মনে করে, সংসদে কমপক্ষে এক-তৃতীয়াংশ নির্বাচিত নারী সদস্যের উপস্থিতি নারীদের স্বার্থ ও মানবাধিকার রক্ষায় ভূমিকা রাখবে। বিবৃতিতে বলা হয়, এ কথা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত যে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় কমপক্ষে ৩৩ শতাংশ নারীর উপস্থিতি নিশ্চিত করতে পারলে নারীর ক্ষমতায়নের পথ প্রশস্ত হয়। নারীর ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে এটি একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ, যা এ দেশের জন্য এখনো প্রাসঙ্গিক।

বিবৃতিতে সংরক্ষিত নারী আসনের পক্ষে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ ছয়টি দাবি তুলে ধরা হয়েছে। সেগুলো হলো সংসদের সাধারণ আসনে নারী ও পুরুষ—উভয়ই নির্বাচন করতে পারবে; সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন থাকবে; সংরক্ষিত নারী আসনসংখ্যা ন্যূনতম এক-তৃতীয়াংশে উন্নীত করতে হবে; সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়ন প্রথা বাতিল করতে হবে; একটি সুনির্দিষ্ট নির্বাচনী এলাকা থেকে সংরক্ষিত নারী আসনে জনগণের সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে; এই ব্যবস্থা জাতীয় নির্বাচনের দুই থেকে তিন মেয়াদের জন্য থাকবে।