বিদ্যুতের জন্য ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে আওয়ামী লীগ সরকারের চুক্তিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) ‘পাশ কাটিয়ে’ শুল্ক ও কর অব্যাহতির মাধ্যমে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা ফাঁকির অভিযোগ অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
এর অংশ হিসেবে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিউবো) চেয়ারম্যানের কাছে গুরুত্বপূর্ণ রেকর্ডপত্র ও তথ্যাদি চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে কমিশন।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, আদানি গ্রুপের বিদ্যুৎ আমদানিতে ৪০ কোটি মার্কিন ডলার শুল্ক ফাঁকির অনুসন্ধানে যাঁদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাবে, সবার বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে দুদক।
দুদকের চিঠিতে বলা হয়, সাবেক বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সচিব আহমেদ কায়কাউস ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এনবিআরকে পাশ কাটিয়ে আদানির সঙ্গে চুক্তি করে সরকারের সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা শুল্ক ফাঁকির অভিযোগে অনুসন্ধান চলছে।
সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে চিঠি পাওয়ার পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে রেকর্ডপত্র সরবরাহের অনুরোধ জানানো হয়েছে। চিঠিতে বিষয়টিকে ‘অতীব জরুরি’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
২০১৭ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে বিদ্যুৎ আমদানির চুক্তি করে। আদানির কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার। ৮০০ মেগাওয়াট সক্ষমতার দুটি ইউনিট আছে এ কেন্দ্রে। এতে উৎপাদিত বিদ্যুৎ ২৫ বছর ধরে কিনবে বাংলাদেশ। প্রথম ইউনিট থেকে বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয় ২০২৩ সালের এপ্রিলে। দ্বিতীয় ইউনিট থেকে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয় একই বছরের জুনে। এই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের মোট বিদ্যুতের চাহিদার ১০ শতাংশ পূরণ হচ্ছে। তবে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহৃত কয়লার উচ্চ মূল্যের কারণে চুক্তি নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। আদানির সঙ্গে পিডিবির চুক্তি পর্যালোচনায় অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত একটি কমিটি কাজ করছে।