গত বছরের ৭ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি শুরু হয়। সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীদের এই কর্মসূচির কারণে স্থবির হয়ে পড়ে রাজধানী শহর। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় মহাসড়ক অবরোধ করা হয়।
কেন্দ্রীয় কর্মসূচি ছিল শাহবাগে, শুধু ঢাকাতেই আটটি স্থানে সড়ক অবরোধ করা হয়। শাহবাগ থেকে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ গিয়ে পাশের ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের মোড় দখল করে কারওয়ান বাজারের কাছাকাছি যায়।
‘বাংলা ব্লকেডের’ প্রথম দিনে গোটা রাজধানী কার্যত অচল হয়ে পড়ে। আন্দোলনের এক দফা দাবি সুনির্দিষ্ট করেন সমন্বয়কেরা। সেটি ছিল সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লিখিত অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য কোটাকে ন্যূনতম মাত্রায় এনে সংসদে আইন পাস করা।
শাহবাগে সোয়া চার ঘণ্টা সড়ক অবরোধের পর সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম পরদিন ৮ জুলাই বেলা তিনটা থেকে আবারও একই কর্মসূচি ঘোষণা করেন। দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে ছাত্রধর্মঘট কর্মসূচি অব্যাহত রাখার পাশাপাশি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে অবরোধ কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়। নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আজ (৭ জুলাই) আমরা শাহবাগ থেকে কারওয়ান বাজার পর্যন্ত গিয়েছি। কাল ফার্মগেট পার হয়ে যাব।’
শাহবাগে ‘বাংলা ব্লকেডে’ ছাত্রীদের উল্লেখযোগ্য অংশগ্রহণ ছিল। তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি সুফিয়া কামাল হলে ছাত্রীদের সংগঠিত করেছেন উমামা ফাতেমা। আন্দোলনের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘৭ জুলাই আমরা মেয়েরা হল থেকে মিছিল নিয়ে শাহবাগে গিয়েছিলাম। সারা দিন মিছিল–স্লোগান হয়। ব্লকেডে আগের রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি সুফিয়া কামাল হলে মেয়েরা একসঙ্গে প্ল্যাকার্ড লেখা, প্রস্তুতি নেওয়া—সব মিলিয়ে একটা সিস্টারহুড ছিল। কেউ ব্যানার আনত, কেউ পতাকাগুলো স্টোর করে রাখত, কেউ মাইক স্টোর করে রাখত। অর্থাৎ, সবাই সম্মিলিতভাবে কাজ করত। এটা খুবই ইতিবাচক একটা বিষয়। এখন আগের সেই বিষয়টা নেই।’