হাসনাত কাইয়ূম গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম নেতা ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক। সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী বেশ কয়েক বছর ধরে রাষ্ট্র ও সংবিধান সংস্কার নিয়ে কথা বলার পাশাপাশি রাজনীতির মাঠেও সক্রিয়। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছরের অভিজ্ঞতা নিয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রাজীব হাসান
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের মুখে স্বৈরশাসকের পতন হলো। এক বছর পেরিয়ে এলাম। এই অভ্যুত্থান থেকে আমরা কী পেলাম?
হাসনাত কাইয়ূম: এই গণ–অভ্যুত্থানের সবচেয়ে বড় অর্জন স্বৈরশাসকের পলায়ন। এটা হওয়ার আগপর্যন্ত মানুষকে ভয়ের মধ্যে বন্দী করে বিশ্বাস করানোর চেষ্টা করা হচ্ছিল যে হাসিনার পতন অসম্ভব, তিনি অবিকল্প। মানুষ প্রমাণ করেছেন তাঁদের ঐক্যের সামনে পৃথিবীর কোনো কামান–বন্দুকই দাঁড়াতে পারে না। মানুষ তাঁদের সম্মিলিত শক্তির ওপর আস্থা ও সাহস ফেরত পেয়েছেন। আরেকটা বড় অর্জন—রাজনীতির মধ্যে মানুষের নিজেদের এজেন্ডার অন্তর্ভুক্তি। প্রথমবারের মতো দেশে পুলিশ, নির্বাচন, সংসদ, বিচারব্যবস্থা, মৌলিক অধিকার, প্রশাসন, শিক্ষা, চিকিৎসা—রাষ্ট্রের প্রায় সব প্রতিষ্ঠানের পরিবর্তন নিয়ে রাজনীতিবিদদের আলাপ করতে হচ্ছে। আরেকটি অর্জন হলো আন্দোলনকে শেষ মুহূর্তে অতি সংকীর্ণ শুধুই সরকারবদলের এক দফায় সীমাবদ্ধ করার চক্রান্তকে পরাস্ত করা। তখন এর বদলে সরকার ও শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনের দাবি জারি রাখতে পারার বিষয়টিও একটি অর্জন।
এই পরিবর্তন নিয়ে এখন কথা হচ্ছে। এক দশকের বেশি সময় ধরে আপনিও রাষ্ট্র সংস্কারের কথা বলে আসছেন। ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করছে। ঐকমত্য কমিশন নিয়ে আপনার পর্যালোচনা কী?
হাসনাত কাইয়ূম: ঐকমত্য কমিশনের একটি মৌলিক দুর্বলতা হলো জনগণের মতামতকে রাজনৈতিক দলের কতিপয়ের মতামতের সমার্থক ধরার কারণে পর্যালোচনার পরিসর অতি সীমাবদ্ধ করে ফেলা। প্রকৃতপক্ষে জনগণের একটি বড় অংশ, যারা এবারের পরিবর্তনের নিয়ামক শক্তি, যাদের অংশগ্রহণ ছাড়া এই পরিবর্তন সম্ভব হতো না, তাদের এই আলোচনার বাইরে ফেলে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ন্যূনতম যে ঐকমত্য অর্জন করা সম্ভব হবে, তা কোন পদ্ধতিতে বাস্তবায়িত হবে, সেটি নিয়ে কোনো আলোচনা এখনো শুরুই হয়নি। এখন পর্যন্ত সরকার এবং প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনা থেকে আমরা এমন ইঙ্গিতই পাচ্ছি যে এসব পরিবর্তন সংবিধানের সংশোধনী আকারে বাস্তবায়িত হবে। তা–ই যদি হয়, তাহলে অর্জন হবে খুব সামান্য, আর সে অর্জনের স্থায়িত্বের কোনো নিশ্চয়তা থাকবে না। দীর্ঘমেয়াদে জনগণের মতামত আবারও উপেক্ষিত হতে পারে।
এই অভ্যুত্থানে শ্রমিক–শিক্ষার্থীসহ বাংলাদেশের প্রায় সব রাজনৈতিক দলের নেতা–কর্মী ও সর্বস্তরের নাগরিকেরা অংশ নিয়েছেন। অভ্যুত্থানের পরে সে ঐক্য এত দ্রুত ভেঙে পড়ল কেন?
হাসনাত কাইয়ূম: আমাদের এই ভূখণ্ডের ইতিহাস বলে, এখানকার মানুষ যেকোনো শাসকের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালে বিজয়ী হতে পারে; কিন্তু বিজয়ের ফল কীভাবে জনগণের স্বার্থে কাজে লাগাতে হয় তা জানে না।
বিজয় বেহাত হওয়ার প্রধান কারণ ঐক্য ধরে রাখতে না পারা। বলা ভালো, বরাবরই ঐক্য ভেঙে দেওয়া হয় এবং তা অতি অবশ্যই বিজয়ের পরে ক্ষমতা দখলকারীদের কোনো না কোনো অংশ থেকে। ১৯৭১, ১৯৯১ এবং ২০২৪ বেহাত হওয়ার ধরন পর্যালোচনা করলে একই রকম লক্ষণ পাওয়া যাবে। ঐক্য ভেঙে দেওয়ার বিভিন্ন কায়দা থাকতে পারে, তবে এর একটা সাধারণ বৈশিষ্ট্য হলো জনগণের বদলে আন্দোলনের ওপর ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর মালিকানা প্রতিষ্ঠা করা। এ ছাড়া যেকোনো পরিবর্তনের পরিস্থিতিতে প্রধানত দুটি ধারা সক্রিয় হয়—একটি অতি আবেগময় ধারা, যারা মুহূর্তের মধ্যেই সব সমস্যার সমাধান চায়। আরেকটি রক্ষণশীল ধারা—যারা ইনিয়েবিনিয়ে পূর্বাবস্থাকে ফেরত আনতে চায়। এই দুই ধারাকে যথাযথভাবে মোকাবিলা করে বাস্তবানুগ দায়িত্বশীল পরিবর্তনকামী রাজনীতিকে এগিয়ে নেওয়ার মতো অভিজ্ঞতার ঘাটতিও একটি কারণ বলতে পারেন। এ আলাপের জন্য বিস্তৃত পরিসর দরকার। এ বিষয়ে বিস্তারিত আলাপ জরুরিও।
গণ–অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্র সংস্কারের বিষয়টি সামনে এসেছে। গ্রাফিতিগুলোর মধ্যেও আমরা জন–আকাঙ্ক্ষার প্রকাশ দেখেছি। গত এক বছরে সরকার থেকে রাজনৈতিক দলগুলো মধ্যে সেই আকাঙ্ক্ষার কেমন প্রতিফলন দেখেন?
হাসনাত কাইয়ূম: কিছুটা প্রতিফলন তো আছেই; কিন্তু এত ত্যাগের পর যে রকম প্রকাশ ও প্রচেষ্টা থাকলে মানুষ আশ্বস্ত বোধ করতেন. ততটা নেই। সমস্যা হলো, মুখে যাঁরা সংস্কারের পক্ষে বলছেন, তাঁরাও সংস্কারের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ রাজনীতি না করে কার্যত সংস্কারের বিপরীত তৎপরতায় লিপ্ত। আপনি যদি এই পরিবর্তনকে গণ-অভ্যুত্থান বলে মেনে নেন এবং আপনি যদি সংস্কার চান, তাহলে আপনাকে অনেকের অংশীদারত্ব মেনে নিতে হবে, তাদের সঙ্গে সমঝোতার পথে হাঁটতে হবে। কিন্তু এখানে সমঝোতার বদলে দুটি পরস্পরবিরোধী ধারা ক্রমে পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বী, এমনকি ক্ষেত্রবিশেষে একে অপরের শত্রুপক্ষ হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে। সরকারও নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়ে দূরত্ব হ্রাস করার বদলে বরং পক্ষপাতমূলক আচরণের মাধ্যমে এই দূরত্ব বাড়িয়ে তুলছে। ফলে রাষ্ট্র সংস্কারের আলাপ ক্রমশ প্রাসঙ্গিকতা হারাতে বসেছে।
অথচ এই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন জরুরি ছিল। এখন এটা বেহাত হওয়ার পরিণতি সামনে আপনি কী দেখছেন?
হাসনাত কাইয়ূম: এটা শুধু জরুরিই ছিল না, এটাই ছিল সরকারের দায়িত্ব পাওয়ার ম্যান্ডেট। সরকারের কাছে সবাই মিলে শুধু ক্ষমতাই তুলে দেয়নি, ভবিষ্যতে যাতে নতুন করে কেউ স্বৈরাচার হয়ে উঠতে না পারে, তার জন্য সংবিধানের স্বৈরতান্ত্রিক ক্ষমতাকাঠামো সংস্কার করার দায়িত্বও তুলে দিয়েছিল। কিন্তু তারা এই কাজে যথাযথ গুরুত্ব না দিয়ে ম্যান্ডেটের বাইরের অনেক কাজে হাত দিয়ে নিজেদের বিতর্কিত করেছে। আখেরে তা দেশ ও মানুষের জন্য ক্ষতিকর হয়েছে। এ অবস্থার অবসান করা না গেলে, রাজনৈতিক দলগুলোকে দায়িত্বশীল ভূমিকায় ফেরাতে না পারলে দেশবাসীকে দীর্ঘমেয়াদে চরম মূল্য দিতে হতে পারে বলে আশঙ্কা করার সংগত কারণ আছে।
অনেকে বলেন, রাজনৈতিক ঐক্যের বাইরেও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে নানা সংস্কারের সুযোগ ছিল। স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোতে তেমন কোনো পরিবর্তন আসেনি…
হাসনাত কাইয়ূম: এটাকে আমি এ দেশের মানুষের দুর্ভাগ্য ছাড়া আর কিছু দিয়ে ব্যাখ্যা করতে পারি না। অভ্যুত্থানের পর পুলিশের ভেতর থেকেই পুলিশ সংস্কারের দাবি উঠেছিল। যাঁরা দাবি করেছিলেন, তাঁরা নিগৃহীত হয়েছেন। আর সরকারের তরফ থেকে পুলিশের মনোবল ফেরত আনার নামে পুলিশের পুরোনো ব্যবস্থাপনা ফেরত আনা হচ্ছে। শিক্ষা, কর্মসংস্থান আর স্বাস্থ্যের কথা নাই–বা বলি।
বর্তমান রাজনৈতিক দলগুলো কি সেই রাষ্ট্র সংস্কারের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পেরেছে? নাকি তারা পুরোনো ধাঁচেই চলছে? কোনো পরিবর্তন দেখেন? বাংলাদেশের রাজনৈতিক সমাজ, রাজনৈতিক দল নিয়ে কী বলবেন?
হাসনাত কাইয়ূম: এর আগের প্রশ্ন হলো, তারা কি রাষ্ট্র সংস্কারের রাজনীতির আলাদা কোনো বৈশিষ্ট্যকে চিহ্নিত করেছে বা করতে চেয়েছে? তাদের অধিকাংশ রাষ্ট্র সংস্কার বলতে সংবিধানের সংশোধন বুঝেছেন; কিন্তু সংবিধান সংশোধন (অ্যামেন্ডমেন্ট) আর সংবিধান সংস্কারের (রিফর্ম) ধারণার মধ্যে পার্থক্য কোথায়, সেটি তারা বুঝতে চায়নি। রাষ্ট্রের সংস্কারের ধারণার পেছনের যে ঐতিহাসিক পর্যালোচনা, ঔপনিবেশিক ক্ষমতাকাঠামোর সঙ্গে বাহাত্তরের সংবিধানের ক্ষমতাকাঠামোর যে সাযুজ্য, মার্ক্সীয় বা ইসলামি বিপ্লবের ধারণা এখানে কার্যকর না হওয়ার কারণ বিশ্লেষণ, প্রচলিত নির্বাচনব্যবস্থার মধ্যে ক্ষমতা বদলের রাজনীতির যে অসারত্ব এবং প্রচলিত পদ্ধতিতে সংবিধান সংশোধন যে টেকসই হয় না বা হবে না, এসব বিষয়ে যতটুকু লেখালেখি হয়েছে, তার কিছুই এরা বিবেচনায় না নিয়ে ‘রাষ্ট্র সংস্কার’ শব্দবন্ধটিকে নতুন বিষয় হিসেবে তাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতির অংশ করে জনগণকে বোকা বানানোর কাজে ব্যবহার করছে। যেহেতু তারা রাষ্ট্র সংস্কারকে একটি নতুন রাজনীতি হিসেবে গ্রহণ করার জন্য নিজেদের প্রস্তুত করেনি, তাই মুখস্থ পুরোনো রাজনীতিকেই নতুন রাজনীতি হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে; কিন্তু কথিত নতুন রাজনীতির মধ্যে যে নতুন কিছু নেই, এক বছরের মধ্যেই তা টের পেয়ে যাওয়ায় মানুষ হতাশা বোধ করছেন। আমি বিশ্বাস করি, মানুষ খুব দ্রুতই প্রকৃত নতুন রাজনীতিকে আবিষ্কার করবেন এবং নতুন ধরনের সংগঠন গড়ে তুলবেন।
মব, চরিত্রহনন, নারীর অমর্যাদা, মাজার ভাঙাসহ নানা প্রবণতা গত এক বছরে লক্ষণীয় হয়ে উঠছে।
হাসনাত কাইয়ূম: এর সবই একই রোগের নানামুখী বহিঃপ্রকাশ। সমাজে যখন কোনো বড় ধরনের আলোড়ন তৈরি হয় এবং যখন কোনো একক মতবাদ বা চিন্তা এ ঘটনার ওপর নিরঙ্কুশ প্রভাব বিস্তার করতে ব্যর্থ হয়, তখন সমাজের নানা শক্তি এর নানা ধরনের ব্যাখ্যা ও করণীয় হাজির করে। এবারের গণ–অভ্যুত্থানকে কেউ কেউ অভ্যুত্থান, আবার কেউ কেউ বিপ্লব বলে আখ্যায়িত করেছেন। আমাদের সমাজের বিপ্লবী রূপান্তরের জন্য কাজ করে এমন দুই ধারার মধ্যে একটি ছিল মার্ক্সবাদী বিপ্লবীধারা, আরেকটি ধর্মীয় বিপ্লবীধারা। লক্ষণীয় বিষয় হলো এবারের অভ্যুত্থানে মার্ক্সবাদী বিপ্লবীধারা প্রায় অদৃশ্য, বিপরীতে দোর্দণ্ড প্রতাপে জায়গা দখল করেছে চরম ডানপন্থী ধারা। স্বাভাবিকভাবেই এদের একটি অংশ মনে করছে, এই অভ্যুত্থান বিপ্লবে রূপ নিতে পারত; কিন্তু ‘সাংবিধানিক প্রতিবিপ্লবীরা’ একে রুখে দিয়েছেন। তাই তাঁদের দায়িত্ব হলো সমাজে বিপ্লবী উত্তেজনা জিইয়ে রাখা। সে জন্য তাঁরা কখনো নারী, কখনো মাজার, কখনো–বা মব আকারে প্রতিপক্ষের ওপরে, অঞ্চলের বিরুদ্ধে, ব্যক্তি বা দলের বিরুদ্ধে এমন সব কর্মকাণ্ড করে যাচ্ছেন, যাতে সমাজে অস্থিরতা এবং দলগুলোর মধ্যে স্পষ্ট মেরুকরণ ত্বরান্বিত হয়। সরকারের ভেতরের কারও কারও প্রচ্ছন্ন মদদে কেউ কেউ তাত্ত্বিকভাবে, আবার কেউ রাজনীতির মাঠে এসব উসকানি এবং উত্তেজনা ছাড়ানোর কাজে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন। আশার কথা হলো, রাজনৈতিক দলগুলোর অনেকে না চাইলেও মানুষ তার স্বাভাবিক কাণ্ডজ্ঞান দিয়ে সংস্কারের রাজনীতিকে গ্রহণ করে নিয়েছে। ফলে এসব উত্তেজনা ছড়ানোর উদ্যোগ এ পর্যন্ত তেমন কোনো গ্রহণযোগ্যতা পায়নি।
এরই মধ্যে ঢালাও গ্রেপ্তার বা আসামি করা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। মামলা–বাণিজ্যের অভিযোগ শোনা যাচ্ছে। এতে বিচারের ন্যায্যতা কতটা প্রতিষ্ঠিত হবে।
হাসনাত কাইয়ূম: সুষ্ঠু বিচার করার মতো তথ্য–উপাত্ত এবং সাক্ষ্য–প্রমাণের কোনো ঘাটতি নেই। কিন্তু এসবের যথাযথ প্রয়োগের জন্য যে নিরপেক্ষতা ও বিচারিক দক্ষতা দরকার, তার ঘাটতি আছে বলে মনে হচ্ছে। কোনো প্রশ্ন যাতে না ওঠে, সেদিকে নজর রাখা দরকার। বিচার হলেই শাস্তি নিশ্চিত। অতএব শাস্তির চেয়ে বিচারিক নিরপেক্ষতার দিকে বেশি নজর দেওয়া উচিত মনে করি।
নির্বাচন ঘিরে সামনে কী দেখেন?
হাসনাত কাইয়ূম: খুব ভালো নির্বাচন আশা করা কঠিন। তবে এখনকার পরিস্থিতিতে প্রত্যাশা করি, ঘোষিত সময়ের মধ্যেই নির্বাচন হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারেরও এক বছর পার হচ্ছে। আপনার মূল্যায়ন কী?
হাসনাত কাইয়ূম: এত বেশি সমর্থন নিয়ে, এত দুর্বল পারফরম্যান্স! এককথায় আশাব্যঞ্জক নয়।
শেখ হাসিনার স্বৈরতান্ত্রিক শাসনামলে প্রচলিত রাজনৈতিক দলগুলোর আন্দোলনের বাইরে কোটা সংস্কার আন্দোলন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলন এবং সর্বশেষ জুলাই অভ্যুত্থানে তরুণদের বড় ধরনের অংশগ্রহণ ছিল। সামনের বাংলাদেশের রাজনীতিকে কীভাবে দেখছেন?
হাসনাত কাইয়ূম: এ আন্দোলনগুলোর কোনো কোনোটার সঙ্গে আমাদের গভীর সম্পর্ক ছিল। আমরা অনেকটা ভেতর থেকেই এ সময়ের তরুণদের বোঝার চেষ্টা করেছি। সেসব অন্য কোথাও বিস্তারিত বলা যাবে। এখানে শুধু এটুকু বলে শেষ করি যে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতির গতিমুখ এবং পথ–পদ্ধতি আবু সাঈদদের জীবনদানের সঙ্গে সঙ্গে নির্ধারিত হয়ে গেছে। আশা করি, ক্ষমতাকাঠামো সংস্কারের মাধ্যমে একটি জবাবদিহিমূলক, মানবিক ও জনরাষ্ট্র গড়ে তোলার রাজনীতি ধীরে ধীরে গভীর, বিস্তৃত ও পরিপুষ্ট হতে থাকবে।