Thank you for trying Sticky AMP!!

লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের নির্দেশনায় ঢাকার ইউনিভার্সাল কলেজেই হবে ইউওএল ডিগ্রি

রাজধানীর গুলশান-১-এ অবস্থিত এসএ টাওয়ারে ইউনিভার্সাল কলেজ বাংলাদেশ (ইউসিবি) ক্যাম্পাসে বৃহস্পতিবার লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের (এলএসই) একাডেমিক নির্দেশনায় ব্যাচেলর ডিগ্রি প্রদান কার্যক্রমের উদ্বোধন হয়

বাংলাদেশে বিশ্বমানের শিক্ষাদানের উদ্দেশ্যে ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের (ইউওএল) অংশীদার হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় অনুমোদিত দেশের প্রথম আন্তর্জাতিক শিক্ষা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ইউনিভার্সাল কলেজ বাংলাদেশ (ইউসিবি)। এই অংশীদারত্বের মাধ্যমে সমাজবিজ্ঞানে বিশ্বব্যাপী তৃতীয় র‍্যাঙ্কিংয়ে থাকা লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের (এলএসই) একাডেমিক নির্দেশনা অনুযায়ী, বেশ কিছু বিষয়ে ব্যাচেলর ডিগ্রি প্রদান করা হবে। এলএসইর অ্যালামনাই ও সম্পৃক্তদের মধ্যে ১৮ জন নোবেলজয়ী এবং ৩৭ জন সাবেক ও বর্তমান রাষ্ট্রপ্রধান রয়েছেন। কিউএস গ্লোবাল ইউনিভার্সিটি র‍্যাঙ্কিং অনুযায়ী বিশ্বখ্যাত এই প্রতিষ্ঠানের এমপ্লয়িবিলিটি স্কোর ১০০–তে ৯৯ দশমিক ৯।  

লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের শতভাগ পাঠ্যক্রম ও পরীক্ষার মাধ্যমে ইউসিবির প্রদত্ত ডিগ্রিগুলোর মধ্যে রয়েছে বিএসসি বিজনেস অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট, বিএসসি ফাইন্যান্স এবং বিএসসি অ্যাকাউন্টিং ও ফাইন্যান্স। টিউশন ফিতে সাশ্রয় ছাড়াও মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য থাকছে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত স্কলারশিপের সুযোগ। পাশাপাশি এ ডিগ্রি অর্জনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বিশ্বের ২০০ দেশে এক লাখের বেশি ইউওএল অ্যালামনাইয়ের এলিট গ্লোবাল কমিউনিটির অংশ হওয়ার সুযোগ পাবেন।

এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) রাজধানীর গুলশান-১-এ অবস্থিত এসএ টাওয়ারে ইউসিবি ক্যাম্পাসে একটি উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার রবার্ট ডিকসন, লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকস এক্সটেনডেড এডুকেশনের ডিন অধ্যাপক উইম এ ভেন দার স্টুসহ আরও অনেকে।

ঢাকার ইউসিবি ক্যাম্পাসে লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের (এলএসই) একাডেমিক নির্দেশনায় ব্যাচেলর ডিগ্রি প্রদান কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসটিএস গ্রুপের চেয়ারম্যান বব কুন্দানমাল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহযোগিতার কারণেই দেশে বসে আন্তর্জাতিক শিক্ষাগ্রহণের নতুন যুগের সূচনা করতে পেরেছে এসটিএস গ্রুপ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দূরদৃষ্টি এবং অনুমোদনের কারণেই এখন দেশে বসে বিদেশের শিক্ষাগ্রহণ অর্জন করা সম্ভব হবে, যা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করার পাশাপাশি ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশের উচ্চ আয়ের রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার যে জাতীয় লক্ষ্য, তার অংশ হিসেবে উচ্চ প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।’

বব কুন্দানমাল এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) পাশাপাশি শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ও শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীকে ধন্যবাদ জানান। উচ্চশিক্ষার কৌশলগত পরিকল্পনা ২০১৮-২০৩০ বাস্তবায়নের জন্য এ ধন্যবাদ জানান তিনি। কৌশলগত এ পরিকল্পনায় প্রতিবছর দেশের স্কুল থেকে পাস করা ১০ লাখ শিক্ষার্থীর জন্য সুযোগ তৈরির পাশাপাশি বিশ্বমানের শিক্ষা সাশ্রয়ে প্রাপ্তির রূপরেখা প্রণয়ন করা হয়। এ ছাড়া এ পরিকল্পনার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে বিশ্বমানের এ শিক্ষার সঙ্গে মেয়েশিশুদের যুক্ত করা, যে বিষয়টি নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি অনেক দিন ধরে কাজ করে যাচ্ছেন। সাড়ে ১৬ কোটি জনসংখ্যার এ দেশে পুরুষের চেয়ে নারীর সংখ্যা বেশি। বাংলাদেশে এ উদ্যোগ বাকি দেশগুলোর জন্য উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হবে।

ইউনিভার্সাল কলেজ বাংলাদেশ এসটিএস গ্রুপেরই একটি অংশ। বাংলাদেশে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ক্ষেত্রে এভারকেয়ার হাসপাতাল, ডিপিএস এসটিএস স্কুল ও ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ঢাকার (আইএসডি) মতো শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান এসটিএস গ্রুপের অধীনে পরিচালিত হয়। গ্রুপটি আরেকটি ইন্টারন্যাশনাল স্কুল চালু করা নিয়ে কাজ করেছে।  

ঢাকার ইউসিবি ক্যাম্পাসে লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের (এলএসই) একাডেমিক নির্দেশনায় ব্যাচেলর ডিগ্রি প্রদান কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী

বাংলাদেশে মোনাশ পাথওয়ে প্রোগ্রাম চালু করে এবং দেশের শিক্ষার্থীদের মোনাশের ডিগ্রি অর্জনের যাত্রা শুরু করার সুযোগ তৈরি করে গত বছরে ইতিহাস গড়ে ইউসিবি (টাইমস হায়ার এডুকেশন র‍্যাঙ্কিং অনুযায়ী, মোনাশ ইউনিভার্সিটির র‍্যাঙ্কিং ৪৪)। এ বছর লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের একাডেমিক নির্দেশনায় ডিগ্রি চালুর মাধ্যমে ইউসিবি দেশের শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ তৈরিতে এর উদ্যোগ গ্রহণের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখেছে।

দেশে বসেই এ আন্তর্জাতিক একাডেমিক প্রোগ্রামের উচ্চশিক্ষা নানা ধরনের সুযোগ তৈরি করে। বোস্টন কনসাল্টিং গ্রুপের সিনিয়র ব্যবস্থাপনা পরিচালক জারিফ মুনির তাঁর মূল বক্তব্যে বলেন, ‘বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের দেশের বাইরে পড়তে যাওয়া বাবদ বছরে সাড়ে চার বিলিয়ন মার্কিন ডলার সমপরিমাণ ব্যয় হয়। এমন প্রেক্ষাপটে এ ধরনের প্রোগ্রাম দেশের ডলার রিজার্ভে ভূমিকা রাখার সম্ভাবনা রয়েছে।’

অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, ‘চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এ ক্ষেত্রে মূল স্তম্ভ: সমতা, ইনস্টিটিউশন ও দক্ষ জনশক্তি আর এসব ক্ষেত্রে দ্রুত প্রবৃদ্ধিশীল বাংলাদেশকে বৈশ্বিকভাবে অনন্য উদাহরণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।’

অনুষ্ঠানে উপস্থিত অন্য বক্তাদের বক্তব্যেও এ বিষয়ের প্রতিফলন ঘটে। এলএসইর ডিন অব এক্সটেন্ডেড এডুকেশন অধ্যাপক উইম এ ভেন দার স্টু বলেন, ‘ইউনিভার্সাল কলেজ বাংলাদেশ এখন আমাদের বৈশ্বিক নেটওয়ার্কের অংশ। ইউসিবিতে এখন বিশ্বখ্যাত এলএসইর একাডেমিক নির্দেশনায় ডিগ্রি অর্জনের সুযোগ রয়েছে। এ ডিগ্রি অর্জনের যাত্রায় শিক্ষার্থীরা যা কিছু শিখবেন, তার সবকিছুই এলএসইর ফ্যাকাল্টিদের, যাঁরা একই সঙ্গে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় সমাজবিজ্ঞানী ও গবেষক, তত্ত্বাবধানে ডিজাইন করা হয়েছে। তাঁরাই এটা ডিজাইন করেছেন, নির্দেশনা দিয়েছেন এবং যাচাই-বাছাই করেছেন। যাতে করে শিক্ষার্থীরা তাঁদের বিষয়গুলো সম্পর্কে আরও গভীর জ্ঞান অর্জন করতে পারেন এবং ভবিষ্যতে চাকরির বাজারে নিজেদের এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন। বাংলাদেশে এ প্রোগ্রামগুলো নিয়ে আসার ক্ষেত্রে ইউসিবির সাথে কাজ করতে পেরে আমরা আনন্দিত।’