খাবার ফুরিয়ে এসেছে, দ্রুত দস্যুদের সঙ্গে সমঝোতার আশা
সোমালিয়ার উপকূলে জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজে খাবার কমে আসছে। এ কারণে জিম্মিদশার দুই সপ্তাহ পর তীর থেকে এমভি আবদুল্লাহ নামের জাহাজটিতে খাবার আনতে শুরু করেছে দস্যুরা। জাহাজটির মালিকপক্ষ ও নাবিকদের সংগঠন বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন সূত্র আজ বুধবার এমন খবর নিশ্চিত করেছে।
১২ মার্চ জলদস্যুরা জাহাজটি জিম্মি করার সময় নাবিকদের জন্য ২৫ দিনের খাবার ছিল। এরই মধ্যে জিম্মিদশার ১৬ দিন পার হয়েছে। এ সময় নাবিকদের পাশাপাশি দস্যুরাও জাহাজের খাবারে ভাগ বসিয়েছিল।
জাহাজের নাবিকদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে আসছে নাবিকদের সংগঠন বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনের সভাপতি ক্যাপ্টেন আনাম চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, দস্যুরা নিজেদের স্বার্থেই খাবার নিয়ে আসে। এমভি আবদুল্লাহ জাহাজেও তেহারিজাতীয় খাবার নিয়ে আসার খবর পেয়েছেন তাঁরা।
Also Read: সোমালিয়ার জলদস্যুদের সঙ্গে আলোচনা চলছে
এর আগে ২০১০ সালে জিম্মি করা এমভি জাহান মণি জাহাজেও খাবার ফুরিয়ে আসার পর দস্যুরা সরবরাহ করেছিল। প্রায় ১০০ দিনের মাথায় নাবিকসহ জাহাজটি মুক্ত হয়। সেই জাহাজে থাকা নাবিক মোহাম্মদ ইদ্রিস প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, জিম্মি করার পর একপর্যায়ে জাহাজের ফ্রিজ বন্ধ থাকায় হিমায়িত খাবার নষ্ট হয়ে যায়। জিম্মিদশার শেষ দিকে খাবার ফুরিয়ে যাওয়ার পর তীর থেকেই খাবার সরবরাহ করত দস্যুরা।
সাধারণত গন্তব্যে পৌঁছাতে যত দিন সময় লাগবে, তার চেয়ে একটু বেশি দিনের খাবার জাহাজে রাখা হয়। জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজটি মোজাম্বিক থেকে আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে ভারত মহাসাগরে জলদস্যুদের কবলে পড়ে। এই যাত্রাপথে সময় লাগত ১৫ দিন। এ হিসাবে জাহাজে খুব বেশি দিনের খাবার মজুত ছিল না।
জানতে চাইলে জাহাজের মালিকপক্ষ কবির গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, জিম্মি নাবিকেরা সুস্থ আছেন। জাহাজে নাবিকদের খাবার কমলেও দুশ্চিন্তার কিছু নেই। কারণ তীর থেকে দস্যুরা জাহাজে খাবার নিয়ে আসছে।
Also Read: জিম্মি জাহাজ এখন সোমালিয়ার উপকূলে
দ্রুত সমঝোতার আশা
জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ ও নাবিকদের ফিরিয়ে আনতে দস্যুদের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে বলে মালিকপক্ষ জানিয়েছে। দস্যুদের সঙ্গে দ্রুত সমঝোতায় পৌঁছানোর আশা করছে মালিকপক্ষ। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মিজানুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘দস্যুদের সঙ্গে দ্রুত সমঝোতা করে নাবিকদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আমাদের তৎপরতা চলছে।’
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জাহাজটি এখন গদভজিরান জেলার জেফল উপকূল থেকে দেড় নটিক্যাল মাইল দূরে নোঙর করে রেখেছে দস্যুরা। জাহাজটির অদূরে ২১ মার্চ একটি যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছিল ইউরোপীয় ইউনিয়নের নৌবাহিনী। আবার জিম্মি জাহাজ থেকে স্থলভাগে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করতে সোমালিয়ার পান্টল্যান্ড পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে বলে খবর দিয়েছিল বিবিসি সোমালি।
Also Read: যেভাবে জলদস্যুতায় নেমেছে সোমালিয়ার জেলেরা
জলে ও স্থলে দুই দিক থেকে চাপ বাড়তে থাকায় শুরুতে জলদস্যুরা নাবিকদের একটি কক্ষে নিয়ে রাখত। তবে জাহাজটির বাংলাদেশি মালিকপক্ষ কোনো সামরিক অভিযানের পক্ষে নয়, অর্থাৎ ইউরোপীয় ইউনিয়নের যুদ্ধজাহাজ কোনো অভিযান চালাবে না, এমন বিষয় নিশ্চিত হওয়ার পর এখন নাবিকদের কেবিনে থাকার সুযোগ দিচ্ছে দস্যুরা।
নাবিকদের সংগঠনের একজন নেতা প্রথম আলোকে জানান, সমঝোতা কখন হবে তা দস্যুদের ওপর নির্ভর করে। কারণ তারা তাদের দাবিতে অনড় থাকলে সমঝোতায় পৌঁছাতে দেরি হবে। তবে বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় দ্রুত সমঝোতা হতেও পারে।
আরও পড়ুন
-
প্রথম দুই ঘণ্টায় ৭–৮ শতাংশ ভোট পড়েছে, ইসির ধারণা
-
ইসরায়েলে বোমার চালান স্থগিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র
-
মাদারীপুরে কেন্দ্র দখলে গিয়ে দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ, ককটেল বিস্ফোরণ, আহত ১০
-
চীনের অনুদানে বার্ন ইউনিট পাচ্ছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
-
৪৬তম বিসিএসে ভুল প্রশ্নের জন্য কেউ বঞ্চিত হবেন না, বললেন পিএসসি চেয়ারম্যান