ঋণখেলাপি তালিকায় (ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো বা সিআইবি) নাম অন্তর্ভুক্তির কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে করা রিট খারিজ করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।
এ আবেদনের ওপর আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আগামীকাল সোমবার শুনানি হবে বলে জানিয়েছেন মান্নার আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব ও ইসলামী ব্যাংকের আইনজীবী এম আবদুল কাইয়ূম।
আফাকু কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেডের অংশীদার মাহমুদুর রহমান মান্না। এই কোল্ড স্টোরেজের নামে ইসলামী ব্যাংক বগুড়া শাখা থেকে নেওয়া ঋণ ঘিরে সিআইবি প্রতিবেদনে নিজের নাম অন্তর্ভুক্তির কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে মাহমুদুর রহমান হাইকোর্টে রিট করেন। ঋণখেলাপি হলে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ থাকে না।
শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট ২৪ ডিসেম্বর রিটটি খারিজ করে আদেশ দেন। হাইকোর্টের এ আদেশ স্থগিতের পাশাপাশি সিআইবি প্রতিবেদনে নাম অন্তর্ভুক্তির কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেন মাহমুদুর রহমান মান্না। আবেদনটি আজ রোববার আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে ওঠে। শুনানি নিয়ে চেম্বার বিচারপতি মো. রেজাউল হক বিষয়টি স্ট্যান্ডওভার (মুলতুবি) রাখেন।
আদালতে মান্নার পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব ও আহসানুল করিম এবং আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া শুনানিতে ছিলেন। ইসলামী ব্যাংকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম আবদুল কাইয়ূম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. জহিরুল ইসলাম সুমন।
সিআইবি তালিকায় থাকা মাহমুদুর রহমান মান্নার নাম স্থগিত চেয়ে আবেদনটি করা হয়েছে বলে জানান তাঁর আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, আফাকু কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেডের ৫০ শতাংশ শেয়ার মাহমুদুর রহমান মান্নার। এই কোল্ড স্টোরেজের নামে ইসলামী ব্যাংক বগুড়া শাখা থেকে ঋণ নেওয়া হয়েছিল। ইসলামী ব্যাংকের পাওনার পরিমাণ ৩৬ কোটি টাকা। মাহমুদুর রহমানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক ঋণ পুনঃ তফসিল করতে ইসলামী ব্যাংককে নির্দেশনা দেয়। ঋণ পুনঃ তফসিল করে ইসলামী ব্যাংক। ঋণ পুনঃ তফসিল সত্ত্বেও তাঁর নাম সিআইবিতে রয়ে গেছে, যা চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে।
জ্যেষ্ঠ এই আইনজীবী আরও বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের ঋণসহায়তা কার্যক্রম–সংক্রান্ত বিধি অনুসারে ২ শতাংশ হারে জমা দিতে হয়। ২ শতাংশ হারে ৭২ লাখ টাকা হয়, মাহমুদুর রহমান মান্না ইতিমধ্যে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা জমা দিয়েছেন। বাকি টাকাও উনি দিতে চান, কয়েক কিস্তিতে দিয়ে দেবেন। বাংলাদেশ ব্যাংক ঋণ পুনঃ তফসিলের জন্য ইসলামী ব্যাংককে আদেশ দিয়েছেন। অর্থাৎ মান্নার আবেদন মঞ্জুর করেছেন। এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য আদালতে আবেদনটি করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব।
ডাকসুর দুবারের ভিপি, আওয়ামী লীগের একসময়ের নেতা মাহমুদুর রহমান বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ) আসনে প্রার্থী হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এর আগে একাধিকবার তিনি প্রার্থী হলেও কখনো সংসদে যাওয়া হয়নি তাঁর। এবার বিএনপির সমর্থন পেয়েছেন তিনি। ২৪ ডিসেম্বর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, মিত্রদলের নেতা হিসেবে মাহমুদুর রহমান মান্নাকে বগুড়া-২ আসনটি ছেড়ে দেওয়া হবে।