হাইকোর্ট ভবন
হাইকোর্ট ভবন

জীবন রক্ষাকারী ওষুধের মূল্য নির্ধারণ করবে সরকার

জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় জীবন রক্ষাকারী ওষুধের মূল্য সরকার নির্ধারণ করবে বলে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। রায়ে আদালত বলেছেন, যথাযথ কর্তৃপক্ষ ওই মূল্য নির্ধারণ করে তা গেজেট আকারে প্রকাশ করবে।

সাত বছর আগে করা একটি রিটের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার এ রায় দেন।

সংবিধানের ১১২ অনুচ্ছেদ অনুসারে হাইকোর্ট ওই রায় দিয়েছেন বলে জানান রিট আবেদনকারীর পক্ষের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, জীবন রক্ষাকারী সব ওষুধের মূল্য সরকার নির্ধারণ করবে এবং তা গেজেট আকারে প্রকাশ করতে নির্দেশনা দিয়ে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। ফলে জনগণের মৌলিক অধিকার তথা বেঁচে থাকার অধিকার নিশ্চিত হবে। পাশাপাশি ইচ্ছামাফিক ওষুধের মূল্যবৃদ্ধির সুযোগও বন্ধ হবে।

রিট আবেদনকারী পক্ষের তথ্য অনুসারে, আইনের বিধান অনুসারে ১৯৯৩ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ৭৩৯টি ওষুধের দাম নির্ধারণ করে গেজেট প্রকাশ করে সরকার। পরে সীমিত করে ১১৭টি ওষুধের দাম নির্ধারণের ক্ষমতা রেখে ১৯৯৪ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি সার্কুলার ইস্যু করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এই সার্কুলারের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে ২০১৮ সালে হাইকোর্টে রিট করা হয়। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০১৮ সালের ৩১ জুলাই হাইকোর্ট রুল দেন। চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে রুল নিষ্পত্তি করে রায় দেন হাইকোর্ট।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ, তাঁকে সহায়তা করেন আইনজীবী সঞ্জয় মন্ডল। ওষুধ প্রস্তুত মালিক সমিতির পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সৈয়দ ইজাজ কবির।

রায়ের পর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সৈয়দ ইজাজ কবির প্রথম আলোকে বলেন, অতীতেও সরকার জীবন রক্ষাকারী ও অত্যাবশকীয় ওষুধের মূল্য নির্ধারণ করত। ২০২৩ সালে ওষুধ ও কসমেটিকস আইন প্রণয়ন করা হয়। আইনের ৩০ ধারায় বলা আছে, ওষুধ ও ওষুধের কাঁচামালের মূল্য নির্ধারণ করবে সরকার এবং গেজেট আকারে প্রকাশ করবে। এই আইন অনুসারে জীবন রক্ষাকারী ও অত্যাবশ্যকীয় ওষুধ নির্ণয় এবং এসবের মূল্য নির্ধারণ করবে সরকার। এ জন্য একটি টাস্কফোর্সও গঠন করা হয়েছে।