সংবাদকর্মী আত্মহত্যায় প্ররোচনা ও যৌন হয়রানির বিচার দাবিতে মানববন্ধন করেছে সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি। আজ রোববার বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে
সংবাদকর্মী আত্মহত্যায় প্ররোচনা ও যৌন হয়রানির বিচার দাবিতে মানববন্ধন করেছে সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি। আজ রোববার বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে

নারী সংবাদকর্মীর আত্মহত্যার ঘটনায় প্ররোচনা ও যৌন হয়রানির বিচার দাবি

ঢাকা স্ট্রিমের সংবাদকর্মী স্বর্ণময়ী বিশ্বাসের আত্মহত্যার ঘটনায় প্ররোচনা ও যৌন হয়রানির বিচার দাবিতে মানববন্ধন করেছে সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি। এ ঘটনায় ঢাকা স্ট্রিমের বাংলা কনটেন্ট এডিটর আলতাফ শাহনেওয়াজের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে তাঁর বিচার দাবি করা হয় মানববন্ধনে।

আজ রোববার বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।

১৯ অক্টোবর রাজধানীর একটি বাসা থেকে স্বর্ণময়ী বিশ্বাসের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই নারী অনলাইন সংবাদমাধ্যম ঢাকা স্ট্রিমে গ্রাফিক ডিজাইনার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সম্প্রতি ঢাকা স্ট্রিমের বাংলা কনটেন্ট এডিটর আলতাফ শাহনেওয়াজের বিরুদ্ধে লিখিতভাবে যৌননিপীড়নের অভিযোগকারীদের মধ্যে তিনিও ছিলেন বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া তথ্যে জানা যায়।

মানববন্ধনে সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম বলেন, ‘আমাদের প্রায়ই নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতার ঘটনায় বিচারের দাবিতে সমবেত হতে হচ্ছে। দু-একটি ঘটনার বিচার হলেও বেশির ভাগ সহিংসতার ঘটনায় যুক্ত অপরাধীর বিচারিক প্রক্রিয়ায় কোনো শাস্তি হতে দেখা যায় না।’

ফওজিয়া মোসলেম বলেন, ‘বিচারব্যবস্থাকে নিরপেক্ষ হতে হবে। নারীর প্রতি সংবেদনশীল আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। গণমাধ্যম নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনা প্রচার করে ঠিকই, তবে গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানে নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনা ঘটলে ঘটনার সুষ্ঠু বিচার হতে দেখা যায় না। এভাবে নিজের ঘর অন্ধকার রেখে সমাজ আলোকিত করা যায় না।’

মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, ‘অভিযুক্ত সাংবাদিক আলতাফ শাহনেওয়াজের বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ থাকলেও এ সকল ঘটনার কোনো সুষ্ঠু বিচার হতে দেখা যায়নি। ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু বিচার হলে স্বর্ণময়ীর অকালে হারিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটত না।’

এ সময় গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলোকে যৌন নিপীড়নের ঘটনায় অভিযুক্তকে আশ্রয় না দিয়ে শাস্তি নিশ্চিতের পাশাপাশি ঘটনার প্রশ্রয়দাতাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক।

মহিলা পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সীমা মোসলেম বলেন, ‘আমাদের সমাজে নারীরা কর্মস্থলে, পরিবারে এবং জনপরিসরে ক্রমাগত সহিংসতার শিকার হয়েই যাচ্ছে। গণমাধ্যমে কর্মরত নারী সাংবাদিকেরা যৌন নিপীড়নের শিকার হলেও এ সকল ঘটনায় সাংবাদিক সংগঠনগুলোর ভূমিকা এখনো প্রশ্নবিদ্ধ। সাংবাদিকতায় নারীর অগ্রসর হওয়াকে নিশ্চিত করতে হলে কর্মস্থলে নারীর নিরাপত্তা ও সহিংসতার ঘটনায় সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করতে হবে।’

বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের শাহনাজ সুমী বলেন, যৌন নিপীড়নকারীকে শাস্তির মুখোমুখি করার পরিবর্তে যাঁরা প্রশ্রয় দিচ্ছেন, তাঁরাও সমান অপরাধী। এমন নিপীড়কের সাফাই না গেয়ে তাঁকে অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার আহ্বান জানান তিনি।

মানববন্ধন কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করে আরও বক্তব্য দেন উইক্যান অ্যালায়েন্সের মারফিয়া নূরশিফা, গণসাক্ষরতা অভিযানের জয়া সরকার, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সহসভাপতি মাখদুমা নার্গিস রত্না, প্রচার ও গণমাধ্যম উপপরিষদের সদস্য সেবিকা দেবনাথ। মানববন্ধন সঞ্চালনা করেন মহিলা পরিষদের অ্যাডভোকেসি ও নেটওয়ার্কিং পরিচালক জনা গোস্বামী।