ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, পুলিশ গুলি করার সময় এক বন্ধু ইমাম হাসান ভূঁইয়া তাইমেকে টেনে নেওয়ার চেষ্টা করছে
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, পুলিশ গুলি করার সময়  এক বন্ধু  ইমাম হাসান ভূঁইয়া তাইমেকে টেনে নেওয়ার চেষ্টা করছে

জুলাই গণ–অভ্যুত্থান

পুলিশ কর্মকর্তার ছেলে তাইম হত্যায় ১১ জনকে আসামি করে অভিযোগ দাখিল

জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় পুলিশ কর্মকর্তার ছেলে ইমাম হাসানকে (তাইম) হত্যার ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি মামলায় ১১ জনকে আসামি করে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। আজ বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এ এই অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন (রাষ্ট্রপক্ষ)।

রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইনসের জ্যেষ্ঠ উপপরিদর্শক মো. ময়নাল হোসেন ভূঁইয়ার ছেলে ইমাম হাসান। সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকে কেন্দ্র করে পুলিশের গুলিতে গত ২০ জুলাই ইমাম হাসান যাত্রাবাড়ীর কাজলা পদচারী–সেতুর কাছে মারা যান। ইমাম নারায়ণগঞ্জের সরকারি আদমজী নগর এমডব্লিউ কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন।

আজ এক ব্রিফিংয়ে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, গুলিবিদ্ধ তাইমকে তাঁর সহযোদ্ধারা সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। এ সময় খুব ঠান্ডা মাথায় খুব কাছে এসে পরপর কয়েকটি গুলি করে তাঁকে হত্যা করা হয়। হত্যার পরও তাঁর লাশের ওপর বর্বরতা চালানো হয়েছিল। এই বর্বরতা যাঁরা চালিয়েছিলেন সে রকম ১১ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত সংস্থা প্রতিবেদন দাখিল করেছিল। সেটা বিশ্লেষণ করে ট্রাইব্যুনাল-২-এ আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করেছে প্রসিকিউশন।

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, পুলিশ গুলি করার সময় এক বন্ধু ইমাম হাসান ভূঁইয়া তাইমেকে টেনে নেওয়ার চেষ্টা করছে

ইমাম হাসানের সুরতহাল প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, ‘ডান হাতের কনুইয়ের নিচে কবজি পর্যন্ত চারটি ছিদ্র...মাথা থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত প্রায় ১০০টি কালো ছিদ্র ও জখম...।’

সুরতহাল প্রতিবেদনে মৃত্যুর সম্ভাব্য কারণ সম্পর্কে সুরতহাল প্রস্তুতকারী কর্মকর্তা মন্তব্যের ঘরে মৃতের বাবা ময়নাল হোসেনের ভাষ্য হিসেবে লিখেছেন, ভিকটিমকে কোটা আন্দোলনকারীরা মারপিট ও গুলি করে জখম করে।

তবে এ বিষয়ে গত বছরের আগস্টে ময়নাল হোসেন মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেছিলেন, সেখানে দায়িত্বরতরাই নিজেদের ‘মনমতো’ এ কথা লিখেছেন। সরাসরি গুলি লেখা যাবে না, ছিদ্র লিখতে হবে—ওপর থেকে এমন নির্দেশ আছে বলে তাঁকে জানানো হয়েছিল।

ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টার–এর এক প্রতিবেদন বলছে, গত ২০ জুলাই মর্গে গিয়ে লাশ খুঁজে পাওয়ার পর ময়নাল হোসেন তাঁর এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে ফোনে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘একজনকে মারতে কতগুলো গুলি লাগে, স্যার?’