মালয়েশিয়া চক্রের বিরুদ্ধে টাকা পাচারের দায়ে সিআইডির মামলা

প্রথম আলোতে গত ৩০মে ‘“চক্রে” ঢুকে চার সংসদ সদস্যের ব্যবসা রমরমা’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়
প্রথম আলোতে গত ৩০মে  ‘“চক্রে” ঢুকে চার সংসদ সদস্যের ব্যবসা রমরমা’ 
শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়

মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার নিয়ে তৈরি চক্রের ৩৩ জনের বিরুদ্ধে টাকা পাচারের দায়ে মামলা করেছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। আসামির তালিকায় আছেন সাবেক তিন সংসদ সদস্য ও একজন সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রী। এ ছাড়া মালয়েশিয়া চক্রের অন্যতম মূল হোতা হিসেবে পরিচিত রুহুল আমিন ওরফে স্বপনের নামও আছে টাকা পাচারকারীর তালিকায়।

আজ বৃহস্পতিবার সিআইডির সাব ইন্সপেক্টর মো. মনিরুজ্জামান বাদী হয়ে বনানী থানায় মামলাটি দায়ের করেন। এতে বলা হয়, প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ গ্রহণসংক্রান্ত টাকা পাচার অনুসন্ধান করে আসামিদের জড়িত থাকার প্রাথমিক তথ্য প্রমাণ পেয়েছে। মামলাটি সিআইডির শিডিউলভুক্ত হওয়ায় অতিরিক্ত আইজিপি, বাংলাদেশ পুলিশ, সিআইডি, ঢাকা তদন্তের ব্যবস্থা করবে।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, লেফট্যানেন্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীর রিক্রুটিং এজেন্সি ফাইভএম ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় পাঠানো ৯ হাজার ৩৭২ কর্মীর কাছ থেকে আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে টাকা নিয়েছেন। কর্মীপ্রতি ফাইভএম দেড় লাখ টাকা নিয়েছেন। এর মধ্যে এক লাখ ৭ হাজার ৫১০ টাকা পাচার হয়েছে। এ হিসেবে মোট পাচার হয়েছে ১০০ কোটি টাকার বেশি। তবে তদন্তকালে এটি কমবেশি হতে পারে। সংঘবদ্ধভাবে প্রতারণার মাধ্যমে উপার্জিত অর্থ গ্রহণ করে হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তর করায় মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে এজাহার দাখিল করা হয়েছে। তদন্তের আগে তথ্য সংগ্রহ ও বিভিন্ন ভুক্তভোগীর সাক্ষ্যগ্রহণ করে মামলা করতে বিলম্ব হয়েছে।

মামলায় আসামির তালিকায় আছেন ফেনী-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, তাঁর স্ত্রী জেসমিন মাসুদ, মেয়ে তাসনিয়া মাসুদ। আহমেদ ইন্টারন্যাশনালের মালিক ঢাকা-২০ আসনের সংসদ সদস্য বেনজীর আহমেদ, স্নিগ্ধা ওভারসিজ লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী ফেনী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী। সাবেক অর্থমন্ত্রী ও সংসদ সদস্য আ হ ম মুস্তফা কামালের পারিবারিক প্রতিষ্ঠান অরবিটালস এন্টারপ্রাইজের মালিকানায় থাকা তাঁর স্ত্রী কাশমেরী কামাল। এ ছাড়া আছেন বায়রার সাবেক মহাসচিব ও ক্যাথারসিস ইন্টারন্যাশনালের মালিক রুহুল আমিন।

মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার নিয়ে বিভিন্ন সময় চক্র গড়ে বিপুল টাকা পাচারের অভিযোগ আছে। একাধিক দফায় এমন ঘটনা ঘটে গত দেড় দশকে। সবশেষ ২০২২ সালে একটি চক্রের মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানো শুরু হয়। এরপর নানা অভিযোগে ২০২৪ সালের ৩১ মে শ্রমবাজারটি বন্ধ হয়ে যায়। এর মধ্যে দেশটিতে যায় প্রায় ৫ লাখ কর্মী। এতে বিপুল পরিমাণ টাকা পাচার হয় দেশটিতে। মালয়েশিয়া চক্রের বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের ৩০ ও ৩১ মে দুটো প্রতিবেদন প্রকাশ করে প্রথম আলো। এরপর মালয়েশিয়ায় টাকা পাচার নিয়ে আরেকটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় একই বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর।