জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচন স্থগিত হওয়ার পর কয়েকজন শিক্ষককে হেনস্তা করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। এ ঘটনার সাথে জড়িতদের বিচার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ৪৮ ঘণ্টার সময় দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন শিক্ষক সমিতির নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রইছ উদদীন বলেন, সকালে তিনি নিজ বিভাগে একাডেমিক কাজে ব্যস্ত ছিলেন। এ সময় ৩০-৪০ জনের একটি দল তাঁকে তালাবদ্ধ করে অবরুদ্ধ করে রাখে। এক যুবক দৌড়ে এসে বিভাগের কলাপসিবল গেটে তালা দিয়ে চলে যায়। পরে হ্যান্ডমাইক নিয়ে একদল শিক্ষার্থী সেখানে ‘অশ্রাব্য’ স্লোগান দেয় ও ‘ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ’ করে।
অধ্যাপক রইছ উদদীন অভিযোগ করেন, এ সময় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মোশাররফ হোসেন সেখানে গেলে তাঁকে লক্ষ্য করেও ‘দালাল, দালাল’ স্লোগান দেওয়া হয়।
সকালে জকসু নির্বাচনের ভোট স্থগিতের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর সব প্যানেলের প্রার্থীরা উপাচার্য ভবনের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় অন্য শিক্ষার্থীরাও এতে যোগ দেন। বিক্ষোভকারীদের একটি অংশ বিএনপিপন্থী শিক্ষক নেতা ও শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রইছ উদদীনের কক্ষ ঘেরাও করে বিক্ষোভ করে। একপর্যায়ে ফটকে তালা দিয়ে শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করা হয়। এ সময় রইছ উদদীনের কক্ষে থাকা শিক্ষক সমিতির নেতাসহ অনেক শিক্ষক অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।
সংবাদ সম্মেলনে রইছ উদদীন আরও বলেন, তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুর সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে উপাচার্য মহোদয়ের দপ্তর থেকে জকসুর ব্যাপারে করণীয় নির্ধারণের জন্য সকাল সাড়ে আটটায় জরুরি সিন্ডিকেট সভায় অংশ নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয়। সভায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, ইউজিসি প্রতিনিধিসহ সব সদস্য অংশগ্রহণ করেন। সিন্ডিকেট সভায় তিনি কোনো কথাই বলেননি, ছিলেন নির্বাক। সেখানে সব সদস্য পৃথকভাবে তাঁদের মতামত দিয়েছেন। সর্বসম্মত সিদ্ধান্তেই জকসু নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে।
শিক্ষক সমিতির এই নেতা আরও বলেন, ‘আমি গভীর বিস্ময়ের সাথে লক্ষ করছি যে এ সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে একটি গোষ্ঠী সম্পূর্ণ অনুমাননির্ভর হয়ে নির্বাচন পেছানোর জন্য আমার দিকে সন্দেহের তির ছুড়ছে, যা মোটেই সত্য নয়, বরং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। কাউকে অহেতুক দোষারোপ করা একপ্রকার জুলুম করার নামান্তর। আমরা সর্বক্ষেত্রে বস্তুনিষ্ঠতা ও নিরপেক্ষতা বজায় রাখব—এ প্রত্যাশা করছি।’