
২৮ মে—বিশ্ব মাসিক স্বাস্থ্যবিধি দিবস। এ উপলক্ষে প্রথম আলোর প্রধান কার্যালয়ে আয়োজন করা হয় একটি অর্থবহ গোলটেবিল বৈঠক। এতে অংশ নেন বিভিন্ন শ্রেণির অংশীজনরা। যেখানে আলোচনার বিষয় ছিল ‘সংক্রমণমুক্ত ও নিরাপদ পিরিয়ড নারীর অধিকার’।
প্রথম আলোর সহকারী সম্পাদক ফিরোজ চৌধুরীর সঞ্চালনায় এ বৈঠকে আলোচনা করেন স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেডের হেড অব মার্কেটিং ড. জেসমিন জামান। তাঁর কথায় উঠে আসে মেয়েদের স্বাস্থ্য সুরক্ষাবিষয়ক নানা দিক। ড. জেসমিন জামান বলেন, ‘২০২৫ সালে এসে মাসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা সংক্রান্ত পরিসংখ্যানগুলো একটু অবিশ্বাস্যই মনে হয়। কান্তারের ২০২৩ সালে করা ন্যাশনাল মিডিয়া সার্ভেতে উঠে এসেছে, দেশে মাত্র ১৭ দশমিক ৪ শতাংশ নারী নিয়মিত স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করেন। বাকি প্রায় ৮২ শতাংশ নারী তাঁদের মাসিককাল অস্বাস্থ্যকর উপায়ে পার করছেন।’
ড. জেসমিন জামান আরও বলেন, ‘অনেক বছর ধরে চেষ্টা করেও আমরা মেয়েদের পিরিয়ডকালীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা সংকট থেকে খুব বেশি উত্তরণ করতে পারিনি। এ কে খান হেলথ কেয়ার ট্রাস্ট পরিচালিত এক গবেষণা অনুযায়ী, বাংলাদেশের ৯৭ শতাংশ নারী জীবনের কোনো না কোনো সময়ে সার্ভিক্যাল ইনফেকশনে ভোগেন। স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার না করা নারীদের মধ্যে এ ইনফেকশন হওয়ার আশঙ্কা আরও বেশি। দেশের ৬৮ শতাংশ কিশোরীর মাসিক শুরু হওয়ার চার বছরের মধ্যেই বিয়ে হয়ে যায়। এটি নারীদের মাতৃমৃত্যুর স্বাস্থ্যঝুঁকির হার বাড়াচ্ছে।’
স্যানিটারি ন্যাপকিনের গুরুত্ব নিয়ে ড. জেসমিন জামান বলেন, ‘স্কুলপড়ুয়া কিশোরীরা মাসিক চলাকালে ৩ দিন বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকে। সে জন্য স্যানিটারি ন্যাপকিনের গুরুত্বটা সবাইকে জানানো জরুরি। এ-সংক্রান্ত সব অংশীদারের এ ক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে হবে।’
উল্লেখ্য, ড. জেসমিন জামান ছাড়াও এ বৈঠকে অংশ নিয়েছেন ‘অবস্টেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনোকোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশ (ওজিএসবি)’-র প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. ফারহানা দেওয়ান, সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক ডা. সালমা রউফ, ভাইস প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. সাবেরা খাতুন, সাবেক প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. রওশন আরা বেগম এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক সৈয়দ আব্দুল হামিদ, স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশনের সদস্য ডা. আজহারুল ইসলাম খান, শ্রম সংস্কার কমিশনের সদস্য ও বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার, ঢাকার হলি ক্রস কলেজের অধ্যক্ষ সিস্টার শিখা গোমেজ, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রওনক হাসান রণ, প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান ও জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক নাজনীন আখতার প্রমুখ।