Thank you for trying Sticky AMP!!

২০১০ সালের ৭ ডিসেম্বর প্রথম আলোয় প্রকাশিত খবর

২০১০ সালেও বাংলাদেশি জাহাজ অপহরণ করেছিল জলদস্যুরা, মুক্তি যেভাবে

বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর মতো ২০১০ সালে এ দেশের আরেকটি জাহাজ জলদস্যুদের কবলে পড়েছিল। সেটির নাম ছিল জাহান মণি। ১০০ দিন পর সেই জাহাজে থাকা ২৬ জন মুক্তি পান।

জাহান মণি অপহরণের শিকার হয়েছিল ২০১০ সালের ৫ ডিসেম্বর। এটিও ছিল চট্টগ্রামের কবির গ্রুপের মালিকানাধীন। ওই জাহাজে ২৫ জন নাবিক ও প্রধান প্রকৌশলীর স্ত্রী ছিলেন।

২০১০ সালে প্রথম আলোয় প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, জাহান মণি জাহাজটি ২০১০ সালের ২১ নভেম্বর ইন্দোনেশিয়া থেকে যাত্রা শুরু করেছিল। এরপর সেটি সিঙ্গাপুরে এসে যাত্রাবিরতি করে। সিঙ্গাপুর থেকে ২৭ নভেম্বর গ্রিসের দিকে রওনা দেয়।

Also Read: ‘ফাইনাল কথা, টাকা না দিলে আমাদের একে একে মেরে ফেলতে বলেছে’

জাহাজটিতে প্রায় ৪১ হাজার মেট্রিক টন নিকেলের আকরিক ছিল। আরব সাগর দিয়ে যাত্রার সময় ভারতের লক্ষা দ্বীপ থকে ১৭০ নটিক্যাল মাইল দূরে জাহান মণি জাহাজ সোমালি জলদস্যুদের কবলে পড়ে।

জলদস্যুরা ছোট ছোট জলযান নিয়ে জাহাজটিকে ঘিরে ফেলেছিল। হুক ও মই ব্যবহার করে জাহাজে উঠে আগ্নেয়াস্ত্রের মুখে নাবিক ও কর্মকর্তাদের জিম্মি করে ফেলে তারা।

সোমালি জলদস্যুরা জাহান মণি জাহাজটিকে অপহরণ করে ১১ ডিসেম্বর সোমালিয়ার উপকূলের একটি স্থানে নিয়ে যায়। এরপর তারা মুক্তিপণ হিসেবে ৯ মিলিয়ন ডলার (বর্তমান বাজারমূল্যে ৯৯ কোটি টাকা) দাবি করে।

Also Read: ‘জলদস্যুরা ঘিইরা ফালাইয়া, মোবাইল কাইড়া নিতাছে’

৬ ডিসেম্বর ২০১০, প্রথম আলো

মুক্তিপণ নিয়ে সে সময় জলদস্যু ও জাহাজ কর্তৃপক্ষের মধ্যে দফায় দফায় আলোচনা হয়েছিল। জলদস্যুরা ফোনে জিম্মিদের সঙ্গে দেশে থাকা তাদের আত্মীয়স্বজনের মাঝেমধ্যে কথাবার্তা বলার সুযোগ দিয়েছিল। এতে তাঁদের স্বজনদের মধ্যে আতঙ্ক কিছুটা কমে। কিন্তু পরিবারগুলো পণবন্দীদের মুক্তি নিয়ে গভীর উদ্বেগে ছিল।

জাহাজটি অপহরণের ১০০ দিন পরে, ২০১১ সালের ১৩ মার্চ ভোরে জলদস্যুরা পণবন্দীদের মুক্তি দেয়। তবে মুক্তিপণের টাকা দেওয়া নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল।

কোনো কোনো গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছিল, মুক্তিপণ হিসেবে ৪ দশমিক ৬২ মিলিয়ন ডলার ও জ্বালানি খরচ হিসেবে আরও ১ লাখ ডলার (বর্তমান মূল্যে মোট প্রায় ৫২ কোটি টাকা) দুটি জলনিরোধ বক্সে করে জলদস্যুদের নির্দেশনা মোতাবেক পাঠানো হয়েছিল। এর পরেই তারা জিম্মিদের মুক্তি দেয়।

অবশ্য মুক্তিপণ পাঠানো বিষয়ে কোনো পক্ষই কোনো কথা বলেনি। বিষয়টি স্বীকারও করেনি।

Also Read: ‘আম্মু, আমাদের ছাড়ানোর ব্যবস্থা করেন’

৯ ডিসেম্বর ২০১০, প্রথম আলো

নতুন করে সোমালি জলদস্যুদের কবলে পড়েছে বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এম ভি আবদুল্লাহ। কবির গ্রুপের মালিকানাধীন ২৩টি জাহাজের একটি এই এমভি আবদুল্লাহ। এর পণ্য পরিবহনক্ষমতা ৫৮ হাজার টন। জাহাজটি কবির গ্রুপের সহযোগী সংস্থা এসআর শিপিং লিমিটেডের। জাহাজটিতে ২৩ জন নাবিক রয়েছেন, যাঁরা সবাই বাংলাদেশি।

সমুদ্রগামী জাহাজ পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা ভেসেল ফাইন্ডারের ওয়েবসাইটে দেখা যায়, জাহাজটি মোজাম্বিকের মাপুতু বন্দর থেকে ৪ মার্চ সংযুক্ত আরব আমিরাতের উদ্দেশে রওনা হয়। ১৯ মার্চ সেটি আমিরাতের আল হামরিয়া বন্দরে পৌঁছানোর কথা ছিল। মাপুতু থেকে রওনা হওয়ার চার দিন পর জলদস্যুদের কবলে পড়ে।

কবির প্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম গতকাল মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগেও আমাদের একটি জাহাজ জলদস্যুদের আক্রমণের শিকার হয়েছে। ১০০ দিন পর অক্ষত অবস্থায় ফেরত আনতে সক্ষম হয়েছি। এটা নিয়ে বিচলিত হওয়ার কিছু নেই।’

Also Read: জিম্মি হওয়া জাহাজে খাবার আছে ২৫ দিনের

‘গোল্ডেন হক’ নামের জাহাজটি বাংলাদেশের কেএসআরএম গ্রুপের বহরে যুক্ত হওয়ার পর এর নাম হয় ‘এমভি আবদুল্লাহ’। জাহাজের ২৩ নাবিক সুস্থ আছেন বলে কেএসআরএম গ্রুপ জানিয়েছে